শেষ আপডেট: 30th August 2022 16:34
অনেকে বলেন, দুর্নীতি সংক্রামক। একবার শুরু হলে তা ছড়াতে থাকে। বাংলাতেও যেন সেই ছবি দেখা যাচ্ছে। যা রুখতে এখন তৎপর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। পঞ্চায়েতে আর্থিক অনিয়ম রুখতে ইতিমধ্যেই কড়া ডোজের অ্যান্টিবায়োটিক লিখেছে রাজ্য সরকার। কিন্তু এবার পুরসভার (municipality) অনিয়ম নিয়ে কম্পট্রোলার অফ অডিটর জেনারেল তথা ক্যাগের (CAG) উদ্বেগ বাড়িয়েছে নবান্নে।
রাজ্যের ৭টি কর্পোরেশন এবং ১২৮টি পুরসভায় বিভিন্ন প্রকল্পে শ’পাঁচেক অনিয়ম নিয়ে নবান্নকে রিপোর্ট দিয়েছে ক্যাগ। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে এবার সংশ্লিষ্ট পুরসভাগুলির কাছে পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য চাইল রাজ্য সরকার। তাদের বলা হয়েছে, পুরসভা বা কর্পোরেশনে কী অনিয়ম হয়েছে, কেন হয়েছে, আদৌ হয়েছে কিনা—এ ব্যাপারে সংক্ষিপ্ত তালিকা তথা শর্ট লিস্ট জমা দিতে হবে।
পঞ্চায়েত তথা গ্রামীণ এলাকায় বিভিন্ন খাতে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা বন্ধ হয়ে রয়েছে এই অনিয়মের কারণেই। নবান্ন সূত্রেই জানা গিয়েছে, টাকা দেওয়া তথা ফান্ড রিলিজের ব্যাপারে দিল্লি পষ্টাপষ্টি বলে দিয়েছে, আগের টাকার হিসেব দাও, তারপর টাকা নাও! এখন যদি শহরাঞ্চলেও বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা বন্ধ হয়ে যায় তাহলে তা উদ্বেগের বৈকি! কারণ রাজ্য সরকারের আর্থিক অবস্থা যে খুব একটা স্বাস্থ্যকর জায়গায় নেই তা স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই বিভিন্ন কর্মসূচিতে বলছেন।
মিড ডে মিলে যে অনিয়ম হচ্ছে, এই অভিযোগ নতুন নয়। বছর দেড়েক আগে চুঁচুড়ার একটি স্কুলে মিড ডে মিলের অনিয়ম বেআব্রু করে দিয়েছিলেন হুগলির বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। তা ছাড়া অনেকেই বলেন, মিড ডে মিলের খাতায় যে ভাবে হিসেব রাখা উচিত, তা বহু জায়গায় নেই। ‘স্টক মেইনটেইন’-এর ব্যাপারে এই অনিয়মের কথা ক্যাগ তাদের রিপোর্টে উল্লেখ করেছে।
প্রাথমিকে কারা চাকরি পেয়েছেন ২০১১ থেকে, তথ্য চাইল ইডি
পুরসভাগুলির উদ্দেশে নবান্ন বলেছে, যুদ্ধকালীন তৎপরতায় এই বিষয়ে পদক্ষেপ করে যাবতীয় ভুল শুধরে নিতে হবে। ইতিমধ্যেই পঞ্চায়েতে দুর্নীতির ঘুঘুর বাসা ভাঙতে একাধিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে নবান্ন। তারমধ্যে অন্যতম, এক লাখ টাকার কাজেও ই টেন্ডার ডাকতে হবে, তিন বছরের বেশি কোনও কর্মীকে এক জায়গায় রাখা যাবে না। সবচেয়ে বড় কথা হল, অনিয়মের অভিযোগ চোখে পড়লে সরাসরি এফআইআর করার নির্দেশ দিয়ে রেখেছে রাজ্য সরকার। টাকা পুনরুদ্ধারের কথাও বলেছে নবান্ন। পুরসভাগুলির ক্ষেত্রে এখনই এত কড়া পদক্ষেপ না করলেও নবান্ন বুঝিয়ে দিল, সরকারি কাজে অনিয়ম হলে জিরো টলারেন্স নীতি নিয়েই চলবে রাজ্য সরকার। এর জন্য আগামী দিনে কী করতে হবে সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পরামর্শগুচ্ছ পৌঁছে গিয়েছে পুরসভাগুলিতে।