শেষ আপডেট: 25th June 2020 14:55
দ্য ওয়াল ব্যুরো: লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় ভারতীয় সেনার উপরে চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মির হামলার পর থেকেই উত্তপ্ত দু’দেশের সম্পর্ক। এই হামলার আগেই দু’দেশের মধ্যে সেনার উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়েছিল। কিন্তু সেই চুক্তি লঙ্ঘন করেছিল চিনা সেনা, এমনটাই দাবি করল কেন্দ্রীয় বিদেশমন্ত্রক। এমনকি মে মাস থেকেই লাদাখে চিনা সেনা ঘাঁটি গেড়েছিল বলে জানিয়েছে মন্ত্রক। বিদেশমন্ত্রকের তরফে বৃহস্পতিবার একটি বিবৃতি জারি করে একথা জানানো হয়েছে। এই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ৬ জুন দু’তরফের মধ্যে সেনার উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়েছিল। ভারত ও চিন, দু’দেশই এই চুক্তিতে রাজি হয়েছিল। তাই দু’দেশেরই উচিত ছিল সেই চুক্তির সিদ্ধান্ত মেনে চলা। কিন্তু চিনের তরফে তা মানা হয়নি। বিবৃতিতে বিদেশমন্ত্রক জানিয়েছে, “অতীতেও এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু এই বছর চিনা সেনা যে ধরনের কাজ করছে তা সব ধরনের চুক্তির শর্তকে লঙ্ঘন করেছে। ১৫ জুনের হামলার জন্য সম্পূর্ণভাবে দায়ী চিন। তারাই আগ্রাসী ভঙ্গিতে হামলা চালিয়েছিল।” এই বিবৃতিতে বিস্তারিতভাবে চিনকে সব বিষয়ের জন্য দায়ী করা হয়েছে। বিদেশমন্ত্রকের তরফে আরও জানানো হয়েছে, “এই বিষয়ে বলা যেতে পারে মে মাস থেকে লাদাখে ঘাঁটি গেড়েছিল চিন। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার পাশে প্রচুর পরিমাণে সেনা ও অস্ত্রশস্ত্র মজুত করেছিল চিন। ১৯৯৩ সালে দু’পক্ষের মধ্যে যে চুক্তি হয়েছিল সেই চুক্তি ভঙ্গ করে এই কাজ করেছে চিন। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার দুদিকে ভারত ও চিনের মধ্যে যে শান্তি চুক্তি হয়েছিল তা ভঙ্গ করেছে চিন।” ভারত ও চিন দু’দেশের মধ্যে হওয়া এই শান্তি চুক্তিতে বলা হয়েছে, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার দু’দিকে দু’দেশের তরফে যতটা কম সম্ভব ততটা সেনা রাখতে হবে। কোনও রকমের আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে লড়াই করা যাবে না। বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাখতে হবে। এই চুক্তি চিনা সেনা লঙ্ঘন করেছে বলে অভিযোগ ভারতের। লাদাখের গালওয়ান উপত্যকা থেকে এখনও সরে আসার নাম নেই চিনের। গত ১৫ জুন গালওয়ান উপত্যকায় ভারত ও চিন দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছিল। ১৬ জুনের উপগ্রহ চিত্রে দেখা গিয়েছিল, পেট্রল পয়েন্ট ১৪-এর কাছে সামরিক কাঠামো শুরু করেছে চিন। পরবর্তীকালে ২২ জুনের উপগ্রহ চিত্রে দেখা যাচ্ছে নতুন তাঁবু ও ছাউনি তৈরি করছে তারা। এগুলি ১৬ জুনের ছবিতে ছিল না। এই উপগ্রহ চিত্রে দেখা যাচ্ছে, প্রথমবার এই এলাকায় গালওয়ান নদীর উপর কালভার্ট তৈরি করেছে চিন। এই কালভার্টের উপর দিয়েই চিনা ট্রাক নদী পার হচ্ছে। ১৬ জুনের ছবিতে যেখানে বুলডোজারের উপস্থিতি দেখা গিয়েছিল, সেখানেই এই কালভার্টগুলি তৈরি হয়েছে। মনে করা হচ্ছে, ওই বুলডোজার দিয়ে পাথর ফেলে নদীর প্রবাহ কমিয়ে কালভার্ট তৈরি করেছে চিন। গালওয়ান নদীর পাশে যে রাস্তা তা আগের তুলনায় অনেক বেশি চওড়া হয়েছে বলে বোঝা যাচ্ছে উপগ্রহ চিত্রে। কিন্তু ভারতের তরফে এই এলাকায় কোনও রাস্তা বানানো হয়নি। ভারত যদিও ইতিমধ্যেই ৬ কিলোমিটার লম্বা একটি রাস্তা তৈরি হয়েছে, যা দক্ষিণে দুরবুকের সঙ্গে উত্তরে দৌলত বেগ ওল্ডিকে যোগ করেছে। এই রাস্তা তৈরি করার ফলে বর্তমানে ওই এলাকায় ভারতীয় সেনার যাতায়াতে অনেক সুবিধা হয়েছে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।