শেষ আপডেট: 25th September 2020 01:30
দ্য ওয়াল ব্যুরো: নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর শান্তি বজায় রাখতে দ্বিপাক্ষিক বোঝাপড়ায় বিশ্বাসযোগ্যতা ইতিমধ্যে হারিয়েছে বেজিং। মুখে শান্তির কথা বলেও প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় স্থিতাবস্থা পরিবর্তনের লক্ষ্যে কিছু না কিছু ঘটিয়েই চলেছে শি জিনপিং প্রশাসন। এই পরিস্থিতিতে এ বার কড়া অবস্থান নিল নয়াদিল্লিও। নয়াদিল্লির তরফে বেজিংকে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হল, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় লাল ফৌজের বেয়াদপি বরদাস্ত করা হবে না। অতীত সমঝোতার কারণে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর দুই দেশে সেনার আগ্নেয়াস্ত্র ছাড়াই টহলদারি দেওয়ার কথা। কিন্তু নয়াদিল্লির বক্তব্য, যে ভাবে কোনওরকম প্ররোচনা ছাড়াই পিএলএ সৈনিকরা ভারতীয় বাহিনীর উপর হামলা চালাচ্ছে তাতে আর হাত গুটিয়ে বসে থাকবে না সাউথ ব্লক। ভারতীয় বাহিনীকে বলে দেওয়া হয়েছে, আত্মরক্ষার জন্য তারা গুলি চালাতে পারে। সাউথ ব্লকের এক সেনা কর্তা বলেন, দুই দেশের মধ্যে যে সমঝোতা হয়েছিল তাতে লাদাখ সীমান্তে প্রতিটি টহলদারি বাহিনীতে ১৫ থেকে ২০ জনের বেশি জওয়ান থাকার কথা নয়। কিন্তু শর্ত ভেঙে পিএলএ জওয়ানরা এক সঙ্গে অনেকে মিলে চলে আসছে। তার পর ভারতীয় টহলদারি বাহিনীর উপর হামলা চালাচ্ছে। লাঠি, পাথর, পেরেক লাগানো মুগুর দিয়ে প্রাণঘাতী হামলা চালাচ্ছে তারা। গত জুন মাসে ও পরে অগস্টের শেষে এই ভাবেই তারা হামলা চালিয়েছে। কিন্তু এ বার তা করতে গেলে গুলি দিয়ে জবাব দেবে ভারতীয় বাহিনী। ভারত ও চিনের সেনা কমান্ডার স্তরে ষষ্ঠ রাউন্ডের বৈঠক শেষ হয়েছে। সে ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র এদিন বলেন, “আগামী দিনে শান্তি কায়েমের পথ একটাই। সংঘাত কমাতে আলোচনা চালিয়ে যাওয়া। এবং লাদাখে যে সব জায়গায় দুই বাহিনীর মধ্যে সংঘাত তৈরি হয়েছে, সেখানে ধীরে ধীরে সেনা মোতায়েন কমানো।” কিন্তু ব্যাপারটা যে সেদিকে যাচ্ছে না সেই আশঙ্কা কূটনীতিক ও কৌশলগত বিশেষজ্ঞদের মধ্যে চেপে বসছে। বরং তাঁদের অনেকেরই ধারনা শীত পড়ার অপেক্ষা করছে বেজিং। লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর অঞ্চলে শীতে প্রকট ঠাণ্ডা থাকে। তাপমাত্রা শূন্যের অনেক নিচে নেমে যায়। সেই সময়ে পায়ে পা দিয়ে ফের ঝগড়া বাধাতে পারে চিনা সেনা। ভারতীয় সেনা গোয়েন্দাদের কাছে খবর, লাদাখ সীমান্তে অন্তত ৫০ হাজার সেনা মোতায়েন করেছে চিন। সেই সঙ্গে মিসাইল সিস্টেম, ট্যাঙ্ক এবং প্রচুর আগ্নেয়াস্ত্র মজুত করেছে। ভারতীয় এক কূটনীতিকের কথায়, চিন এখন বলছে যে ভারতীয় বাহিনীর হামলায় ওদের একজন কমান্ডান্ট সহ ৬ জন জওয়ান মারা গেছে। তবে প্রকাশ্যে এ কথা ওরা এখনও স্বীকার করেনি। কিন্তু দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় যখন এই প্রসঙ্গ তুলেছে, তখন বুঝতে হবে ওদের হতাহতের সংখ্যা অন্তত এর দুগুণ বা তিন গুণ। ফলে মুখে যাই বলুক ওরা সীমান্তে অস্থিরতা জিইয়ে রাখতে চাইবে বলেই মনে করা হচ্ছে। তাই আসন্ন শীতের জন্য প্রস্তুতি বাড়াচ্ছে ভারতও। লাদাখ সীমান্তে ইতিমধ্যেই পরিকাঠামো বাড়ানো হয়েছে। সেখানে রসদ সরবরাহ করতে আর অসুবিধা নেই। শীতে অশান্তি বাধলে ভারতও গরম গরম জবাব দিতে প্রস্তুত থাকবে।