শেষ আপডেট: 14th August 2019 16:04
দ্য ওয়াল ব্যুরো, ঝাড়গ্রাম: ফের ঝাড়গ্রামে নেকড়ের হানায় জখন হলেন এক বৃদ্ধা। এরপরেই উত্তেজিত গ্রামবাসীরা বল্লম ও টাঙ্গি দিয়ে নৃশংস ভাবে মেরে ফেলল নেকড়েটিকে । গ্রামবাসীদের অভিযোগ, লাগোয়া জঙ্গল থেকে বেরিয়ে এ দিন সকালে গোটা তিনেক নেকড়ে আশেপাশের গ্রামে হানা দেয়। এ দিন সকালে প্রথম নেকড়েটি হানা দেয় ধবাধোবিন গ্রামে। প্রতিমা দাস নামে এক বৃদ্ধা রান্না ঘরে কাজ ছিলেন। সেই সময় নেকড়েটি রান্না ঘরে ঢুকে ওই বৃদ্ধার উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে। প্রতিমাদেবীর বাঁ পায়ে কামড় বসিয়ে দেয় নেকড়েটি। দেখতে পেয়ে প্রতিমাদেবীর বড় ছেলে তারক দাস একটি লাঠি নিয়ে তেড়ে যেতেই নেকড়েটি পালিয়ে যায়। কিন্তু আতঙ্কিত হয়ে পড়েন গ্রামবাসীরা। তির, টাঙ্গি, বল্লম নিয়ে ছোটাছুটি শুরু করেন তারা। প্রতিমাদেবীকে ঝাড়গ্রাম সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তিন-চারটি নেকড়ের দল এলাকায় ছোটাছুটি করছিল। তার মধ্যে একটি পুরুষ নেকড়েই ছিল সবথেকে হিংস্র। গ্রামবাসীর তাড়া খেয়ে অন্য নেকড়েগুলি জঙ্গলের দিকে পালিয়ে গেলেও ওই পুরুষ নেকড়েটি দুপুর নাগাদ নকাট গ্রামে হানা দেয়। নেকড়ে দেখে ছোটাছুটি করেন গ্রামের মানুষ। আতঙ্কে লাঠি, টাঙ্গি, বল্লম নিয়ে তাঁরা নেকড়েটিকে তাড়া করেন। প্রায় দেড় ঘণ্টা ওই গ্রামে দাপিয়ে বেড়ায় নেকড়েটি। এরপরে রবি মাহাতো নামে এক গ্রামবাসীর উঠোনে মুরগি খাওয়ার সময় নেকড়েটিকে মেরে ফেলেন গ্রামবাসীরা। ঝাড়গ্রামের ডিএফও বাসবরাজ হোলেইচ্চি বলেন, ‘‘নেকড়েটি এক মহিলার উপর হামলা চালায়। পরে নকাট গ্রাম থেকে তার দেহ উদ্ধার হয়েছে। ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত করে বলা যাবে।’’ বাসিন্দাদের অভিযোগ, সকালবেলা নেকড়ের দৌড়ঝাঁপ শুরু হওয়ার পর থেকেই বারবার বনদফতরকে খবর দেওয়া হয়। কিন্তু কোনও বনকর্মীর দেখা মেলেনি। বিকেল নাগাদ ভয়ে আতঙ্কে গ্রামের মানুষ নেকড়ে বাঘটিকে মেরে ফেলার পর বনকর্মীরা এসে তার দেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। তাঁরা বলেন, ‘‘বনকর্মীরা আগে এলে কেউ ঘায়েলও হত না, নেকড়েটাও প্রাণে বেঁচে যেত।’’ তবে ডিএফও বলেন, সকালে ধবাধোবিন গ্রামে নেকড়ে ঢুকেছে খবর পেয়ে বন দফতরের লোকজন গিয়েছিলেন। তখন নেকড়েগুলি জঙ্গলে চলে যায়। দুপুরের পর নকাট গ্রামে আবার নেকড়ে ঢুকেছে খবর পেয়ে তাঁদের লোকজন যখন পৌঁছোন, ততক্ষণে নেকড়েটিকে মেরে ফেলেছে বনদফতরের লোকজন। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি নেকড়ের হানায় জখম হয়েছিলেন ঝাড়গ্রাম লাগোয়া পাঁচটি গ্রাম শিমূলডাঙা, ঘৃতখাম, পসরো, জারুলিয়া ও কুন্দলডিহি গ্রামের মোট আটজন বাসিন্দা। তার আগে ৭ জানুয়ারি সন্ধ্যায় বাড়ির সামনে বসে আগুন পোহানোর সময় নেকড়ের হানায় জখম হয়েছিলেন জামবনির বাঁকাশোল গ্রামের দুই যুবক। নেকড়ের কামড় খাওয়ার পর জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান দুজন।