শেষ আপডেট: 18th June 2020 12:40
দ্য ওয়াল ব্যুরো: তেলেঙ্গানার ছোট্ট শহর সূর্যপেটে আজ বন্ধ সব দোকানপাঠ। না, করোনা সংক্রমণ বা লকডাউনের জন্য নয়, আজ দোকান বন্ধ অন্য কারণে। গোটা শহর সম্মান জানাতে হাজির হয়েছেন কর্নেল বিকামুল্লা সন্তোষ বাবুকে। যাঁকে দুদিন আগে পর্যন্ত এই লোকগুলো চিনতেন না, তাঁর জন্য আজ চোখে জল, মুখে স্লোগান। এই চোখের জল আর জয় হিন্দ ধ্বনিতেই শেষ বিদায় জানানো হল গালওয়ান উপত্যকায় চিনা বাহিনীর হামলায় শহিদ ১৬ বিহার রেজিমেন্টের কর্নেলকে।
মঙ্গলবার সকালেই খবরটা এসে পৌঁছয় বাড়িতে। কয়েক দিন পরেই নিজের জন্মদিনে বাড়ি ফেরার কথা ছিল সন্তোষ বাবুর। তা আর হল না। শেষ ফেরা ফিরলেন কফিনবন্দি হয়ে। শোকের আবহে ঢেকে যায় চারদিক। কিন্তু তার সঙ্গেই ছিল গর্ব। দেশের জন্য প্রাণ দেওয়া তো আর কম মহৎ কাজ নয়। মুহুর্তের মধ্যে সন্তোষ বাবুর খবর ছড়িয়ে পড়ে সূর্যপেট শহরের আনাচে কানাচে। আর তারপরেই শহরের বীর সন্তানকে বরণ করে নিতে তৈরি হয় শহরটা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সম্পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষ হয় কর্নেলের শেষকৃত্য। হাজির ছিলেন পরিবারের সকলে। মুখে মাস্ক পরে চার বছরের ছেলে অনিরুদ্ধকে নিয়ে হাজির ছিলেন সন্তোষ বাবুর স্ত্রী। ছেলের মুখেও ছিল মাস্ক। মুখাগ্নি করলেন সন্তোষ বাবুর বাবা। স্ত্রীর হাতে তুলে দেওয়া হল সন্তোষ বাবুর সেনার পোশাক। ২১ তোপের সেলামি দিলেন জওয়ানরা।
এদিন যেন কোথাও গিয়ে এক হয়ে গিয়েছিল গোটা শহরটা। সকাল থেকেই দোকান বন্ধ। শহরটাও যেন শোকে পাথর। তেরঙায় মোড়া সন্তোষ বাবুর কফিনটা যখন জওয়ানরা ঘাড়ে করে নিয়ে যাচ্ছিলেন, আশেপাশের বাড়ি থেকে পুষ্পবৃষ্টি হচ্ছিল। মাস্ক পরে শ্মশানে উপস্থিত ছিলেন হাজার হাজার মানুষ। তাঁরা কেউই হয়তো ব্যক্তিগতভাবে কর্নেলকে চিনতেন না। কিন্তু সবাই স্যালুট জানালেন ভারত মাতার এই বীর সন্তানকে। আকাশ, বাতাস মুখরিত হল, জয় হিন্দ, বন্দে মাতরম, সন্তোষ বাবু অমর রহে ধ্বনিতে।
আবার যেন কোথাও গিয়ে এক হয়ে গেল গোটা ভারতবর্ষ। জীবিত অবস্থাতেও দেশের একতার জন্যই লড়েছেন সন্তোষ বাবু। শহিদ হয়েও সবাইকে এক করে দিয়ে চলে গেলেন।