শেষ আপডেট: 11th March 2023 02:49
দ্য ওয়াল ব্যুরো: মহার্ঘভাতা বা ডিএ (DA) পাওয়া সরকারি কর্মচারীদের অধিকার নয় বলে স্পষ্ট জানালেন বিশিষ্ট আইনজীবী ও কংগ্রেস নেতা অরুণাভ ঘোষ (Arunabh Ghosh)। তাঁর কথায়, সরকার মনে করলে ডিএ দেবে, না মনে করলে দেবে না। সরকারি কর্মচারীরা ডিএ-র জন্য জোরাজুরি করতে পারেন না।
তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীদের অনেকেই ইদানীং এই কথা বলেছেন। রাজ্যের শাসক দলের সঙ্গে সুর মিলিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে সেই একই কথা বলেছেন কলকাতা হাইকোর্টের এই বিশিষ্ট আইনজীবী। প্রবীণ এই আইনজীবীর আরও একটি বড় পরিচয় তিনি রাজ্য কংগ্রেসের প্রথমসারির নেতা।
কেন্দ্রীয় সরকারি হারে মহার্ঘভাতা এবং এই খাতে বকেয়া অবিলম্বে মেটানোর দাবিতে শুক্রবার ধর্মঘট ডেকেছে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের যৌথ মঞ্চ। এই পরিস্থিতিতে সরকারি অফিসে হাজিরা স্বাভাবিক রাখতে রাজ্য সরকার কঠোর পদক্ষেপ করেছে।
ডিএ বাড়ানোর দাবিতে ধর্মঘট নিয়ে প্রতিক্রিয়া এড়ালেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অসীম দাশগুপ্ত
নবান্নের তরফে বলা হয়েছে, শুক্রবার উপযুক্ত কারণ ছাড়া অফিসে না এলে বেতন কাটার পাশাপাশি কর্মজীবন থেকে একটি দিন বাদ দেওয়া হবে। সরকারি কর্মচারীদের জন্য যা বড় শাস্তি বলেই মনে করা হয়। তা সত্ত্বেও আগামীকাল ধর্মঘট সফল করতে অবিচল কর্মচারী সংগঠনগুলি।
সেই ধর্মঘট শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে বৃহস্পতিবার রাতে আইনজীবী তথা কংগ্রেস নেতা অরুণাভ বলেন, “সুপ্রিম কোর্ট একটি মামলায় ১৯৫৪ সালে বলেছে, মহার্ঘভাতা দিতে সরকার বাধ্য নয়”। তাঁর আরও দাবি, সেই পুরনো রায়কে মান্যতা দিয়ে ২০১৭ সালেও একটি মামলায় সর্বোচ্চ আদালত একই কথা বলেছে। অরুণাভ বলেন, “শীর্ষ আদালত বলেছে, কোনও রাজ্য সরকারকে কেন্দ্রীয় সরকারের হারে ডিএ দেওয়ার জন্য বাধ্য করা যায় না। ডিএ কর্মচারীদের অধিকারের মধ্যে পড়ে না। সরকারের সামর্থ থাকলে দেবে, নয়তো দেবে না”।
বাংলায় আর সাত-পাঁচটা সাধারণ বিষয় নিয়ে অরুণাভ ঘোষ বরাবরই সোজা সাপ্টা কথা বলেন। অতীতে তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধেও একাধিক বিষয়ে তিনি চাঁচাছোলা মতামত জানিয়েছেন। দ্য ওয়াল-কে এদিন তিনি বলেন, “সরকারি কর্মচারীদের নিয়োগপত্র বা চাকরি সংক্রান্ত কোনও নথিপত্রে লেখা নেই সরকার ডিএ দিতে বাধ্য। কেন্দ্রীয় সরকারের হারে দেওয়ার জন্য কখনওই বাধ্য করা যায় না”।
তিনি আরও বলেন, “ডিএ মামলার শুনানিতে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আইনজীবীরা সুপ্রিম কোর্টের রায়ের কথা উল্লেখ করেছেন কিনা জানি না। করে থাকলে মামলা এতদূর গড়ানোর কথা নয়”। প্রসঙ্গত, ডিএ মামলা এর আগে স্যাট তথা স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনাল ও হাইকোর্ট ঘুরে এখন সুপ্রিম কোর্টের বিচারাধীন।
কেন্দ্রীয় সরকারের হারে ডিএ দেওয়ার দাবি নিয়ে মূল মামলাটি যে সংগঠন করেছে সেই কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ হল কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিইউসি-র অনুমোদিত। ওই সংগঠনের মামলাতেই হাইকোর্ট বলেছে ডিএ সরকারের দয়ার দান নয়, কর্মচারীদের অধিকার। প্রবীণ কংগ্রেস নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্য নিয়মিত ওই সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন।