শেষ আপডেট: 19th June 2024 00:10
দ্য ওয়াল ব্যুরো: শিয়ালদহগামী কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের ভয়াবহ দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০। আহত একাধিক। দুর্ঘটনার দায় নিয়ে ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে কাটাছেঁড়া। রেল সূত্রে প্রথম থেকেই ইঙ্গিত করা হচ্ছে, মালগাড়ির চালকের ভুলে দুর্ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। ইতিমধ্যে মৃত চালকের বিরুদ্ধে এফআইআরও রুজু হয়েছে।
যার অভিযোগের ভিত্তিতে এই এফআইআর, মঙ্গলবার রাজ্যের একটি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সেই রেলযাত্রী চৈতালি মজুমদার এ ব্যাপারে বড় অভিযোগ সামনে এনেছেন।
রেলযাত্রী চৈতালি মজুমদার।
রেল সূত্রের খবর, শিয়ালদহগামী কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের এস-৬ কোচের ১৩ নম্বর সিটের যাত্রী (পিএনআর নম্বর ৬১৩৭২৯৭৯০৪ ) চৈতালী মজুমদারের অভিযোগের ভিত্তিতে মালগাড়ির চালকের বিরুদ্ধে এফআইআর রুজু করা হয়েছে। দুর্ঘটনায় জখম হয়েছিলেন চৈতালীদেবী।
এদিন একটি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, "মালগাড়ির চালকের বিরুদ্ধে আমি রেলের কাছে অভিযোগ করেছি? আমি তো জখম হয়ে হাসপাতালে ছিলাম! তাছাড়া ট্রেনের মাঝ বগি থেকে কী শেষে কী হচ্ছে দেখা সম্ভব?"
চৈতালীর দাবি, তিনি হাসপাতালে ভর্তি থাকাকালীন অন্তত তিন বার রেলের কর্মীরা তাঁর কাছে এসে তাঁর নাম, ঠিকানা এবং ট্রেনের কোন কোচে ছিলেন, সিট নম্বর, পিএনআর নম্বর জেনে গিয়েছেন। তাঁর কথায়, "ওরা শুধু এসে বারবার এগুলো জেনে চলে যাচ্ছিল। টিভিতে দেখে চমকে উঠলাম, যে আমার অভিযোগের ভিত্তিতে নাকি চালকের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়েছে!"
এ ব্যাপারে রেলের কোনও প্রতিক্রিয়া এখনও জানা যায়নি। তবে চৈতালীদেবীর অভিযোগকে ঘিরে ফের বড়সড় প্রশ্ন চিহ্ন সামনে এসেছে।
প্রসঙ্গত, গত এক বছরে একাধিক রেল দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটেছে। আর প্রতিবারই রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণো ‘কবচ’ নামক তথা প্রযুক্তির কথা শুনিয়েছেন। রেলের দাবি, বিশেষ এই যন্ত্র দুটি ট্রেনের মুখোমুখি সংঘাত বা পিছন থেকে এসে ধাক্কা মারার মতো ঘটনা রুখে দেবে।
সোমবার ঘটনার পরই এ ব্যাপারে প্রশ্ন তুলেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেছিলেন, "আমি রেলমন্ত্রী থাকার সময়ে অ্যান্টি কলিউশন ডিভাইস লাগিয়েছিলাম। কোঙ্কন রেল সেই প্রযুক্তি আবিষ্কার করেছিল। আমি মাডগাঁওয়ে তাদের কারখানায় গিয়েছিলাম। সেই ডিভাইস কোথায় গেল?"
রেল দুর্ঘটনা রুখতে সরকারের সামগ্রিক সদিচ্ছা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, "রেলের অবস্থা শুধরোতে কোনও আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। শুধু বাইরে থেকে কিছু পরিবর্তন করা হচ্ছে।"
দুর্ঘটনাকে ঘিরে যে রেলযাত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে মৃত চালকের বিরুদ্ধে রেলের তরফে এফআইআর দায়েরের কথা বলা হয়েছে, তিনি নিজেই পুরো বিষয়টি শুনে আকাশ থেকে পড়ায় অন্য রহস্যের গন্ধ পাচ্ছে ওয়াকিবহাল। কটাক্ষের সুরে তাঁরা বলছেন, "মরেও রেহাই নেই! দায় এড়াতে দুর্ঘটনার বলি রেল কর্মীকেই বলির পাঁঠা বানানো হচ্ছে না তো?"