শেষ আপডেট: 10th August 2019 06:20
দ্য ওয়াল ব্যুরো, পূর্ব বর্ধমান: পাত্র নয়। এ বার বিয়ের জন্য নাছোড়বান্দা পাত্রী বৃষ্টি মাথায় নিয়ে দরজায় দাঁড়িয়ে রইলেন ২৪ ঘণ্টা। প্রেমিকার টানা অবস্থান আন্দোলনে অবশেষে বিয়েতে বসল নিমরাজি পাত্র৷ স্থানীয়দের মধ্যস্থতায় মালাবদল হল এলাকার কালী মন্দিরে৷ ঘটনা মেমারির পাল্লা রোডে। পাত্রী চুমকি মুদির বাড়ি জামালপুরের খোরদো পলাশিতে।
জানা গেছে, পাল্লারোডের মামুদপুরে আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে এলাকার যুবক সুশান্ত দাসের সঙ্গে আলাপ হয় চুমকির। সেই আলাপ থেকেই প্রেম। সাড়ে তিন বছর চুটিয়ে প্রেমের পর বিয়ের সিদ্ধান্ত নেয় চুমকি। কিন্তু বেঁকে বসে সুশান্ত। বৃহস্পতিবার থেকে সুশান্তর বাড়ির দরজায় বিয়ের দাবিতে ধর্নায় বসে চুমকি। বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতেই হাত কেটে আত্মহত্যারও হুমকি দেয়। কিন্তু তাতেও মন গলেনি সুশান্ত বা তাঁর পরিবারের। এরপরেই এগিয়ে আসেন স্থানীয় ক্লাবের সদস্যরা। দু’পক্ষকে নিয়ে আলোচনায় মেলে সমাধানসূত্র৷ পাত্র সুশান্ত দাস জানান, বিয়ে যে করবেন ধুতি পাঞ্জাবি কেনার মতো সামর্থ্যও নেই তাঁর। এরপর পাল্লারোড পল্লীমঙ্গল সমিতির সদস্যরা ও এলাকার বাসিন্দারা ধুতি পাঞ্জাবি কিনে দেয়। তাদের উপস্থিতিতে শেষ পর্যন্ত সাত পাকে বাঁধা পড়ে চুমকি ও সুশান্ত।
পড়শিরা জানিয়েছেন, সুশান্তদের পরিবার খুবই গরিব। সামান্য জমিতে চাষবাস করে চলে সংসার। তাই হয়তো এখনই বিয়ে করতে রাজি ছিলেন না সুশান্ত। কিন্তু তাঁর প্রেমিকা বিয়ের ব্যাপারে নাছোরবান্দা। প্রেমিক বিয়েতে রাজি না হলে আত্মহত্যা করবেন বলে কান্নাকাটিও জুড়ে দেন তিনি। আর তার জন্যই এগিয়ে আসেন তাঁরা। দু পক্ষের সঙ্গে কথা বলে এরপর পাল্লা রোডের মধ্যবাজার কালী মন্দিরে নিজেরাই চাঁদা তুলে বিয়ে দেন তাঁদের।
পাড়ার মানুষজন বলছেন কোনও খারাপ উদ্দেশ্য ছিল না সুশান্তর। সংসার কী ভাবে চলবে, তা ভেবেই বেঁকে বসেছিল সে। বিয়ে করে দারুণ খুশি চুমকি অবশ্য বলছেন, “ও যদি একবেলা খায়, আমিও একবেলা খাব। দুজনে মিলেই দারিদ্রকে জয় করব আমরা।”