শেষ আপডেট: 6th April 2020 17:38
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ২৪ ঘণ্টা আগেই কেন্দ্র সাফ জানিয়ে দিয়েছিল ম্যালেরিয়ার ড্রাগ হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন কোনওমতেই বিদেশে রফতানি করা যাবে না। এদিকে আমেরিকা-সহ কয়েকটি দেশের তরফে এই ড্রাগ রফতানি করার জন্য ভারতের কাছে আবেদন করা হয়। চাপের মুখে ফের এই বিষয়ে বৈঠকে বসে কেন্দ্র। এই সিদ্ধান্তে বদল হবে কিনা তা জানা যাবে আগামীকাল। জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের নেতৃত্বে বাকি মন্ত্রীরা বৈঠকে বসবেন। সেখানেই এই ড্রাগ বিদেশে রফতানি করা হবে কিনা তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। গত ২৫ মার্চ প্রথম বার সরকারি তরফে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ড্রাগ রফতানির উপরে নিষেধাজ্ঞা চাপানো হয়েছিল। তবে কিছু কারণের জন্য রফতানিতে ছাড়ও ছিল। কিন্তু রবিবার সরকারি তরফে জানানো হয় দেশে আপৎকালীন অবস্থা এলে কোনওভাবেই যেন এই ড্রাগের ঘাটতি না হয়। তাই এই মুহূর্তে কোনওমতেই তা বিদেশে রফতানি হবে না। এই মুহূর্তে অবশ্য করোনাভাইরাসের কোনও প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়নি। বিজ্ঞানীরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। ভারতে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন প্রচুর পরিমাণে তৈরি হয়। কোভিড-১৯ সংক্রমণের চিকিৎসায় ম্যালেরিয়ার ড্রাগ কার্যকরি হতে পারে এমন তথ্য সামনে আসার পর থেকেই হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের চাহিদা অনেক বেড়ে গেছে। শনিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন সরবরাহ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে অনুরোধ করেছেন। সম্প্রতি দেশের দুই বড় ওষুধ নির্মাতা সংস্থা ইপকা ল্যাবরেটরিজ (Ipca laboratories) ও জাইদাস ক্যাডিলা (Zydus Cadila)-কে ইতিমধ্যেই ১০ কোটি হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের ট্যাবলেট বানানোর বরাত দেওয়া হয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের তরফে। ন্যাশনাল ফার্মাসিউটিক্যাল প্রাইসিং অথরিটির (NPPA)তরফে জানানো হয়েছে, দেশের বড় বড় ফার্মাসি কোম্পানিগুলির প্রতি মাসে প্রায় ২০ কোটি হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ট্যাবলেট তৈরির ক্ষমতা আছে। প্রতিটি ট্যাবলেটের ওজন ২০০ মিলিগ্রাম। জাইদাস ক্যাডিলার তরফে জানানো হয়েছে, হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন যেহেতু শুধু ম্যালেরিয়া প্রতিষেধক নয়, রিউমাটয়েড আর্থরাইটিস রোগেও ব্যবহৃত হয় এই ওষুধ, তাই এই ড্রাগ প্রোডাকশনে কোনও কমতি হবে না। সোমবার এই বিষয়ে বৈঠকে বসে সরকার। বৈঠক শেষে এক আধিকারিক জানিয়েছেন, “কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রককে বলা হয়েছে এই মুহূর্তে ভারতে এই ড্রাগের কতটা প্রয়োজন রয়েছে তা সরকারকে জানাতে। সেই প্রয়োজনের সঙ্গে আরও ২৫ শতাংশ যোগ করে তারপরেই বাকিটা আমরা রফতানির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেব।” তিনি আরও বলেন, “যদি এই হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ড্রাগ রফতানি করা হয় তাহলে সবার আগে তা আমেরিকায় পাঠানো হবে। এছাড়াও ব্রাজিল, স্পেনের মতো ৬-৭টা দেশ আমাদের কাছে রফতানির আর্জি জানিয়েছে।” ম্যালেরিয়ার প্রতিষেধক রক্ষাকবচ হতে পারে করোনাভাইরাসের সংক্রমণেও, এমন দাবি করেছিলেন বিজ্ঞানীরা। ন্যাশনাল টাস্ক ফোর্সের সবুজ সঙ্কেতও মিলেছিল। তবে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ জানিয়েছিল, সব সংক্রামিত রোগীর উপরে এই ড্রাগ এখনই প্রয়োগ করা যাবে না। ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন ছাড়া এই ড্রাগ বিক্রির উপরে নিষেধাজ্ঞাও জারি করেছে ড্রাগস কন্ট্রোল ডিপার্টমেন্ট। আইসিএমআরের বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ল্যাবরেটরি টেস্টে কোভিড-১৯ পজিটিভ যে রোগী, শুধুমাত্র তার উপরেই ড্রাগ প্রয়োগ করা যাবে তাও ডাক্তারের পরামর্শ মতো।