শেষ আপডেট: 12th May 2020 02:00
১৭ মে-র পর লকডাউনের মেয়াদ ফের বাড়বে, কী ভাবে ও কতদিন, ১৫ মে-র মধ্যে সব রাজ্যের মত চাইলেন মোদী
দ্য ওয়াল ব্যুরো: মহারাষ্ট্র, গুজরাত, তামিলনাড়ু, দিল্লি সহ বহু রাজ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা রোজই বাড়ছে। ফলে সোমবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠকে অধিকাংশ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীই দাবি জানিয়েছেন, ১৭ মে-র পর চতুর্থবারের জন্য লকডাউনের মেয়াদ ফের বাড়ানো হোক। কিন্তু তা আরও কতদিনের জন্য বাড়ানো হবে, তার স্বরূপই বা এ বার কী হবে তা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি। বরং সূত্রের খবর, প্রধানমন্ত্রী সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছেন, এ ব্যাপারে তাঁদের পরামর্শ লিখিতভাবে যেন ১৫ মে-র মধ্যে তাঁকে জানান। ২) জানা গিয়েছে, অধিকাংশ রাজ্যের মত হল লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানো হোক। তবে রেড জোন জেলাস্তরে না করে কন্টেইনমেন্ট জোনে সীমিত থাক। এবং কন্টেইনমেন্ট জোনের বাইরে সব জেলায় জনজীবন ও গতিবিধি ক্রমশ স্বাভাবিক করার চেষ্টা শুরু হোক। ৩) মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ১৭ তারিখের পর লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানো কমানোর ব্যাপারে রাজ্যের হাতে আরও ক্ষমতা দেওয়া হোক। একই মত জানান, আরও কয়েক জন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁদের বক্তব্য, সবার পায়ের মাপ এক নয়। তাই একই সাইজের জুতো বানালে সবার পায়ে সেট করবে না। প্রত্যেককে তাদের রাজ্যের প্রয়োজন অনুযায়ী পদক্ষেপ করার অধিকার দেওয়া হোক। আর রেল, বিমান চলাচলের মতো বিষয় কেন্দ্র নিয়ন্ত্রণ করুক। প্রসঙ্গত, বর্তমানে বিপর্যয় মোকাবিলা আইনের আওতায় গোটা দেশে লকডাউন চলছে। এটি কেন্দ্রীয় আইন এবং তাই সব রাজ্য মানতে বাধ্য। গোটা দেশে একই প্রটোকল মেনে তাই কাজ চলছে। ৪) আলোচনায় মোটামুটি অধিকাংশ মুখ্যমন্ত্রীই স্বীকার করেছেন যে এখনই স্কুল, কলেজ খোলায় সমস্যা রয়েছে। সেই প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী তাই বলেছেন, অনলাইনে শিক্ষা ব্যবস্থাকে একেবারে নিচের স্তর পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়ার জন্য সব রাজ্যই যেন চেষ্টা করে।
আরও পড়ুন প্রধানমন্ত্রীকে মুখ্যমন্ত্রী, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক থেকে সরাসরি ধার নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হোক রাজ্যকে
৫) প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে বলেছেন, কোভিডের সংক্রমণ যেমন রুখে দেওয়া চ্যালেঞ্জ, তেমনই বড় চ্যালেঞ্জ হল অর্থনীতির চাকা ঘোরানো। করোনা সংক্রমণের কারণে ইউরোপ সহ গোটা বিশ্বে পর্যটন শিল্প থমকে গেছে। ভারতে যে রাজ্যগুলিতে করোনা সংক্রমণের প্রকোপ কমেছে, তারা বিদেশি পর্যটককে টানার চেষ্টা শুরু করতে পারে। বিদেশি পর্যটকদের পরীক্ষা করে প্রবেশ করতে দিতে অসুবিধা নেই। ৬) প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, পরিযায়ী শ্রমিকরা যে রাজ্য ছেড়ে বাড়ি ফিরতে চাইছেন, সেখানে যেমন শ্রমিক সমস্যা তৈরি হতে পারে, তেমনই তাঁদের নিজের রাজ্যে পৌঁছেও কর্মহীন হয়ে সংকটে পড়তে পারেন। কিন্তু মানুষ যে হেতু নিজের রাজ্যে ফিরতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন, তাই দশ দিনের মধ্যে সবাইকে বাড়ি ফেরানোর ব্যবস্থা করা হোক। সবারই কোভিড পরীক্ষা হবে। কারও মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়লে তাঁর চিকিৎসা হবে। এর ফলে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে পারে ঠিকই, উপায়ও আর নেই। ৭) পরিযায়ী শ্রমিকদের কী ভাবে আগামী দিনে কাজের সুযোগ করে দেওয়া হবে তা নিয়ে প্রতিটি রাজ্যই যেন নীতি প্রনয়ণ করে। এ ব্যাপারে কেন্দ্রও সাহায্য করবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।আরও পড়ুন Breaking: প্রধানমন্ত্রীকে মুখ্যমন্ত্রী: কেন্দ্র যখন সবই খুলে দিয়েছে, ১৭ তারিখের পর লকডাউন চালিয়ে কী লাভ!
৮) প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিদেশি বিনিয়োগ টানতে সব রাজ্যকেই উদ্যোগী হতে হবে। সে জন্য শ্রম আইন সরল করতে হবে। তা ছাড়া বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল তথা এসইজেড তৈরি করে বিনিয়োগ টানা যায় কিনা, সে ব্যাপারে দ্রুত সম্ভাবনা খতিয়ে দেখতে হবে। ৯) প্রায় সব রাজ্যই আর্থিক সংকটের কথা তুলে ধরে। মুখ্যমন্ত্রীরা জানান, রাজস্ব আদায় কমেছে। ফলে সেই ঘাটতি মেটাতে অবিলম্বে আর্থিক প্যাকেজ দিতে হবে কেন্দ্রকে। তা ছাড়া আর্থিক ঘাটতির সীমা তথা এফআরবিএম লিমিট ৩ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫ শতাংশ করতে হবে। ১০) বিহার, ত্রিপুরা সহ কয়েকটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা দাবি করেছেন, কৃষি উৎপাদনে জোর দিতে হবে। কৃষকদের কিছু আর্থিক সুবিধা দেওয়া যায় কিনা তাও ভাবতে হবে কেন্দ্রকে।
