শেষ আপডেট: 29th July 2020 04:20
দিল্লিতে কমছে সংক্রমণ, কেজরিওয়াল সরকারের নমুনা পরীক্ষার পদ্ধতিতে প্রশ্ন তুলল হাইকোর্ট
দ্য ওয়াল ব্যুরো: দিল্লিতে হঠাৎ করেই আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি আগের থেকে অনেকটাই কমেছে। যেখানে এক সপ্তাহ আগেও আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিন কয়েক হাজার বাড়ত সেখানে বর্তমানে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে এক হাজারের কম। সেই তুলনায় সুস্থ হয়ে ওঠা মানুষের সংখ্যা বেশি। আর এই কারণে দিল্লিতে সুস্থতার হার ৮০ শতাংশের বেশি। এই অবস্থায় কেজরিওয়াল সরকারের নমুনা পরীক্ষার পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলল দিল্লি হাইকোর্ট। আদালতের তরফে প্রশ্ন করা হয়েছে, র্যাপিড অ্যান্টিজেন পদ্ধতিতে নমুনা পরীক্ষা করলে নেগেটিভ রিপোর্টের ক্ষেত্রে অনেক ভুল আসে। অন্যদিকে আরটি- পিসিআর টেস্টকেই মান্যতা দেওয়া হয়েছে। তাহলে দিল্লিতে কেন র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট বেশি হচ্ছে। রক্তে কোভিড ১৯ ভাইরাস থাকলে তবেই পজিটিভ রিপোর্ট দেয় আরটি- পিসিআর টেস্ট। অন্যদিকে র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট শুধুমাত্র তাঁদের ক্ষেত্রেই পজিটিভ রিপোর্ট দেয় যাঁরা অন্তত ১৫ দিন আগে আক্রান্ত হয়েছেন ও তাঁদের রক্তে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে। অর্থাৎ অ্যান্টিজেন টেস্টের মাধ্যমে সংক্রমণের গতি প্রকৃতি কিছুটা বোঝা গেলেও সেই মুহূর্তে কতজন আক্রান্ত সেই নিরিখে এই টেস্ট খুব বেশি কার্যকরী নয় বলে জানিয়েছে আদালত। দিল্লি হাইকোর্ট প্রশ্ন করেছে, যেখানে কেজরিওয়াল সরকারের দিনে ১১ হাজার আরটি- পিসিআর টেস্ট করার ক্ষমতা রয়েছে, তাহলে কেন ১৫ থেকে ২৩ জুলাইয়ের মধ্যে প্রতিদিন ৬০০-র বেশি টেস্ট করা হয়নি। জানা গিয়েছে, ১৮ জুন থেকে ২৪ জুলাইয়ের মধ্যে দিল্লিতে ৪ লাখ ৪ হাজার ১৪১টি র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট করা হয়েছে। তার মধ্যে ২৮১৮ জন উপসর্গযুক্ত মানুষের রিপোর্ট নেগেটিভ আসায় তাঁদের ফের আরটি- পিসিআর টেস্ট করা হয়। তাতে দেখা যায় ৪০৪ জনের রিপোর্ট পজিটিভ। অর্থাৎ অ্যান্টিজেন টেস্টে নেগেটিভ রিপোর্টে ভুল হওয়ার পরিমাণ ১৪ শতাংশ। এই নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে আদালত। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ বা আইসিএমআরের পলিসি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে দিল্লি হাইকোর্ট। আইসিএমআর নির্দেশ দিয়েছে র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট করার পরে শুধুমাত্র উপসর্গ রয়েছে এমন আক্রান্তের নেগেটিভ রিপোর্ট এলে তাঁদের ক্ষেত্রেই আরটি- পিসিআর টেস্ট করা হবে। আদালতের যুক্তি, এভাবে প্রকৃত আক্রান্তের খোঁজ মিলবে না। কারণ, গত সপ্তাহে দিল্লিতে সেরো সার্ভেতে দেখা গিয়েছে আক্রান্তদের মধ্যে একটা বড় অংশ উপসর্গহীন। তাহলে কী ভাবে অ্যান্টিজেন টেস্টে তা ধরা পড়বে। আদালতের তরফে আইসিএমআরকে জানানো হয়েছে, নমুনা পরীক্ষার ক্ষেত্রে একটা নতুন নির্দেশিকা নিয়ে আসতে। অন্যদিকে দিল্লি সরকারকে বলা হয়েছে আগামী শুনানিতে ৪ অগস্ট পর্যন্ত রাজধানীতে নমুনা পরীক্ষার তথ্য আদালতের সামনে পেশ করতে হবে। এই প্রসঙ্গে দিল্লির স্বাস্থ্যমন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈন জানিয়েছেন, আরটি- পিসিআর ও র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টে বিশেষ কোনও তফাৎ নেই, যদিও আরটি- পিসিআর টেস্ট বেশি যথাযথ। তিনি বলেন, “সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল আজ হাসপাতালে খুব কম সংখ্যক মানুষ ভর্তি হয়েছেন। আপনি এমন একজন মানুষকে পাবেন না, যিনি টেস্ট করাতে চেয়েছেন অথচ তাঁর টেস্ট হয়নি।”