শেষ আপডেট: 24th May 2020 14:06
দ্য ওয়াল ব্যুরো: চিন-মার্কিন সম্পর্ককে নতুন ঠান্ডা যুদ্ধের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে বলে মন্তব্য করলেন চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই। করোনাভাইরাস এবং হংকং ইস্যুতে সাংবাদিকদের সামনে আজ রবিবার এই তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করেছেন চিনের বিদেশমন্ত্রী তথা চিনা কমিউনিস্ট পার্টির পলিটব্যুরোর বর্ষীয়াণ সদস্য। তিনি বলেন, "আমরা এটা লক্ষ্য করছি যে, আমেরিকার ভিতরকার কিছু রাজনৈতিক শক্তি চিন-মার্কিন সম্পর্ককে ক্রমশ ঠান্ডাযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিচ্ছে”। এমনিতেই বাণিজ্য, মানবাধিকার নিয়ে দু'দেশের মধ্যে কূটনৈতিক টানাপোড়েন লেগেই থাকে। প্যালেস্টাইনের গাজা স্ট্রিপে মার্কিন যুদ্ধবিমান হানা দিলে গর্জে ওঠে বেজিং। আবার কমিউনিস্ট শাসিত চিনে থাকা উইঘুর মুসলিমদের মানবাধিকার ও ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে চিনের বিরুদ্ধে সরব হয় ওয়াশিংটন। এখন তাতে যোগ হয়েছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের বিষয়টি। সারা বিশ্বকে সংকটের মধ্যে ফেলে দেওয়া এই ভাইরাস ছড়ানোর পিছনে চিনের হাত রয়েছে বলে লাগাতার আক্রমণ শানাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রশ্ন হল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কোন অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক শক্তির দিকে আঙুল তুলেছেন চিনা বিদেশমন্ত্রী? কিন্তু তা নির্দিষ্ট করে বলেননি ওয়াং ই। তাঁর কথায়, করোনাভাইরাসের সংক্রমণে এত মানুষের মৃত্যু এবং স্তব্ধ হয়ে যাওয়া অর্থনীতি নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প সারা পৃথিবীকে ভুল বোঝাতে চাইছেন। উনিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে দুই মহাশক্তিধর দেশ সোভিয়েত ইউনিয়ন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্ক বোঝানোর জন্য কোল্ড ওয়ার তথা ঠান্ডা যুদ্ধ শব্দটি ব্যবহার করা হত। কিন্তু নয়ের দশকের গোড়ায় সোভিয়েতের ভাঙন এবং বার্লিন দেওয়াল ভেঙে যাওয়ার মধ্যে দিয়ে বিশ্ব অর্থনীতি ও রাজনীতির ভারসাম্যই বদলে যায়। অনেকের মতে, একমুখী বিশ্ব গড়ে ওঠে। যার বর্শাফলক আমেরিকা। চিনের বিদেশমন্ত্রী ফের সেই শব্দবন্ধের উচ্চারণ করে কূটনৈতিক মহলের কৌতূহল বাড়িয়েছেন বলেই মত অনেকের। গত বছর হংকংয়ের সায়ত্ত্ব শাসন নিয়ে ব্যাপক বিদ্রোহ দেখা গিয়েছিল। চিনা প্রশাসন এবং ছাত্র-যুবদের যে সংঘাত সেই সময়ে হয়েছিল তাতে অনেকেই আশঙ্কা করেছিলেন আরএকটা তিয়েন-এন-মেন স্কোয়ার না ঘটে যায়। গত শুক্রবার চিনের অ্যাসেম্বলিতে একটি আইন পাশ করা হয়েছে। যাতে হংকংয়ে আধা সায়ত্ত্ব শাসন দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। অনেকের বক্তব্য, নতুন করে আন্দোলনের উত্তাপ এড়াতেই এই কৌশল নিয়েছে চিন। এই ঘটনা নিয়ে বেজিংয়ের বিরুদ্ধে আমেরিকা স্বভাবসিদ্ধ ঢঙেই সমালোচনা করেছে। ওয়াশিংটনের বক্তব্য, হংকংকে নিজেদের কব্জায় রাখতে নাম কা ওয়াস্তে সায়ত্ত্ব শাসন দেওয়া হয়েছে। আসলে ওখানে মানবাধিকার চূড়ান্ত ভাবে লঙ্ঘিত হচ্ছে। করোনাভাইরাস নিয়ে যে ভাবে আমেরিকা চিনের বিরুদ্ধে খড়্গহস্তে নেমেছে সেই প্রসঙ্গে চিনা কমিউনিস্ট পার্টির এই শীর্ষ সারির নেতা বলেছেন, সারা বিশ্বে রাজনৈতিক ভাইরাস ছড়াচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তিনি আরও বলেন, "এই ভাইরাস ছড়ানোর মধ্য দিয়ে আসলে চিনকে আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। মিথ্যের বেসাতি চলছে। এর পিছনে গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে।"