শেষ আপডেট: 2nd August 2020 02:57
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ভারতে দিন দিন আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও মৃত্যুহার কমছে। কারণ, যে হারে দেশে আক্রান্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে তার থেকে অনেক কম সংখ্যক মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানিয়েছে, ভারতে করোনায় মৃত্যুহার বিশ্বের মধ্যে সবথেকে কম। আর তাই খুব কম সংখ্যক আক্রান্তকেই ভেন্টিলেটরের সাহায্যে রাখতে হয়েছে। এই অবস্থায় ভেন্টিলেটর রফতানির বিষয়ে অনুমতি দিয়েছে কেন্দ্র। শনিবার এই বিষয়ে বৈঠকে বসেছিল মন্ত্রীগোষ্ঠী। সেখানে স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তরফে এই প্রস্তাব দেওয়া হয়। তারপরে সবদিক খতিয়ে দেখে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্ত্রীগোষ্ঠী। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তরফে জারি একটি বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ভারতে প্রতিদিন করোনা আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যুহার কমছে। তাই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে এই মৃত্যুহার ২.১৫ শতাংশ। তার অর্থ খুব কম সংখ্যক রোগীকেই ভেন্টিলেটরের সাহায্যে রাখা হয়েছে। ৩১ জুলাইয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী এই মুহূর্তে ভারতে মোট অ্যাকটিভ রোগীর ০.২২ শতাংশ রোগীকে ভেন্টিলেটরের সাহায্যে রাখা হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানিয়েছে, ডিরেক্টর জেনারেল অফ ফরেন ট্রেড (ডিজিএফটি)কে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। ভারতে তৈরি ভেন্টিলেটর বিদেশে রফতানি করার ক্ষেত্রে বাকি পদক্ষেপ নেবে ডিজিএফটি। ডিরেক্টর জেনারেল অফ ফরেন ট্রেডের তরফে একটি বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, “ভেন্টিলেটরের রফতানিতে অনুমতি দিয়ে দেওয়া হয়েছে। আশা করা হচ্ছে ভারতে তৈরি হওয়া ভেন্টিলেটর বিদেশে নতুন বাজার খুঁজে পাবে।” জানানো হয়েছে, ভারতে ভেন্টিলেটর তৈরি করার ক্ষেত্রে বৃদ্ধি দেখা গিয়েছে। জানুয়ারির তুলনায় বর্তমানে ভারতে ভেন্টিলেটর তৈরি করার ২০টি নতুন কোম্পানি এসেছে। মার্চ মাসে ভারতে তৈরি ভেন্টিলেটর বিদেশে রফতানির ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। কারণ, ভারতে থাকা ভেন্টিলেটর এদেশের করোনা আক্রান্তদের জন্য উপযুক্ত সংখ্যায় রয়েছে কিনা সেটা নিশ্চিত করার দরকার ছিল। তাই ২৪ মার্চ ডিজিএফটি নোটিস দিয়ে জানিয়ে দেয়, কোনও ভেন্টিলেটর রফতানি করা হবে না। সেই নিষেধাজ্ঞা এবার তুলে নেওয়া হল। ভেন্টিলেটর রফতানিতে রাজি হয়েছে কেন্দ্র। ভারতে করোনায় মৃত্যহার কেন কমছে তা নিয়ে মুম্বইয়ের হোমি ভাবা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা একটি গবেষণার রিপোর্ট সামনে এনেছেন। গবেষকরা বলছেন, শীতপ্রধান দেশে সংক্রমণের প্রভাব যেমনভাবে শরীরে পড়বে, গ্রীষ্মপ্রধান দেশে তেমনটা নাও হতে পারে। বিশেষত, বিশ্বজুড়েই বিজ্ঞানীরা বলছেন করোনায় মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে ব্লাড ক্লট বা রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়া। এই ব্লাড ক্লট ফুসফুসে যেমন হচ্ছে, তেমনি রক্ত জমাট বাঁধছে হৃদপিণ্ডে, লিভারে, কিডনিতেও। বেশিরভাগ কোভিড রোগীর শরীরেই এমন উপসর্গ দেখা গেছে। গবেষকরা বলছেন, পশ্চিমের দেশগুলিতে এই ব্লাড ক্লটের কারণে মৃত্যুর সংখ্যা বেশি। ফুসফুস শুধু নয় হার্টেও রক্ত জমাট বেঁধে করোনা রোগীদের মৃত্যু হচ্ছে। এমনকি এও দেখা গেছে, করোনা সারিয়ে ওঠার পরেও হৃদপিণ্ডে রক্ত জমাট বেঁধেছে রোগীর, যার কারণে হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু হয়েছে অনেকের। গ্রীষ্মপ্রধান দেশগুলিতে বিশেষত ভারতে এই ধরনের উপসর্গে রোগী মৃত্যুর সংখ্যা অনেক কম। ফলে করোনায় মৃত্যহার কম।