শেষ আপডেট: 1st January 2019 08:49
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বছরের শুরুর দিনটা নিয়ে এমনিই ব্যস্ততা ছিল সকাল থেকে। ছিল ভিড় সামলানোর প্রস্তুতিও। কিন্তু সব ব্যস্ততা আর প্রস্তুতি যে শচীনের খোঁজেই চলে যাবে, তা আন্দাজ করেননি কেউ। ঘণ্টা পাঁচেক ধরে প্রায় শ'খানেক কর্মীকে নাকানিচোবানি খাওয়ানোর পরে খোঁজ মিলল শচীনের। তবে এতে স্বস্তির বদলে আশঙ্কাই বড়ল আরও। কারণ শচীন হল একটি পূর্ণবয়স্ক চিতাবাঘ, আর তাকে দেখা গিয়েছে শিলিগুড়ির বেঙ্গল সাফারি পার্কের ভিতরে তৃণভোজীদের এনক্লোজ়ারে!
সূত্রের খবর, এ দিন সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ, নিজের খাঁচার ভিতরের গাছটি বেয়ে বেয়ে উপরে ওঠে শচীন। সেখান থেকে লাফ দিয়ে চলে যায় খাঁচার বাইরে। রোজকার মতোই যখন সাফারি পার্কে টহল দিচ্ছিলেন মনিটারিং টিমের সদস্যরা, তখন তাঁদের নজরে পড়ে চিতাবাঘের এনক্লোজারটি ফাঁকা৷ প্রথমে আশঙ্কা করা হয়েছিল, সাফারি পার্কের বাইরে চলে গেছে সে। হয়তো ঢুকে পড়ছে পার্ক-লাগোয়া মহানন্দা অভয়ারণ্যে। সীমানা পেরিয়ে লোকালয়ে ঢুকে পড়ার সম্ভাবনাও দেখা দিয়েছিল। সারা শিলিগুড়ি জুড়েই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে।
ইতিমধ্যেই তার খোঁজে শুরু হয় চিরুনি তল্লাশি। কুনকি হাতির পিঠে চড়ে সারা সাফারি পার্ক ঘোরেন বনকর্মীরা। অবশেষে বেলা দু'টো নাগাদ তৃণভোজীদের এনক্লোজ়ারে দেখা যায় তাকে। তবে সে এর মধ্যেই কাউকে জখম করেছে কি না, জানা যায়নি এখনও।
সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, আজ থেকে আট মাস আঘে আলিপুরদুয়ার থেকে উদ্ধার করে আনা হয় শচীনকে। সাফারি পার্কে সুস্থ হওয়ার পরে ভালই ছিল সে। তবে তার মেজাজ বরাবরই চড়া। অন্য হিংস্র প্রাণীদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করে ফেলতে পারলেও, শচীনকে একটু সমঝেই চলতেন অভিজ্ঞ কর্মীরাও। মাস দেড়েক আগেই শচীনের খাঁচায় খাবার দিতে গিয়ে, তার থাবায় মারাত্মক জখম হন এক কর্মী।
মঙ্গলবার সকালের এই ঘটনার পরে আপাতত বেঙ্গল সাফারি পার্ক বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ৷ পর্যটকদের পার্কে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না৷ পয়লা জানুয়ারির আনন্দ মাটি হল অনেকেরই।
শিলিগুড়ি শহরের অন্যতম দর্শনীয় স্থান বেঙ্গল সাফারি পার্ক৷ শীতকালে প্রতিদিন হাজারো পর্যটক ভিড় জমান এই সাফারি পার্কে। কিন্তু এ বছর, ১ জানুয়ারির সকালে সাফারি পার্ক খোলার আগেই ঘটে গেল এই বিপত্তি৷ ঘটনায় বেঙ্গল সাফারি পার্কের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে৷
ওই পার্কে পশুপাখিরা মুক্ত ঘুরে বেড়ায় তাদের নির্দিষ্ট এনক্লোজ়ারে। পর্যটকেরা ঘোরে খাঁচায় ঢাকা গাড়ি করে। কিন্তু এভাবে যদি সহজেই এনক্লোজ়ার ছেড়ে বেরিয়ে যায় চিতাবাঘের মতো হিংস্র প্রাণী, তা হলে তা পর্যটকেদের জন্যও যথেষ্ট আশঙ্কাজনক।