শেষ আপডেট: 29th March 2020 09:55
দ্য ওয়াল ব্যুরো: করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে ২১ দিনের জন্য দেশজুড়ে লকডাউনের ঘোষণা করা হয়েছে। বন্ধ ট্রেন ও অন্যান্য গণপরিবহণ। জরুরি পরিষেবা ছাড়া সবকিছু বন্ধ। এই পরিস্থিতিতেও অন্য রাজ্যে বা শহরে আটকে পড়া শ্রমিকরা বাড়ি ফেরার চেষ্টা করছেন। কেউ পায়ে হেঁটে, কেউ বা অন্য উপায়ে ফিরতে চাইছেন। শনিবারই দিল্লির আনন্দবিহার বাসস্ট্যান্ডে দেখা গিয়েছে উত্তরপ্রদেশ থেকে আসা হাজার হাজার শ্রমিক ভিড় জমিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে লকডাউন সত্ত্বেও করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। আর তাই কেন্দ্রের তরফে নির্দেশ দেওয়া হল, এই পরিস্থিতিতে সব জেলা ও রাজ্যে প্রবেশ করার রাস্তা যেন বন্ধ করে দেওয়া হয়। মানুষ যাতে কোনও মতেই এক শহর থেকে অন্য শহরে না যেতে পারে তা দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রাজ্য সরকারগুলিকে। কেন্দ্রের তরফে জারি করা এই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, এখনও পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে সব রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলি করোনা মোকাবিলায় কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। জরুরি পরিষেবা জারি রয়েছে। প্রতি মুহূর্তে পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে রাজ্য সরকারগুলি। উপযুক্ত ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে। এই কড়াকড়ির মধ্যেও দেখা যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জায়গায় পরিযায়ী শ্রমিকরা বাড়ি ফেরার চেষ্টা করছেন। তাই নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে সমস্ত জেলা ও রাজ্যের সীমানা যেন বন্ধ করে দেওয়া হয়। রাজ্যগুলিকে নজর রাখতে হবে হাইওয়ের উপর দিয়ে এক শহর থেকে অন্য শহরে যেন কেউ না যেতে পারে। কেবলমাত্র পণ্যবাহী যানবাহন চলাচল করতে পারে। সব জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারদের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে তাঁরা যেন এই বিষয়টি তদারক করেন। যদি কেউ নিয়ম ভেঙে এক শহর থেকে অন্য শহরে যাওয়ার চেষ্টা করে, তাহলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নির্দেশিকায় আরও জানানো হয়েছে, যেখানে যেখানে অন্য শহর বা রাজ্য থেকে আসা শ্রমিকরা রয়েছে তাদের বাসস্থান ও খাবারের ব্যবস্থা করতে হবে রাজ্য সরকারগুলিকে। এর জন্য কেন্দ্রের তরফে সব রাজ্যগুলিকে ফান্ড পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই ফান্ড ব্যবহার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রাজ্যগুলিকে। এছাড়াও শ্রমিকরা যাতে তাদের মজুরি ঠিক সময় পায় সেটা নিশ্চিত করার জন্য রাজ্য সরকার গুলোকে নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। লকডাউন অবস্থায় শ্রমিকদের মজুরি কোন অবস্থাতেই কাটা যাবে না। এমনকি তারা যদি বাড়ি ভাড়া দিতে না পারে তাহলে তাদেরকে বাড়ি ছাড়তে বলতে পারবেন না বাড়ির মালিকরা। ছাত্রদেরও বাড়ি ছাড়ার কথা বলতে পারবেন না বাড়ির মালিকরা। এ বিষয়ে কঠোর হওয়ার নির্দেশ রাজ্য সরকার গুলোকে। নির্দেশিকায় আরও জানানো হয়েছে, লকডাউন অমান্য করে ইতিমধ্যেই যে শ্রমিকরা বাড়ি ফিরে গিয়েছেন, তাঁদের নিয়ম মতো ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। সেই শ্রমিকদের চিহ্নিত করে কোয়ারেন্টাইনে থাকার ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে স্থানীয় প্রশাসনগুলিকে। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের সচিব সব রাজ্যের মুখ্যসচিব ও ডিজিপিদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রাখবেন বলে জানানো হয়েছে। রাজ্য ও কেন্দ্রের যৌথ প্রয়াসেই এই করোনা মোকাবিলা করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।