দ্য ওয়াল ব্যুরো: কখনও কাশ্মীরি, কখনও তামিল, কখনও সংস্কৃত আবার কখনও ফরাসি – মাঝে হিন্দি তো আছেই। ইংরেজি বাজেট বক্তৃতার মাঝে কখনও কাশ্মীরি কলি, কখনও হরিবংশমের শ্লোক, কখনও অ্যাব্রিভিয়েশনের ফরাসি অর্থ ব্যাখ্যা করে দেওয়া – নিজের দ্বিতীয় বাজেটকে নানা ভাষায় সাজিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন।
সাউন ওয়াতন গুলজার ওয়াতন শালিমার হ্যুব
ডাল মঞ্জ ফুলবুন পাম্পোস হ্যুব...

বাজেট বক্তৃতার কিছুক্ষণের মধ্যেই গেরুয়া-ঘেঁষা হলুদ শাড়ি পরিহিতা নির্মলা শোনালেন সাহিত্য অকাদেমি সম্মানে সম্মানিত কাশ্মীরি কবি পণ্ডিত দীননাথ কলের লেখা অংশ যেখানে দেশকে কখনও তুলনা করা হয়েছে শালিমার বাগের সঙ্গে, কখনও ডাল হ্রদের ফুটন্ত গোলাপের সঙ্গে। যার অর্থ হিন্দিতে ব্যাখ্যা করে দেন তিনি:
হামারা ওয়াতন খিলতে হুয়ে শালিমার বাগ জ্যায়সা
হামারা ওয়াতন ডাল লেক মে খিলতে হুয়ে কমল জ্যায়সা
নও জওয়ানো কে গরম খুন জ্যায়সা
মেরা ওয়াতন তেরা ওয়াতন
হামারা ওয়াতন দুনিয়া কা সবসে পেয়ারা ওয়াতন।
সন্ন্যাসিনী তথা তামিল মহিলা কবি আয়ুভায়ারের আথিচোড়ি থেকেও উদ্ধৃত করেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। সেই কথার অর্থ হিন্দিতে ব্যাখ্যাও করে দেন তিনি – সোজা কথায় আগে কাজ করে তার পরেই খাওয়া উচিত।
গবাদি পশুদের ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিসিজের কথা বলতে গিয়ে পিপিআরের কথা উল্লেখ করেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী, এর মূল কথাটি যে ফরাসি
পেস্তে পেতিতস রিউমিনাঁতসের সংক্ষিপ্ত রূপ, সেকথা বলেন নির্মলা। তাঁর ফরাসি উচ্চারণে ভুল হতে পারে আশঙ্কা করে আগাম ক্ষমাও চেয়ে নেন।

শিল্প ও বাণিজ্য সংক্রান্ত বাজেটের কথা বলতে গিয়ে তিনি চলে যান একেবারে খ্রিস্ট জন্মের ৩৩০০ বছর আগে তৈরি সিন্ধু-সরস্বতী সভ্যতার ছোট ট্যাবলেটগুলির কথায়। সম্প্রতি সেই ট্যাবলেটের বড় অংশের পাঠোদ্ধার করা গেছে এবং পাঠোদ্ধারের পদ্ধতির যে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে তাকেও বেশ সন্তোষজনক বলে মনে করছেন লেখবিদ বা এপিগ্রাফিস্টরা। নির্মলা জানান, সেখানে
তকারা কলিমি বা টিনের কামার,
শ্রেণি বা সমবায়,
শেঠি বা পাইকার প্রভৃতির কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
পরিবেশ নিয়ে বাজেট বক্তৃতার সময় মালয়ালমে তিনি একটি কুরাল বলেন, যার অর্থ: রাজ্যের অলঙ্কার হল পাঁচটি দুর্দশা থেকে মুক্তি, সম্পদ, উৎপাদন, খুশি ও নিরাপত্তা।
প্রত্যক্ষ করের কথা বলতে গিয়ে তিনি উল্লেখ করেন কালিদাসের লেখা রঘুবংশম থেকে:
প্রজানামেবভুত্যর্থংসতাভ্যোবলিমগ্রহীৎ।
সহস্রগুণমুস্ত্রষ্টুমাদত্তেহিরসংরবিঃ।।
যার অর্থ: সূর্য যে ভাবে প্রতিটি জলবিন্দু থেকে বাষ্প গ্রহণ করে রাজাও তাই করেন, পরে ফিরিয়েও দেন। রাজা অর্থ সংগ্রহ করেন প্রজাদের হিতার্থেই। আয়কর বিভাগের দেড়শো বছর পূর্তিতে অবশ্য চাণক্য শ্লোকের কথা উল্লেখ করেছিল তৎকালীন ইউপিএ সরকার। সেখানে মূল উপজীব্য ছিল, সাধারণের থেকে ঠিক কতটা কর নেওয়া উচিত সরকারের।