শেষ আপডেট: 24th October 2020 11:41
দ্য ওয়াল ব্যুরো: কোভিড হাসপাতালে করোনা রোগীর চিকিৎসাকে ঘিরে অমানবিকতার অভিযোগ উঠেছে কেরলে। করোনা আক্রান্ত এক বৃদ্ধার চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি এই ঘটনার একটি ভিডিও দেখা গিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। আর তারপরেই কেরলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী কে কে শৈলজাকে চিঠি লিখে ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন করেছেন কংগ্রেস সাংসদ টি এন প্রথাপন। ঘটনাটি ঘটেছে ত্রিশূর মেডিক্যাল কলেজে। ৬৭ বছর বয়সী ওই বৃদ্ধার পরিবারের অভিযোগ, মেঝেতে আহত ও রক্তাক্ত অবস্থায় পড়েছিলেন তিনি। তাঁর হাত বিছানার সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়েছিল। যদিও এই অভিযোগের পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, তাঁকে বেঁধে রাখা হয়নি। মনোবিদের পরামর্শে তাঁর হাত বেঁধে রাখা হয়েছিল যাতে তাঁর হাতে থাকা স্যালাইনের চ্যানেল খুলে না যায়। নিজের চিঠিতে কংগ্রেস সাংসদ জানিয়েছেন, “করোনা আক্রান্ত হওয়ার পরে শারীরিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় ও তার সঙ্গে মানসিক সমস্যা দেখা দেওয়ায় কোভিড ফার্স্টলাইন ট্রিটমেন্ট সেন্টার থেকে গত ২০ অক্টোবর ত্রিশূর মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল ওই বৃদ্ধাকে। তাঁকে এমন একটি বিছানায় রাখা হয়েছিল যার কোনও সাইড রেলিং ছিল না। বিছানার সঙ্গে একটি কাপড় দিয়ে তাঁর হাত বেঁধে রাখা হয়েছিল। বিছানা থেকে পড়ে যান ওই বৃদ্ধা। পড়ে গিয়ে মাথা ও মুখে প্রচণ্ড আঘাত পান তিনি। রক্তও বের হয়।” কংগ্রেস সাংসদ আরও অভিযোগ করেছেন, কোভিড আক্রান্তদের মানসিক সমস্যা দেখা দিলে তার সঙ্গে মোকাবিলা করার জন্য কোনও মনোবিদ এই মুহূর্তে ত্রিশূর মেডিক্যাল কলেজে নেই। কিন্তু তারপরেও সেখানে রাখা হয়েছিল ওই বৃদ্ধাকে। এমনকি বৃদ্ধার পরিবারের তরফে অভিযোগ করার পরে ও বৃদ্ধার পড়ে থাকার ছবি প্রকাশ হওয়ার পরেও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বৃদ্ধার জামাই ফারুখ সংবাদমাধ্যমের সামনে জানান, “আমার পরিবারের ছয় সদস্য করোনা আক্রান্ত হন। তার মধ্যে আমার শ্বশুরও ছিলেন। আমি শ্বশুরের সঙ্গে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ছিলাম। সেই সময় আমি খবর পাই, আমার পরিবারে বাকিরা যে কোভিড ফ্রন্টলাইন সেন্টারে ভর্তি ছিলেন সেখান থেকে আমার শাশুড়িকে ত্রিশূর মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। পরের দিন আমার এক আত্মীয় তাঁকে দেখতে গিয়ে দেখেন মেঝেতে আহত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন তিনি। তিনিই ছবি ও ভিডিও তুলে শেয়ার করে দেন।” মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষের তরফে অবশ্য সংবাদমাধ্যমের সামনে জানানো হয়েছে, “ওই রোগীকে বেঁধে রাখা হয়নি। কিন্তু মনোবিদের পরামর্শে যাতে তিনি বেশি হাঁটাচলা না করতে পারেন সেদিকে লক্ষ্য রাখা হয়েছিল। এটা করা হয়েছিল যাতে তাঁর হাতে থাকা স্যালাইনের চ্যানেল খুলে না যায়। তাঁর পড়ে যাওয়া খুবই দুর্ভাগ্যজনক। কিন্তু তাঁর বিশেষ কোনও আঘাত লাগেনি। কোনও গাফিলতি ছিল না। আমরা স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে একটি বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দিয়েছি।”