শেষ আপডেট: 19th December 2024 17:30
দ্য ওয়াল ব্যুরো: প্রতিবেশী রাষ্ট্রে চলছে টালমাটাল অবস্থা। হিংসার ঘটনা ঘটেই চলেছে। পরিস্থিতি বিবেচনা করে বাংলাদেশ সীমান্তে হাই–অ্যালার্ট জারি করেছে বিএসএফ। 'বাংলাদেশ থেকে কাউকে ঢুকতে দেখলেই খবর দেবেন', অশান্ত বাংলাদেশ নিয়ে ইতিমধ্যে সীমান্ত এলাকায় বাসিন্দাদের সতর্কও করেছে বিএসএফ।
তবু উদ্বেগের শেষ নেই। কারণ, ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে এরাজ্যের যে সীমান্ত এলাকা রয়েছে তার অনেকাংশেই নেই কাঁটাতার। অর্থাৎ ফাঁকা ওই এলাকা দিয়ে সীমান্ত অনুপ্রবেশের সম্ভাবনা প্রবল। এমন ক্ষেত্রে সীমান্তের কাঁটাতার বিহীন এলাকায় কীভাবে নজরদারি চালাচ্ছে বিএসএফ?
এ ব্যাপারে বিএসএফ-এর দক্ষিণবঙ্গ ফ্রন্টিয়ারের আইজি মনীন্দর সিং পাওয়ার বলেন, "বিষয়টি যথেষ্ট উদ্বেগের। এজন্য স্বরাষ্ট্র দফতরের নির্দেশ মেনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে।"
তিনি জানিয়েছে, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে সীমান্ত পাহারায় আধুনিক সরঞ্জামের ব্যবহার বৃদ্ধি করা হয়েছে। বিশেষত, রাত পাহারার ক্ষেত্রে। তবে এই আধুনিক সরঞ্জামের বিষয়ে বিশেষ কিছু বলতে রাজি হননি তিনি।
প্রসঙ্গত, ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে রয়েছে প্রায় ৪ হাজার ৯৬ কিলোমিটার আন্তর্জাতিক সীমান্ত এলাকা। এরমধ্যে পশ্চিমবঙ্গে রয়েছে ২ হাজার ২১৭ কিমি অর্থাৎ অর্ধেকেরও বেশি। এর মধ্যে বহু এলাকায় আবার কাঁটাতারই নেই। বাংলাদেশে অশান্তি পরিবেশ তৈরির পর থেকেই এদেশে ঢুকতে পশ্চিমবঙ্গের এই সুদীর্ঘ সীমান্তে শরণার্থীদের ভিড় বাড়ছে।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের আশঙ্কা, শরণার্থীদের ভিড়ে মিশে পশ্চিমবঙ্গে ঢুকতে চাইছে বাংলাদেশের জেল ভেঙে পালানো ২৭ জন জঙ্গি। এরপরই সীমান্তের ফাঁকা এলাকার নজরদারিতে বাড়তি পদক্ষেপের জন্য বিএসএফকে সতর্ক করেছে অমিত শাহের মন্ত্রক।
বিএসএফ সূত্রের খবর, বাংলাদেশের জেল ভেঙে পালানো ২৭ জঙ্গির মধ্যে রয়েছে আল কায়েদার কিউআইএসের সেকেন্ড ইন কমান্ড ইমানুল হক ওরফে আবু তালহা এবং জেএমবির সোহেল মাফুজ। এই তালহা ভারতে আল কায়েদার মডিউল তৈরির অন্যতম কারিগর। অন্যদিকে সোহেলই হল খাগড়াগড় বিস্ফোরণ ও ঢাকার হোলি আর্টিজেন কাফে হামলার অন্যতম অভিযুক্ত।
এছাড়াও বাংলাদেশের জেল ভেঙে পালানো জঙ্গিদের তালিকায় রয়েছে তালহার ভারতীয় স্ত্রী জেএমবির নারীশক্তি ইউনিটের ফারিয়া আফরিন। পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড, মধ্যপ্রদেশ ও গুজরাটের বিভিন্ন থানা এলাকায় ১০টির বেশি মামলা রয়েছে তালহা ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে। এছাড়াও জেল ভেঙে পালানো বন্দিদের তালিকায় রয়েছে আনসার আল ইসলামের নিয়ামাতুল্লা (হরিদেবপুরের জঙ্গি মডিউলের মাথা) ও তার দুই শাগরেদ আব্দুল আলিম ও জাকারিয়া মণ্ডলও।
গোয়েন্দা সূত্রের খবর, শুধু জঙ্গিই নয়, গত ৫ অগস্ট বাংলাদেশ ছেড়ে হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর নরসিংদি, শেরপুর, সাতক্ষীরা, কুষ্টিয়া, গাজিপুর ও জামালপুর জেল ভাঙার ঘটনা ঘটে। ওই জেলগুলিতে অন্তত ১২০০ কুখ্যাত অপরাধী ছিল। তাদের সিংহভাগ অংশই শরনার্থী সেজে পশ্চিমবঙ্গ দিয়ে ভারতে ঢোকার চেষ্টা করছে বলে জানতে পেরেছে গোয়েন্দা দফতর। এরপরই সীমান্তে নজরদারি আরও বাড়ানো হয়েছে।