দ্য ওয়াল ব্যুরো : নিউ ইয়র্কে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় (General assembly) ভাষণ দেওয়ার জন্য জোর চেষ্টা চালিয়েছিল তালিবান। কিন্তু তারা যে সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করেছে, তার দূতেরই ভাষণ দেওয়ার কথা ছিল সোমবার। তিনি জানিয়েছেন ভাষণ দেবেন না। তাঁর বদলে তালিবানের কোনও প্রতিনিধিকেও বক্তব্য পেশ করার অনুমতি দিল না রাষ্ট্রপুঞ্জ।
আফগানিস্তানের ভুতপূর্ব সরকারের পক্ষ থেকে যিনি রাষ্ট্রপুঞ্জে প্রতিনিধি ছিলেন, তাঁর নাম গুলাম ইশাকজাই। তিনি আগে জানিয়েছিলেন, রাষ্ট্রপুঞ্জে ভাষণ দিতে চান। পাশাপাশি তালিবানও দাবি করেছিল, তার দূত ওই আন্তর্জাতিক মঞ্চে বক্তব্য পেশ করবেন। রাষ্ট্রপুঞ্জে কাকে ভাষণ দিতে দেওয়া হবে, তা স্থির করে নয় সদস্যের এক কমিটি। তার সদস্যদের মধ্যে আছেন আমেরিকা, রাশিয়া ও চিনের প্রতিনিধি। আগামী অক্টোবরে কমিটির বৈঠক হবে। তার আগে পর্যন্ত ইশাকজাই রাষ্ট্রপুঞ্জে আফগানিস্তানের দূত হিসাবে থাকবেন।
সোমবার আফগানিস্তানের ইউএন মিশন থেকে টুইট করে বলা হয়, 'দেশের স্বার্থে ইশাকজাই বক্তব্য পেশ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি চান, আফগানিস্তান রাষ্ট্রপুঞ্জের সদস্য থাকুক। আফগানিস্তানের সঙ্গে রাষ্ট্রপুঞ্জ তথা নিরাপত্তা পরিষদের দীর্ঘস্থায়ী সহযোগিতাই তাঁর কাম্য।' টুইটারে বলা হয়েছে, ইশাকজাই আগের মতোই রাষ্ট্রপুঞ্জে নিজের কাজ করে যাবেন।
তালিবানের বিদেশমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি গত সপ্তাহে আর্জি জানিয়েছিলেন, তাঁকে রাষ্ট্রপুঞ্জে ভাষণ দিতে দেওয়া হোক। একইসঙ্গে দোহায় তালিবানের মুখপাত্র সুহেইল শাহিনকে রাষ্ট্রপুঞ্জে আফগানিস্তানের দূত হিসাবে নিয়োগ করা হয়। কিন্তু আফগানিস্তানের দূত হিসাবে কাকে মান্যতা দেওয়া হবে, তা এখনও স্থির করেনি রাষ্ট্রপুঞ্জের ক্রিডেনশিয়ালস কমিটি।
এর মধ্যে জানা যায়, তালিবান পুরানো চেহারাতেই ফিরছে। তাদের সাম্প্রতিত কাজকর্মে এব্যাপারে যাবতীয় সংশয় ঘুচে যাচ্ছে। এবার তারা চিঠি দিয়ে হেলমন্দ প্রদেশের হেয়ারড্রেসারদের জানিয়ে দিল, কারও দাড়ি কাটা যাবে না, ছাঁটা যাবে না। সব নিষিদ্ধ করা হয়েছে। স্টাইল করে চুল কাটাও নিষিদ্ধ করেছে তালিবান। দি ফ্রন্টিয়ার পোস্ট এক প্রতিবেদনে এখবর দিয়েছে। তাতে জানা গিয়েছে, তালিবানের ইসলামি আদর্শ, দিশা রূপায়ণ মন্ত্রকের কর্তারা হেলমন্দ প্রদেশের রাজধানী লস্কর গাহ-তে সম্প্রতি ছেলেদের সেলুনের ক্ষৌরকর্মী, হেয়ারড্রেসারদের এক বৈঠকে ডেকে এহেন নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয়। সোস্যাল মিডিয়া নেটওয়ার্কেও নিষেধাজ্ঞার কথা ফলাও করে ছাপা হয়েছে। তাতে আরও বলা হয়েছে, সেলুনের ভিতরে গান বাজানো চলবে না, প্রার্থনাসঙ্গীতও নয়।
ন্যাটোবাহিনী ও মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের সুযোগ কাজে লাগিয়ে তালিবান আফগানিস্তান ফের দখল করেছে এক মাসের ওপর হয়ে গেল । একে একে তারা যেসব পদক্ষেপ করছে, সেগুলি তাদের ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সালের শাসনের স্মৃতিই ফিরিয়ে আনছে। তারা নতুন নতুন ফতোয়া চাপিয়ে বলেছিল, ইসলামি আইন, শরিয়তের শাসনে দেশ চলবে।