শেষ আপডেট: 8th January 2025 17:45
দ্য় ওয়াল ব্যুরো: মালদহের জেলা তৃণমূল সহ সভাপতি দুলাল সরকারকে খুনের জন্য ৫০ লক্ষ টাকার ডিল হয়েছিল। মূল অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি ও স্বপন শর্মাকে জেরা করে এই তথ্য সামনে আনল পুলিশ। এডিজি সাউথ বেঙ্গল সুপ্রতীম সরকার বুধবার সাংবাদিক বৈঠক করে জানান, খুনের মোটিফ জানতে ধৃতদের আরও জেরা করা হবে।
তিনি জানান, নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি ও স্বপন শর্মাই এই খুনের ঘটনায় মূল চক্রী। মঙ্গলবার রাতভর জেলার এসপির নেতৃত্বে জেরা করা হয় তাদের। তারপরেই নিশ্চিত হয় পুলিশ। এরপর বুধবার ভোরে গ্রেফতার করা হয় দুজনকে। এদিনই তাদের আদালতে পেশ করা হয়। এডিজি সাউথ বেঙ্গল বলেন, "স্বপন এলাকার কুখ্য়াত দুষ্কৃতী। একাধিক অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। আমরা ধৃতদের জেরা করে জানতে পেরেছি দুলাল সরকারকে মারার জন্য ৫০ লক্ষ টাকার ডিল হয়েছিল। চারজন এসেছিল গাড়িতে। তাদের মধ্যে দুজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। দুজন এখনও পলাতক। তাছাড়া গাড়ি চালিয়ে যে এসেছিল,তাকেও এখনও ধরা যায়নি। এই অভিযুক্তদের খোঁজ দিতে পারলে জেলা পুলিশ ২ লক্ষ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছে।
গত ২ জানুয়ারি ইংরেজবাজার শহরের ঝলঝলিয়ার কাছে নিজের কারখানার কাছেই খুন হন তৃণমূলের মালদহ জেলা সহ-সভাপতি দুলাল সরকার। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, দুষ্কৃতীরা তাড়া করায় প্রাণ বাঁচাতে কারখানায় ঢুকে পড়েছিলেন তৃণমূল নেতা। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। তিন দুষ্কৃতী তাঁকে লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি গুলি চালায়। গুলি লাগে তৃণমূল নেতার মাথায় ও ঘাড়ে।
আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর। ঘটনার পরেই তোলপাড় শুরু হয় গোটা জেলায়। প্রশাসনিক বৈঠকে এমন ঘটনার জন্য প্রকাশ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলার এসপির দিকে অভিযোগের আঙুল তোলেন। একই সঙ্গে দ্রুত দোষীদের খুঁজে বের করার নির্দেশ দেন।
ঘটনার পর মৃত তৃণমূল নেতা দুলালের স্ত্রী চৈতালি সরকার দাবি করেছিলেন, তাঁর স্বামীর হত্যার পিছনে একাধিক লোক রয়েছে। পাশাপাশি, দুলালের খুন রাজনৈতিক বলেও মন্তব্য করেছিলেন। বলেছিলেন, ‘‘দুলাল সরকারের কাছ থেকে রাজনৈতিকভাবে পিছিয়ে যাওয়ায় হিংসা আছে। তাই খুন।’’ শেষপর্যন্ত এই খুনের ঘটনায় ইংরেজবাজার শহর তৃণমূলের সভাপতি নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারিকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
তৃণমূল শিবিরের খবর ২০২২ সাল থেকে নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারির সঙ্গে গন্ডগোল চলছিল দুলাল সরকারের। সেই ব্য়াপারে প্রশ্ন করা হলে এডিজি সাউথবেঙ্গল সুপ্রতীম সরকার বলেন, "খুনের মোটিফ এখনও জানা যায়নি। এরজন্য ধৃতদের আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।"