শেষ আপডেট: 31st March 2023 15:10
সুপ্রিম কোর্টের প্রবীণ আইনজীবী মুকুল রোহতগিকে নিয়ে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Abhijit Ganguly) মন্তব্য সম্পর্কে ভিন্ন মত পোষণ করলেন দুই বিশিষ্ট আইনজীবী অরুণাভ ঘোষ (Arunabha Ghosh) ও বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য (Bikash Ranjan Bhattacharya)।
অরুণাভ ঘোষের বক্তব্য, “বিচারপতির মুখে মানায় না এমন অনেক কথাই বলছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। ওঁর শিক্ষাদীক্ষা নিয়ে এরপর সাধারণ নাগরিকরা প্রশ্ন তুলবেন। তাঁরা বলবেন, বিচারপতি অশিক্ষিত। তিনি জানেন না কার সম্পর্কে কী বলা যায় আর বলা যায় না”।
আবার, বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য কাঠগড়ায় তুলেছেন মুকুল রোহতগিকে। বিকাশের কথায়, “কোনও বিচারপতির রায় নিয়ে কাটাছেঁড়া করাই যায়। আইনি পথে রায়ের বিরোধিতা করা যায়। তাই বলে বিচারপতিকে সরিয়ে দেওয়ার আর্জি মানা যায় না”।
বিকাশবাবু অবশ্য বলেছেন, “বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় ওই কথা রোহতগি সম্পর্কে না বললেই পারতেন। তাই বলে এটা বলা যাবে না যে তিনি সীমা ছাড়িয়েছেন। সেটা মুকুলই করেছেন”।
আবার অরুণাভ ঘোষের মতে, “বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের কথাকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার দরকার আছে বলে মনে করি না। উনি মাঝেমধ্যেই যা খুশি তাই বলেন। উপেক্ষা করাই ভাল”।
বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের একটি রায় নিয়েই বিতর্কের সূত্রপাত। তাঁর নির্দেশে যাঁদের চাকরি গিয়েছে তাঁরা সুপ্রিম কোর্টে একটি মামলা দায়ের করেছেন। সেই মামলার শুনানির সময়ে মুকুল রোহতগি তাঁর সওয়ালে বলেছিলেন, কলকাতা হাইকোর্টের এক মহামান্য বিচারপতি রয়েছেন, যিনি কথায় কথায় চাকরি থেকে বরখাস্ত করার নির্দেশ দিচ্ছেন। যাঁদের চাকরি যাচ্ছে তাঁদের কথা শোনা হচ্ছে না। উনি হাইকোর্টের রোস্টারও মানছেন না। ওই বিচারপতির বিরুদ্ধে রুলিং দিক সুপ্রিম কোর্ট।
মুকুল রোহতগি কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদী সরকারের গোড়ায় অ্যাটর্নি জেনারেল ছিলেন। সুপ্রিম কোর্ট অবশ্য মুকুল রোহতগির সেই দাবি মানেনি।
কিন্তু এই খবর সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ হওয়ার পর কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবীদের সঙ্গে আলাপচারিতায় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেছেন, মুকুল রোহতগি কে? তাঁকে একবার দেখতে চাই। তিনি কতবড় আইনজীবী দেখতে হবে তো!
সুপ্রিম কোর্টে শুনানির কোনও ক্লিপিং পাওয়া যাবে কিনা সে ব্যাপারে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় খোঁজ নিয়েছেন বলে খবর। আইনজীবীদের তিনি বলেন, সংবাদমাধ্যম থেকেই ব্যাপারটা দেখেছি। আরও জানার ইচ্ছে হচ্ছে কী বলেছেন উনি।
বুধবার প্রথমবার নয়, তার আগেও সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে রুল জারির দাবি জানিয়েছিলেন মুকুল রোহতগি। সেই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে আগামী ১২ এপ্রিল।
অরুণাভকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, একজন আইনজীবী হিসাবে তিনি কি ল'ইয়ারদের সংগঠন মারফত বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে নালিশ ঠুকতে চান। বিশিষ্ট এই আইনজীবী বলেন, ওঁর কথাকে অত গুরুত্বই দিচ্ছি না।