শেষ আপডেট: 28th August 2022 02:29
দ্য ওয়াল ব্যুরো, নদিয়া: বর্ষা আসতেই কি ডায়রিয়া (Diarrhea) ছড়াচ্ছে পানীয় জলের মাধ্যমে? জেলায় এখন এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। সম্প্রতি পেটে ব্যথা, পায়খানা, বমি, জ্বরের মতো একাধিক উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল এক কিশোর। এর কিছুক্ষণ পরই তার মৃত্যু হয়। নদিয়ার (Nadia) কৃষ্ণনগর ১ নম্বর ব্লকের ভীমপুর থানার অন্তর্গত জলকর মথুরাপুর গ্রামের এমনই উপসর্গ নিয়ে অসুস্থ আরও ৩০জন। তাদের মধ্যে ১২জনকেই শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত কিশোরের নাম শুভদীপ হালদার। বয়স মাত্র ১২ বছর। শুক্রবার সন্ধের পর থেকেই শুভদীপের পায়খানা, বমি এবং অসহ্য পেট ব্যথা শুরু হয়। রাতের দিকে প্রবল জ্বর আসে। এরপরই ছেলেকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তার বাড়ির লোক। রাতেই কৃষ্ণনগরের শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অবস্থা আরও আশঙ্কাজনক হওয়ায় ডাক্তাররা শুভদীপকে কল্যাণীর (Kalyani) জেএনএম হাসপাতালে স্থানান্তরিত করে দেন।
এইসময়ে রাস্তাতেই শুভদীপের মৃত্যু হয় বলে পরিবার সূত্রে জানা যায়। গ্রামবাসীদের কথায়, 'যারাই আক্রান্ত হয়েছে, তাদের সকলেই অসহ্য পেট ব্যথা, বমি, পায়খানা হচ্ছে। আমাদের গ্রামে ট্যাপ কলের জল আসে। সেটাই খাই। সেই জল থেকেই এই ধরনের ডায়রিয়া দেখা দিচ্ছে।' স্বাভাবিকভাবেই এমন ঘটনায় গ্রামবাসীরা ভীষণই আতঙ্কিত।
এই খবর দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে জেলাজুড়ে। এরপরই স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে তড়িঘড়ি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়। ইতিমধ্যেই ওই গ্রামে মেডিক্যাল ক্যাম্প বসিয়ে আক্রান্ত মানুষদের ওষুধপত্র সরবরাহ করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে পানীয় জল থেকেই এই ধরনের ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে বলে স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরা জানতে পেরেছেন। আক্রান্তদের বাড়ির লোকেরা বলছেন, তাঁদের বাড়িতে যে ট্যাপকল রয়েছে, সেখান থেকে জল পান করেই ডায়রিয়া দেখা দিয়েছে।
জলপাইগুড়িতে চালের বস্তার আড়ালেই পাচার হচ্ছিল ৩০ লাখের কাঠ! বন দফতরের তৎপরতায় বানচাল ছক
আপাতত ঠিক করা হয়েছে, আগামী এক সপ্তাহ ওই গ্রামে মেডিক্যাল ক্যাম্প চলবে। গোটা গ্রামের পরিস্থিতির দিকে কড়া নজর রাখা হচ্ছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই গ্রামের মানুষদের ট্যাপ কলের জল পান করতে বারণ করা হয়েছে। আপাতত তাদের ‘সজলধারা’ প্রকল্পের জল পান করার কথা বলা হয়েছে। কোনও শিশু বা কিশোর অসুস্থ হয়ে পড়লে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে ভর্তি করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে কৃষ্ণনগর ১ নম্বর ব্লক মেডিকেল অফিসার বিশ্বজিৎ মজুমদার জানান, 'শুক্রবার রাত থেকেই ওই গ্রামের ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। এখনও পর্যন্ত মোট ৩০ জন এই রোগে আক্রান্ত। তারমধ্যে ১১ জনকে কৃষ্ণনগর শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সকলেই বর্তমানে স্থিতিশীল। বাকিরা বাড়িতেই চিকিৎসার মধ্যে রয়েছেন। আক্রান্তদের মলের নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। একইসঙ্গে ওই ট্যাপ কলের জলও পরীক্ষা করে দেখা হবে।'