শেষ আপডেট: 13th July 2020 03:19
দ্য ওয়াল ব্যুরো: রবিবার সকালে হঠাৎ করেই নিজের অনুগামী বিধায়কদের সঙ্গে নিয়ে দিল্লি চলে আসেন রাজস্থানের উপমুখ্যমন্ত্রী তথা সেখানকার কংগ্রেস সভাপতি শচীন পাইলট। তারপরেই শুরু হয় জল্পনা। প্রথমে শোনা যায় কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী ও রাহুল গান্ধীর সঙ্গে দেখা করতে রাজধানীতে এসেছেন তিনি। কিন্তু একদিন কেটে গেলেও তাঁদের সমগে দেখা করেননি পাইলট। তারপরেই জল্পনা, সোমবার বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডার সঙ্গে দেখা করতে পারেন তিনি। তবে কি জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার পথে কংগ্রেস ছাড়ছেন এর এক তরুণ নেতা? প্রশ্ন উঠছে কংগ্রেসের অন্দরেই। সোমবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ একটি বৈঠকের ডাক দিয়েছেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট। এই বৈঠকে উপস্থিত থাকার জন্য কংগ্রেসের তরফে হুইপ জারি করা হয়েছে। যদিও শচীন পাইলট ও তাঁর অনুগামীরা এই বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন না বলেই খবর। সেই সময় নাড্ডার সঙ্গে দেখা করতে পারেন পাইলট। তাঁর পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে এই বৈঠকে আলোচনা হতে পারে বলে সূত্রের খবর। দিল্লিতে থাকা পাইলটের দাবি, তাঁর সঙ্গে ৩০ বিধায়কের সমর্থন রয়েছে। অর্থাৎ রাজস্থানে কংগ্রেস সরকার ফেলার জন্য যথেষ্ট রসদ তাঁর কাছে রয়েছে বলেই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন এই নেতা। ২০০ আসন বিশিষ্ট রাজস্থান বিধানসভায় এই মুহূর্তে কংগ্রেসের বিধায়কের সংখ্যা ১০৭। এছাড়া ১২ জন নির্দল বিধায়কের সমর্থন রয়েছে তাদের। রাষ্ট্রীয় লোক দল, সিপিএম ও ভারতীয় ট্রাইবাল পার্টির আরও ৫ বিধায়ক সমর্থন করেছেন গেহলট সরকারকে। অর্থাৎ এই মুহূর্তে কংগ্রেসের সমর্থনে রয়েছেন ১২৬ জন বিধায়ক। অর্থাৎ পাইলটের দাবি মতো ৩০ বিধায়ক কংগ্রেস ছেড়ে বেরিয়ে এলে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাবে কংগ্রেস। অন্যদিকে আবার রবিবার গভীর রাত আড়াইটের সময় মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলটের বাড়িতে সাংবাদিক সম্মেলন করে কংগ্রেস দাবি করেছে, তাদের সঙ্গে ১০৯ বিধায়কের সমর্থন রয়েছে। চিঠিতে স্বাক্ষর করে তাঁরা নাকি সেই কথা জানিয়েছেন। আজ সকালে আরও কিছু বিধায়ক চিঠিতে স্বাক্ষর করে সমর্থন করবেন বলেছেন। কংগ্রেসের দাবি সরকার সংকটে নেই। এই পরিস্থিতিতে বিজেপি ধীরে চলো নীতি নিয়েছে। পুরো পরিস্থিতির উপর নজর রাখলেও এখনও পর্যন্ত আগ বাড়িয়ে কিছু বলতে যায়নি তারা। দলের এক নেতার কথায়, সোমবার সকালে রাজস্থানের বৈঠকেই ঠিক হয়ে যাবে শচীন পাইলট ও তাঁর অনুগামীদের নিয়ে কী ভাবছে রাজস্থান কংগ্রেস। তাহলে পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে সুবিধা হবে। যদিও বিজেপির আর এক নেতা জানিয়েছেন, মনস্থির নাকি করেই নিয়েছেন পাইলট। গেহলটের নেতৃত্বে তিনি নাকি আর থাকবেন না। তবে এই বিষয়ে কেউ এখনও কোনও বিবৃতি দেননি। মধ্যপ্রদেশের ক্ষত টাটকা কংগ্রেসের। যেভাবে নিজের অনুগামী ২২ বিধায়ককে নিয়ে জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া দল ভেঙে বেরিয়ে আসায় সেখানে কংগ্রেসের কমল নাথ সরকার পড়ে যায়, রাজস্থানে সেটাই শচীন পাইলট করবেন কিনা সেই আশঙ্কা দেখা দিয়েছে কংগ্রেসের অন্দরে। এর মধ্যেই রবিবার টুইট করে বন্ধু পাইলটকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন সিন্ধিয়া। তারপরেই কংগ্রেসের অন্দরে জল্পনা, তবে কি শচীন পাইলটের এই পদক্ষেপের পিছনে সিন্ধিয়ার কোনও হাত রয়েছে। এই অবস্থায় সবার চোখ আজকের দুটি বৈঠকের দিকে। এক, রাজস্থানে কংগ্রেসের বৈঠকে কী সিদ্ধান্ত হয়। দুই, সত্যিই বিজেপি সভাপতি নাড্ডার সঙ্গে দেখা করতে যান কিনা পাইলট। এই দুটি বৈঠক হলেই দুই আর দুই চার করা অনেক সহজ হবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।