শেষ আপডেট: 8th April 2020 14:03
দ্য ওয়াল ব্যুরো: করোনা মোকাবিলায় ২১ দিনের লকডাউন চলছে দেশে। কিন্তু এর মধ্যেই দেশের বিভিন্ন রাজ্যে থেকে খবর এসেছে, জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত ডাক্তার, নার্স, সাফাইকর্মী কিংবা বিমানের পাইলট ও বিমানসেবিকাদের হেনস্থা করা হয়েছে। পাইলট বা বিমানসেবিকারা বিদেশ থেকে আসায় কিংবা ডাক্তার-নার্সরা করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা করায় তাঁদের আবাসন ছাড়ার জন্য হুমকি পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তারমধ্যেই এই অন্য রকমের দৃশ্য দেখা গেল চেন্নাইয়ে। সেখানে পাইলটকে হিরোর সম্মান দিলেন বাসিন্দারা। চেন্নাইয়ের নন্দমবক্কমের একটি আবাসনে থাকেন এয়ার ইন্ডিয়ার পাইলট ক্যাপ্টেন মনীশ শর্মা। লকডাউনের আগে করোনা আক্রান্ত মাসকট থেকে ভারতীয়দের উদ্ধার করে আনে তাঁর বিমান। তারপরেই গত ১৫ মার্চ থেকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন তিনি। স্বাস্থ্য দফতর ও চেন্নাই কর্পোরেশনের কর্মীরা তাঁর ফ্ল্যাটের বাইরে ২৮ দিনের কোয়ারেন্টাইন নোটিস দিয়ে গিয়েছেন। এই সময় বাকি বাসিন্দাদেরও কী করতে হবে তা লেখা রয়েছে ও নোটিসে। জানা গিয়েছে, ওই আবাসনের বাসিন্দারা গিয়ে মনীশের দরজায় লাগানো ওই কোয়ারেন্টাইন নোটিসের নীচে একটি বিমানের ছবি এঁকেছেন। তারপর সেখানে তাঁরা লিখেছেন, “আপনার পরিষেবার জন্য ধন্যবাদ ক্যাপ্টেন মনীশ শর্মা। আপনি আমাদের হিরো।” এই ছবিই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। সবাই আবাসনের বাসিন্দাদের এই কাজের প্রশংসা করেছেন। একথা জানতে পেরে ক্যাপ্টেন মনীশ শর্মা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, “এটা প্রতিবেশীদের ভালবাসা। আমি শুধুমাত্র নিজের দায়িত্ব পালন করেছি।” এক সপ্তাহ পরে কোয়ারেন্টাইন পিরিয়ড শেষ হলে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে প্রত্যেককে ধন্যবাদ জানাবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। আবাসনের বাসিন্দা অনিল পি জোসেফ জানিয়েছেন, “ক্যাপ্টেন মনীশ শর্মার মতো যাঁরা সামনে থেকে লড়ছেন, তাঁদের ধন্যবাদ জানিয়েছি আমরা। রবিবার এইসব হিরোদের সম্মান জানাতে গোটা আবাসনে মোমবাতি ও প্রদীপ জ্বালিয়েছিলাম আমরা।” ওই আবাসনে আর একজন হিরোর সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। আবাসনের বাসিন্দা ডক্টর কোলান্ডাস্বামী চেন্নাইয়ের ডিরেক্টরেট অফ মেডিক্যাল সার্ভিসেস অ্যান্ড রুরাল হেলথ-এর সঙ্গে যুক্ত। তিনিও গত কয়েক দিনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা করোনা আক্রান্ত রোগীদের সেবা করেছেন। তাই আবাসনের লোকেরা রবিবার তাঁকে ‘হেলথ হিরো’র সম্মান দিয়েছে। জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের এই পরিশ্রমের জন্য বারবার তাঁদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে শুরু করে বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরাও। এই কর্মীদের হেনস্থার খবর সামনে আসতেই কেন্দ্রের তরফে রাজ্যগুলিকে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এইসব কর্মীদের যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, সেদিকে নজর রাখছে প্রশাসন।