শেষ আপডেট: 6th November 2019 16:10
দ্য ওয়াল ব্যুরো, ঝাড়গ্রাম: বেড থেকে হঠাৎই উঠাও হয়ে গেল চিকিৎসাধীন এক রোগী। প্রায় ৪০ ঘণ্টা পরে ঝাড়গ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে বাঁশতলা রেল স্টেশনের কাছে মিলল তাঁর দেহ। নিরাপত্তারক্ষীদের চোখ এড়িয়ে কী ভাবে একজন রোগী হাসপাতাল থেকে উধাও হয়ে গেল? প্রশ্নের মুখে কর্তৃপক্ষ। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, খিঁচুনি হওয়ায় বছর ৩৯ এর সুকুমার সিংকে রবিবার ঝাড়গ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। মেল মেডিকেল ওয়ার্ডে ভর্তি ছিলেন তিনি। পরের দিন, অর্থাৎ সোমবার রাত দশটার পর থেকে তাঁকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। হাসপাতালে সুকুমারকে দেখভালের জন্য ছিলেন তাঁর ভাই বুদ্ধদেব সিং এবং এক প্রতিবেশী তুষাল মুখী। তুষাল রাতের খাবার খেতে হোটেলে গিয়েছিলেন। বুদ্ধদেব গিয়েছিলেন দাদার ওষুধ আনতে। তাঁরা ফিরে এসে বেডে দেখতে পাননি সুকুমারকে। সঙ্গে সঙ্গে মেল মেডিকেল ওয়ার্ডের কর্তব্যরত নার্সদের বিষয়টি জানান তাঁরা। বাড়িতে ফোন করে জানান। তারপর থেকেই সুকুমারের খোঁজ শুরু হয়। রাত বারোটার সময় সুকুমারের বাড়ির লোকজন ঝাড়গ্রাম থানায় লিখিত অভিযোগ জানাতে যান। তাঁরা জানান, অভিযোগ না নিয়েই থানা থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হয় তাঁদের। বলা হয়, হাসপাতাল থেকে বিষয়টি জানালে তবেই সুকুমারের খোঁজ করা হবে। পরের দিন মঙ্গলবার হাসপাতালের মেল মেডিকেল ওয়ার্ডের কর্তব্যরত নার্সরা জানিয়ে দেন, তাঁদের রোগী নিজে ছুটি নিয়ে বাড়ি চলে গেছেন। বুধবার সকালে ঝাড়গ্রাম থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে বাঁশতলা রেল স্টেশনের কাছে একটি মৃতদেহ পরে থাকতে দেখা যায়। পরে পরিবারের লোকজন সেটি সুকুমারের দেহ বলে সনাক্ত করেন। সুকুমারের স্ত্রী ও দুই ছেলে এবং তিন মেয়ে রয়েছে। তাঁর স্ত্রী ঝর্না সিং স্বামীর মৃত্যুর জন্য হাসপাতাল ও পুলিশকেই দায়ী করেন। তিনি বলেন, ‘‘পুলিশ তখন যদি আমার স্বামীর খোঁজ শুরু করত, তাহলে হয়তো আজ আমার স্বামীকে এই ভাবে হারাতে হত না।’’ ঝাড়গ্রাম জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রকাশ মির্ধা বলেন, ‘‘বিষয়টি খুবই দুর্ভাগ্যজনক। হাসপাতালের সিকিউরিটি দায়িত্বে থাকা বেসরকারি সংস্থাকে ইতিমধ্যে শোকজ করা হয়েছে। বিভাগীয় তদন্তও শুরু হয়েছে। সেই রিপোর্ট ও পুলিশের রিপোর্টের ভিত্তিতে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’