দ্য ওয়াল ব্যুরো: বাইরের কোনও সংস্থার সমীক্ষা নয়, সরকারেরই সমীক্ষা। আর তাতেই স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদী জমানায় কতটা দীর্ণ হয়ে পড়েছে ঘরোয়া অর্থনীতি।
গত চার দশকে এই প্রথম গ্রামে চাহিদা এক ধাক্কায় কমে গিয়েছে অনেকটা। কারণ জীবনধারণের জন্য খরচই কমিয়ে দিয়েছেন গ্রামের মানুষ। সাত বছর আগেও প্রতি মাসে যে পরিমাণ খরচ তাঁরা করতেন বা করতে পারতেন, এখন তাও করছেন না।
এক দিকে জিনিসপত্রের দাম গত ৬ বছরে বেড়েছে। অথচ কিনা গ্রামের মানুষ খরচ করাই কমিয়ে দিয়েছে। অনেকের মতে, এর থেকেই বোধগম্য দেশে কতটা আচ্ছে দিন এসেছে! বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর মোদ্দা মানে দাঁড়াচ্ছে একটাই। দেশে দারিদ্র বেড়েছে। তা কোনও ভাবেই কমেনি। মানুষ খরচ কমিয়ে দেওয়ার অর্থই হল, জিনিসপত্রের চাহিদা কমছে। আর চাহিদা কমলে উৎপাদনও কমবে। তাতে ধাক্কা খাবে দেশের অর্থনীতি।
কেন্দ্রে পরিসংখ্যান মন্ত্রকের অধীনে ন্যাশনাল স্যাম্পেল সার্ভে অর্গানাইজেশন এই সমীক্ষা করেছে। ২০১৭ সালের জুলাই মাস থেকে ২০১৮ সালের জুন মাস পর্যন্ত এই সমীক্ষা চালানো হয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, গ্রামের মানুষের মাথাপিছু মাসিক খরচ ২০১১-১২ আর্থিক বছরের তুলনায় ৮ শতাংশেরও বেশি কমে গিয়েছে। হিসাব মতো ২০১১-১২ সালে গ্রামে মাথা পিছু মাসে খরচের পরিমাণ ছিল ১২১৭ টাকা। তা কমে ২০১৭-১৮ সালে হয়েছে ১১১০ টাকা।
শহরের মানুষের খরচ অবশ্য বেড়েছে। কিন্তু সেই বৃদ্ধির হারও মূল্যবৃদ্ধির তুলনায় একেবারেই নগন্য। মাত্র ২ শতাংশ। ২০১১-১২ সালে গড়ে শহরের মানুষ মাথাপিছু মাসে খরচ করত ২২১২ টাকা। তা বেড়ে হয়েছে ২২৫৬ টাকা।
এখন প্রশ্ন হল, কোন কোন খাতে খরচ কমিয়েছে মানুষ?
রিপোর্টে বলা হয়েছে, গ্রামে ও শহরে চাল, গম ইত্যাদি বাবদ খরচ কমিয়েছে মানুষ। গ্রামে তা কমেছে ২০ শতাংশ হারে, শহরে ৮ শতাংশ হারে। নুন, চিনি, মশলা বাবদ খরচও গ্রামে ও শহরে অন্তত ১৫ শতাংশ কমেছে। এ ছাড়া ডাল, ভোজ্য তেল, ফলমূল সবই কেনা কমিয়েছেন গ্রাম-শহরের মানুষ।
তাৎপর্যপূর্ণ হল, এই রিপোর্টও নাকি চেপে রেখেছিল ন্যাশনাল স্যাম্পেল সার্ভে অর্গানাইজেশন। কারণ রিপোর্টে নানান নেতিবাচক মন্তব্য রয়েছে। ঠিক যে ভাবে লোকসভা ভোটের আগের এনএসএসও-র আর একটি রিপোর্ট চেপে রাখা হয়েছিল। তাতে বলা হয়েছিল, গত চার দশকে এই প্রথমে কর্মসংস্থানের এত খারাপ অবস্থা দেশে।
আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ ছবি এই রিপোর্ট থেকে পাওয়া যাচ্ছে। তা হল, মোদী জমানার তুলনায় চাহিদা অনেক বেশি ছিল গ্রাম ও শহরে। মনমোহন জমানায় গ্রাম ও শহরে জীবনধারণের জন্য মানুষের খরচ বেড়েছিল অনেকটাই। তাতে চাহিদাও বেড়েছিল অর্থনীতিতে। যেমন, ২০০৯-১০ সাল থেকে ২০১১-১২ সালে গ্রামে মানুষের মাথা পিছু খরচ বেড়েছিল ১৫ শতাংশেরও বেশি। ১০৫৪ টাকা থেকে তা বেড়ে হয়েছিল ১২১৭ টাকা। শহরে তা বেড়েছিল সাড়ে ১১ শতাংশ হারে। ১৯৮৪ থেকে তা বেড়ে হয়েছিল ২২১২ টাকা।
আরও পড়ুন...
https://www.four.suk.1wp.in/unemployment-rate-in-highest-in-45-years/