শেষ আপডেট: 4th June 2019 11:52
দ্য ওয়াল ব্যুরো, উত্তর ২৪ পরগনা: রবিবার সকাল বেলা বাজিতপুরের কালীতলায় মেলে মাছ ব্যবসায়ী অজয় মণ্ডলের (৩৭) রক্তাক্ত দেহ। বিজেপির কর্মী হিসেবে পরিচিত অজয়ের মৃত্যুতে স্বাভাবিক ভাবেই প্রথমে উঠে আসে রাজনৈতিক খুনের তত্ত্বই। কিন্তু ঘটনার স্রোত যে অন্য ধারায় প্রবাহিত, খুনের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই তা সামনে আনল পুলিশ। অজয় খুনে মঙ্গলবার গ্রেফতার করা হল তাঁর স্ত্রী টুম্পা মণ্ডল ও টুম্পার প্রেমিক মিঠুনকে। ভাড়াটে খুনি দিয়ে অজয়কে খুন করিয়েছে বলে তারা জেরার মুখে কবুল করেছে, এমনটাই দাবি পুলিশের। রবিবার সকালবেলায় এলাকার বাসিন্দারা বাদুরিয়ার মাছ ব্যবসায়ী অজয় মণ্ডলের ক্ষতবিক্ষত দেহ রাস্তার উপর পড়ে থাকতে দেখেন। তাঁরাই অজয়ের পরিবারকে খবর দেন। আসে পুলিশ। অজয় যেহেতু এলাকায় বিজেপির কর্মী হিসেবে পরিচিত, তাই প্রথমে এটাকে রাজনৈতিক খুন ধরেই তদন্ত এগোতে থাকে পুলিশ। কিন্তু পরে অজয়ের স্ত্রী টুম্পার কথাবার্তায় কিছু অসঙ্গতি পুলিশের নজরে আসে। অজয় মণ্ডলের ভাই দেবকুমার মণ্ডলের দায়ের করা অভিযোগেও কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য পায় পুলিশ। মঙ্গলবার ভোরে গ্রেফতার করা হয় টুম্পা ও মিঠুনকে। পুলিশ জানিয়েছে, প্রতিবেশী যুবক মিঠুন মণ্ডলের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল অজয়ের স্ত্রী টুম্পার। সেটা অজয় জেনে যাওয়াতেই দাম্পত্য অশান্তি চরমে ওঠে। এরপরেই অজয়কে পৃখিবী থেকে সরিয়ে দেওয়ার ছক করে টুম্পা ও মিঠুন। আজ ভোরে গ্রেফতারের পরে দুজনকেই টানা জেরা করে পুলিশ। পুলিশের দাবি, জেরায় পুরোপুরি ভেঙে পড়ে টুম্পা। জানায়, নিজের স্বামীকে খুন করার জন্য ৮০ হাজার টাকা দিয়ে সুপারি কিলার ভাড়া করেছিল তারা। পুলিশ জানায়, রবিবার ভোররাতে অজয় যখন মাছ কেনার জন্য বাড়ি থেকে বার হচ্ছিল, তখন সেই ভাড়াটে খুনিকে অজয়ের গতিবিধি সম্পর্কেও মোবাইল ফোনে জানাতে থাকে টুম্পা। মোটর সাইকেল নিয়ে কোন পথে যাবে অজয় জানিয়ে দেয় সে কথাও। তারপরেই বাজিতপুরের কালীতলার কাছে অজয়ের মোটরবাইক থামিয়ে তাঁকে কুপিয়ে মারে দুষ্কৃতীরা। আজ ভোরে গ্রেফতারের পর এ দিনই বসিরহাট মহকুমা আদালতে তোলা হয় ধৃতদের। অজয়ের বাবা গোবিন্দ মণ্ডল ধৃতদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। একটি সাত বছরের ছেলে রয়েছে টুম্পার। গোবিন্দবাবু বলেন, তাঁরাই মানুষ করে তুলবেন নাতিকে।