শেষ আপডেট: 28th August 2020 09:34
দ্য ওয়াল ব্যুরো: সেবক–রংপো রেলপথের জন্য ৬০৭ কোটি বরাদ্দ করলো রেল মন্ত্রক। ২০২০ সালের জুলাই মাস পর্যন্ত প্রায় ৩৩৫ কোটি টাকা খরচ হয়েছে প্রকল্পটিতে। ৪৫ কিমি লম্বা এই রেলপথের নির্মাণের জন্য মোট ব্যয় ধরা হয়েছে আপাতত ৮৯০০কোটি টাকা।বর্তমানে রেলের তরফে আবার নতুন করে ৬০৭ কোটি টাকা বরাদ্দ হওয়ায় কাজের গতি আগামীতে বাড়তে চলেছে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্ট মহল। কোভিড পরিস্থিতির জন্য মাঝে তিন মাস কাজ বন্ধ ছিল। ফের দ্রুত গতিতে শুরু হয়েছে সেবক–রংপো রেলপথের কাজ। মূল রেলপথের ৪৫ কিলোমিটারের মধ্যে প্রায় ৪১ কিলোমিটারই মাটির তলায় সুরঙ্গের ভিতর দিয়ে যাবে। সমস্ত রেলপথ জুড়ে ১৪ টি সুরঙ্গ, ১৩ টি ব্রিজ, ৫টি স্টেশন থাকবে রেলমন্ত্রকসূত্রে বলে জানা গেছে। একবার রংপো অবদি কাজ সম্পুর্ণ হলে, আগামীতে একেবারে সিকিমের রাজধানী গ্যাংটক অবদি সম্প্রসারিত হতে পারে রেলপথটি। উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক শুভানন্দ চন্দা বলেন, "২০২২ সালের ডিসেম্বর মাস থেকেই রেললাইনটিতে নিয়মিত ট্রেন চালানো আমাদের লক্ষ্য। কোভিড পরিস্থিতিতে প্রায় ৪ মাস পিছিয়ে গেছি আমরা। যেহেতু ৯২ শতাংশ রেলপথই মাটির তলা দিয়ে যাবে, ফলে অরণ্য, বন্যপ্রাণী বা পরিবেশের ক্ষতির সম্ভাবনা নেই।" চলতি বছরে লাদাখের ভারত–চিন সীমান্তে উত্তেজনা বেড়েছে। তারপরই সিকিমের নাথুলা সীমান্তে নজরদারি বাড়াতে জোরকদমে শুরু হয়ে যায় এই রেলপথ তৈরির কাজ। সিকিমের নিকটতম রেলস্টেশন শিলিগুড়ি ও এনজেপি। তারপর পাহাড়ি পথে সাড়ে তিন ঘণ্টা সময় লাগে গ্যাংটক পৌঁছতে। সেই রাস্তাও বছরের অনেক সময় ধসের কারণে বন্ধ থাকে। রেলপথ চালু হলে সীমান্তে সামরিক সরঞ্জাম পৌঁছনো অনেক সহজ হবে। বর্তমানে সিকিমের সঙ্গে সারা দেশের একমাত্র যোগাযোগের মাধ্যম ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক। কয়েক বছর আগে আকাশপথে উড়ান চালু হলেও আবহাওয়া এবং পরিবেশ সংক্রান্ত কারণে সেটিও অনিশ্চিত হয়ে পড়ে রয়েছে। তাছাড়া উড়ানের সুবিধে অনেক সাধারণ মানুষেরই নাগালের বাইরে। অথচ আন্তর্জাতিক সীমান্ত হওয়ার ফলে পর্যটনশিল্পে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে সিকিমের। তাই দীর্ঘদিন থেকেই সিকিমের সঙ্গে রেল যোগাযোগের দাবি উঠছিল। কেন্দ্রের তৎকালীন রেলমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি সেই দাবির ওপর শিলমোহর বসান। সেবক স্টেশনের কাছে পাহাড় কেটে টানেল তৈরির কাজ চলছে। সেবক থেকে রংপো পর্যন্ত এরকম ১৪টি টানেল তৈরি হবে বলে রেলমন্ত্রক সূত্রে জানানো হয়েছে। এছাড়াও থাকবে ১৩টি সেতু। জোরকদমে চলছে সবকিছুর কাজ।সেবক থেকে রংপো, সব মিলিয়ে ৪৫ কিমি পথের মাঝে থাকছে তিনটি স্টেশন - মেলি, তিস্তাবাজার ও রিয়াং। ২০০৯ সালে এই প্রকল্পের শিলান্যাস করেছিলেন মমতা ব্যানার্জি। কিন্তু তারপরই এই প্রকল্পের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। তবে আগামী দু’বছরের মধ্যে কাজ শেষ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেবক–রংপোর পথে পড়বে মহানন্দা অভয়ারণ্য এবং চারটি ফরেস্ট ডিভিশন– কার্শিয়ং, কালিম্পং, দার্জিলিং এবং পূর্ব সিকিম। এই রেলপথ চালু হয়ে গেলে পর্যটকরা অনেক স্বাচ্ছন্দ্যে যাতায়াত করতে পারবেন। সিকিমে বিনিয়োগ টানতেও এই রেলপথ বড় ভূমিকা নেবে বলে রেলের আশা।