শেষ আপডেট: 31st March 2020 18:30
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বিশ্বজোড়া করোনা আতঙ্কের মধ্যেই জঙ্গি হামলায় কেঁপে উঠেছিল আফগানিস্তান। গত ২৫ মার্চ কাবুলের ওল্ড সিটি এলাকার শোরাবাজারের গুরুদ্বারে জঙ্গি হামলায় প্রাণ যায় এক শিশু-সহ ২৭ শিখ পুণ্যার্থীর। ওই হামলার দায় স্বীকার করে ইসলামিক স্টেট। হামলায় নাম জড়ায় কেরলের বাসিন্দা আবু খালিদ অল-হিন্দি ওরফে মহম্মদ মহসিনের। সূত্রের খবর, কাবুলে এই গুরুদ্বার হামলার তদন্তে নামতে পারে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)। যদি তাই হয় তাহলে প্রথমবার বিদেশের মাটিতে জঙ্গি হামলার তদন্তভার নেবেন ভারতীয় গোয়েন্দারা।
ঘটনার দিন সকালে শোরাবাজারের গুরুদ্বারে বহু পুণ্যার্থীর ভিড় ছিল। আচমকাই সেখানে ঢুকে পড়ে এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে চার জঙ্গি। শুরু হয় লাগাতার বোমাবাজি। জঙ্গিরা পণবন্দি করে ফেলে প্রায় দেড়শো জন শিখ পুণ্যার্থীকে। তাদের মধ্যে ছিল শিশুরাও। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় আফগান বাহিনী। ঘণ্টা ছয়েক দু’পক্ষের গুলির লড়াইয়ের পরে জঙ্গি-মুক্ত হয় গুরুদ্বার। আফগান বাহিনীর তরফে জানানো হয়, গুলির লড়াইয়ে চার জঙ্গিই খতম হয়েছে।
গোড়ায় এই হামলার পিছনে তালিবানের দিকে আঙুল উঠলেও, পরে দলীয় মুখপত্রে হামলার দায় স্বীকার করে আইএস গোষ্ঠী। এই হামলার তীব্র নিন্দা করে ভারত। পাকিস্তান, বাংলাদেশ, আফগানিস্তানে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের বিষয়টাও উঠে আসে।
হামলার তদন্ত শুরু হওয়ার মাঝেই আইএসের দলীয় মুখপত্রে তিন জঙ্গির নাম পরিচয় সামনে আনা হয়। তার মধ্যে একজনের সঙ্গে কেরলের যোগ মেলে। এনআইএ জানিয়েছে, আবু খালিদ-অল-হিন্দি নামে যে জঙ্গির নাম ও ছবি সামনে এনেছিল আইএস সে আদতে কেরলের বাসিন্দা। চমক শুরু হয় এর পরে। কেরল পুলিশ দাবি করে ওই যুবকের আসল নাম মহম্মদ মহসিন। বয়স ২১ বছরের আশপাশে। কেরলের কাসারগড় এলাকার বাসিন্দা। আইএসে নাম লিখিয়ে বাড়ি তেকে বেপাত্তা হয়েছিল। গত বছর আফগানিস্তানে ড্রোন হামলার সময় এই মহসিনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর আসে গোয়েন্দাদের কাছে। কিন্তু পরে দেখা যায়, নাম বদলে এই মহসিনই বাকি জঙ্গিদের সঙ্গে হামলা চালিয়েছিল কাবুলের গুরুদ্বারে। আইএসের দলীয় মুখপত্রে এটাও জানানো হয় যে, বিশ্বজুড়ে মুসলিমদের উপর ঘটে চলা নির্যাতনের বদলা নিতেই নাকি শিখ গুরুদ্বারে হামলার পরিকল্পনা করেছিল সে।
কাবুল হামলার কেরল-যোগের কারণেই জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এই তদন্তভার নিচ্ছে কিনা সেটা জানা যায়নি। তবে ওই হামলার পিছনে ভারতীয় বংশোদ্ভূত আরও কোনও জঙ্গি জড়িত কিনা সেটা অবশ্যই তদন্ত করে দেখা হবে। আবু ইউসুফ অল-হিন্দি ওরফে শফি আরমার নামেও এক ভারতীয় বংশোদ্ভূত আইএসের ফিদায়েঁ জঙ্গি ছিল। সিরিয়ায় আত্মঘাতী বিস্ফোরণে প্রাণ যায় তার। কেরল থেকে এর আগেও বহু তরুণ-তরুণীর আইএসে নাম লেখানোর খবর মিলেছিল। গোয়েন্দারা জানাচ্ছেন, ২০১৬-১৭ সালে সিরিয়াতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ৯ জন কেরলের বাসিন্দাকে।