শেষ আপডেট: 27th August 2020 02:18
১৭ লাখের বেশি পরীক্ষার্থী জয়েন্ট-নিটের অ্যাডমিট কার্ড ডাউনলোড করেছেন, তাঁরা পরীক্ষা দিতে মরিয়া: শিক্ষামন্ত্রী
দ্য ওয়াল ব্যুরো: করোনা সংক্রমণ এখনও দিন দিন বেড়েই চলেছে দেশে। প্রতিদিন সংক্রমণ আগের দিনের রেকর্ড ভেঙে দিচ্ছে। এই অবস্থায় আগামী মাসে জয়েন্ট এন্ট্রান্স এগজামিনেশন (জেইই) ও ন্যাশনাল এলিজিবিলিটি কাম এনট্রান্স টেস্ট (নিট) হবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্র। এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছে অনেক রাজ্যের সরকার। সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ারও হুমকি দিয়েছে তারা। তার মধ্যেই অবশ্য কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের পিছনে যুক্তি দিলেন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল নিশাঙ্ক। তাঁর দাবি, ইতিমধ্যেই ১৭ লাখের বেশি পরীক্ষার্থী অ্যাডমিট কার্ড ডাউনলোড করেছেন। এর থেকেই প্রমাণিত পরীক্ষা দিতে কতটা মরিয়া পরীক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার রমেশ পোখরিয়াল বলেন, “জয়েন্টে বসা ৮ লাখ ৫৮ হাজার পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৭ লাখ ৫০ হাজার এবং নিটের ১৫ লাখ ৯৭ হাজার পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১০ লাখের বেশি পরীক্ষার্থী ইতিমধ্যেই অ্যাডমিট কার্ড ডাউনলোড করেছেন। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১৭ লাখের বেশি পরীক্ষার্থী অ্যাডমিট কার্ড ডাউনলোড করেছেন। এর থেকেই প্রমাণিত পরীক্ষা দিতে মরিয়া তাঁরা।” পোখরিয়াল আরও বলেন, “পরীক্ষার্থীদের সুরক্ষার জন্য জয়েন্টে কেন্দ্রের সংখ্যা ৫৭০ থেকে বাড়িয়ে ৬৬০ করা হয়েছে। অন্যদিকে নিট পরীক্ষার কেন্দ্র ২৫৪৬ থেকে বাড়িয়ে ৩৮৪২ করা হয়েছে। পরীক্ষার্থীদের সুবিধা অনুযায়ীই তাঁরা পরীক্ষা কেন্দ্র পছন্দ করতে পেরেছেন। আমরা ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গেই রয়েছি। তাঁদের সুরক্ষা আমাদের কাছে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ। তারপরে তাঁদের শিক্ষা।” গতকাল ডিডি নিউজকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “আমরা ক্রমাগত পড়ুয়া ও অভিভাবকদের চাপে ছিলাম। তাঁরা জিজ্ঞাসা করছিলেন, কেন আমরা জয়েন্ট ও নিট পরীক্ষার অনুমতি দিচ্ছি না? ছাত্র-ছাত্রীরা চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলেন। তাঁরা তাঁদের পড়াশোনার ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা করছিলেন।” কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে, সংক্রমণের সম্ভাবনা কমাতে যাঁরা জয়েন্ট ও নিট পরীক্ষায় বসবেন, তাঁদের মাস্ক ও গ্লাভস পরে পরীক্ষা কেন্দ্রে আসতে হবে। সেইসঙ্গে নিজের জলের বোতল ও স্যানিটাইজারও আনতে হবে তাঁদের। পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢোকার আগে প্রত্যেকের থার্মাল স্ক্রিনিং করে দেখা হবে। যাঁদের শরীরের তাপমাত্রা বেশি হবে তাঁদের পরীক্ষা দেওয়ার জন্য প্রতিটি কেন্দ্রে আলাদা ঘর থাকবে। কেন্দ্রের জবাবের পরেও কিছু ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক ও শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত বিশেষজ্ঞরা এই সিদ্ধান্ত নিয়ে চিন্তা প্রকাশ করেছেন। তাঁদের অভিযোগ, সংক্রমণ বৃদ্ধির এই সময়ে এই পরীক্ষা নেওয়া মানে ছাত্র-ছাত্রীদের স্বাস্থ্য নিয়ে ছেলেখেলা করা। প্রশ্ন তুলেছেন জলবায়ু নিয়ে আন্দোলনকারী গ্রেটা থুনবার্গও। টুইট করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে এই পরীক্ষা স্থগিত করার দাবি তিনি জানিয়েছেন। অনেক রাজ্যও কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে। বুধবার পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড, মহারাষ্ট্র, পঞ্জাব, রাজস্থানের মতো একাধিক রাজ্য ভার্চুয়াল বৈঠক করে এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মত জানায়। উপস্থিত ছিলেন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধীও। দরকার পড়লে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার হুমকিও দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও এর মধ্যেই বৃহস্পতিবার পরীক্ষার পক্ষে সওয়াল করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখেছেন দেড়শর উপর শিক্ষাবিদ।