দ্য ওয়াল ব্যুরো: ভারতে লকডাউনের মেয়াদ দ্বিতীয়বার বাড়ানোর পরেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছিল, কিছু ক্ষেত্রে ২০ এপ্রিল থেকে আংশিকভাবে কাজ শুরু হবে। তার মধ্যে রয়েছে দেশের আইটি সেক্টরও। সোমবার থেকেই কাজ শুরু হবে এই সেক্টরে। কিন্তু কর্মীদের হাজিরা হবে নিয়ম মেনেই। এমনকি সরকারের নির্দেশমতো ৫০ শতাংশ কর্মীদের হাজিরা এই মুহূর্তে সম্ভব নয় বলেই জানিয়েছে আইটি কোম্পানিগুলি।
ভারতের আইটি হাব বলা হয় কর্নাটকের বেঙ্গালুরুকে। শুক্রবার কর্নাটকের উপমুখ্যমন্ত্রী অশ্বথ নারায়ণ সেখানকার আইটি ফার্মের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এই বৈঠকের পরে বায়োকনের ম্যানেজিং ডিরেন্টর কিরন মজুমদার শ জানিয়েছেন, “এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক ছিল। ২০ এপ্রিল থেকে কিছু কাজ শুরু হবে। কারণ আইটি সেক্টর খুবই গুরুত্বপূর্ণ সেক্টর। পুলিশ যে পাস সিস্টেম চালু করেছে তা খুবই উপকারী। এই সিস্টেম আরও চলা উচিত। আরও বেশি পাসের দরকার পড়বে আমাদের। আমরা খুব একটা বেশি প্রাইভেট গাড়িকে অনুমতি দিতে পারব না। সব কোম্পানি বাসে করে কর্মীদের অফিসে নিয়ে যাবেন। তার জন্য সরকার সাহায্য করবে।”
যদি অফিসে কারও করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে তাহলে খুবই কড়া নিয়ম মানতে হবে বলেই জানিয়েছে কিরন মজুমদার শ। তিনি বলেন, “পুরো কোম্পানি বন্ধ করে দিলে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।”
কর্নাটকের উপমুখ্যমন্ত্রী অশ্বথ নারায়ণ জানিয়েছেন, ২০ এপ্রিল থেকে পাসের কোনও সমস্যা থাকবে না। তিনি বলেন, “যদি কোনও কর্মচারী করোনা আক্রান্ত হন, তাহলে আমরা কি সেই কোম্পানি বন্ধ করে দেব, না স্যানিটাইজ করব, আমরা সেই ব্যাপারে নিয়ম তৈরি করে নেব। এখনও পর্যন্ত আমরা শুধুমাত্র রেসিডেন্সিয়াল এলাকার জন্য প্রোটোকল বানিয়েছি। প্রাইভেট গাড়ি বেশি ব্যবহার করা চলবে না। জীবাণু দুরীকরণ ও স্যানিটাইজেশনের কাজ চলবে। ইন্টারনেট সার্ভিসেও কোনও সমস্যা হবে না।”
কোম্পানিগুলি যেন কর্মী ছাঁটাই না করে সেই আবেদন অশ্বথ নারায়ণ। তিনি বলেন, “কোম্পানিকে বাঁচানোর জন্য বেতনে কিছু কাটছাঁট করা যেতে পারে। কিন্তু এই লকডাউনের পরে অনেক কর্মী নিজেদের চাকরি খুইয়েছেন। সেটা যেন আর না হয়।”
শিল্পগোষ্ঠী নাসোকম’এর প্রেসিডেন্ট দেবযানী ঘোষ জানিয়েছেন, এই ধাপে ধাপে কর্মী সংখ্যা বাড়ানোর প্রস্তাবে তাঁর সায় রয়েছে। তিনি বলেন, “সব কোম্পানির মালিকরাই স্বীকার করেছেন মানুষের জীবনের দাম সবথেকে বেশি। তাই নাসোকম-এর প্রস্তাব প্রথম ধাপে ১০ থেকে ১৫ শতাংশ কর্মীকে আনা হোক অফিসে। এভাবে ২-৩ মাস পরে ৫০ শতাংশ কর্মী কাজ করতে পারবে। এভাবে আমরা অনেকটা সময় পেয়ে যাব। অনেকেই ভাবছেন ৩ মে-র পর থেকে সব আবার আগের মতো হয়ে যাবে। এটা সম্ভব নয়। আমাদের ভাইরাসের বিরুদ্ধে বাঁচার পদ্ধতি শিখতে হবে।”
দেবযানী ঘোষ আরও জানিয়েছেন, এই করোনা সংক্রমণের ফলে মানুষের জীবনযাত্রায় বদল এসেছে। এভাবেই এই বদল নিয়ে অদূর ভবিষ্যতেও আমাদের কাজ করতে হবে। আর ভারতের আইটি সেক্টর এই ব্যাপারে ওয়াকিবহাল।