শেষ আপডেট: 13th February 2021 06:55
দ্য ওয়াল ব্যুরো: কয়েক দিন আগে দুটি বিতর্কিত রায় দেন বম্বে হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারপতি পুষ্প গনেদিওয়ালা। প্রথম ঘটনায় তিনি বলেন, পোশাক না সরিয়ে নাবালক বা নাবালিকার শরীরে অন্যায় স্পর্শ করলে তা যৌন নির্যাতন নয়। দ্বিতীয় ক্ষেত্রে তাঁর রায়, প্যান্টের চেন খুলে যৌনাঙ্গ প্রদর্শন যৌন নির্যাতন নয়। এই রায় নিয়ে বিতর্ক শুরু হওয়ার পরে বম্বে হাইকোর্টে তাঁর স্থায়ীকরণের সুপারিশ তুলে নেয় সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম। এবার অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে তাঁর নতুন সময়সীমা ১ বছর কমিয়ে মাত্র ১ বছর করা হল। অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে শুক্রবারই সময়সীমা শেষ হচ্ছে পুষ্পর। যেহেতু তাঁর স্থায়ীকরণের সুপারিশ তুলে নেওয়া হয়েছে তাই ফের তাঁকে অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবেই কাজ করতে হবে। শনিবার থেকেই এই নতুন সময়সীমা শুরু হচ্ছে। সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম জানিয়েছিল, ফের অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে ২ বছরের সময়সীমা দেওয়া হোক। কিন্তু শুক্রবার মহারাষ্ট্র সরকার একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়ে দেয়, ২ বছর নয়, ১ বছরের জন্য বাড়ানো হবে পুষ্পর সময়সীমা। অর্থাৎ সুপ্রিম কোর্টের সুপারিশের পরেও বিতর্কিত এই বিচারপতির সময়সীমা কমিয়ে দিল উদ্ধব ঠাকরে সরকার। গত ২০ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম বম্বে হাইকোর্টের নাগপুর বেঞ্চে স্থায়ী বিচারপতির পদের জন্য পুষ্প গনেদিওয়ালার নাম সুপারিশ করেছিল। কিন্তু তারপরেই এমন দুটি রায় তিনি দিয়েছেন যা গোটা দেশে আলোড়ন তুলেছে। এই রায়ের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন আইনজীবীদের একটা বড় অংশ। ১৯ জানুয়ারি বম্বে হাইকোর্টের নাগপুর বেঞ্চে পকসো আইনে দায়ের হওয়া একটি মামলার রায়ে বিচারপতি পুষ্প গনেদিওয়ালা জানান, পকসো আইন মতে যৌন নির্যাতন হওয়ার জন্য অভিযুক্ত ও আক্রান্তের ত্বকের সঙ্গে ত্বকের স্পর্শ ঘটতে হবে। জামা খুলে বা জামা সরিয়ে আপত্তিজনক কাজ করলে তবেই তা যৌন নির্যাতন বলে গণ্য হবে। পোশাকের ওপর দিয়ে স্পর্শ করলে তা যৌন নিগ্রহ নয়। ১২ বছরের একটি মেয়েকে যৌন নিগ্রহের অভিযোগে চলছিল মামলা। অভিযোগ, মেয়েটির বুকে অন্যায় স্পর্শ করেছিল ৩৯ বছরের এক যুবক। সেখানেই বিচারপতি পুষ্প গনেদিওয়ালা এই রায় দেন, যেহেতু অভিযুক্ত মেয়েটির পোশাক খোলেনি বা সরায়নি, তাই এটি যৌন নির্যাতন নয়। এর দিন কয়েক পরেই ফের আর একটি মামলার শুনানি করছিলেন ওই বিচারপতিই। সেখানেও তিনি রায় দেন, পাঁচ বছরের শিশুর হাত ধরা এবং নিজের প্যান্টের চেন খোলা যৌন নির্যাতনের সমকক্ষ অপরাধ নয় পকসো আইনে। এই রায়ের ফলে অভিযুক্ত ব্যক্তি, ৫০ বছরের লিবনুস কুজুরের পাঁচ বছরের কারাবাসের সাজা কমে হয়ে যায় পাঁচ মাস। সেই পাঁচ মাসের সাজা খাটা হয়ে গেছিল বলে ছাড়াও পেয়ে যায় লোকটি।