শেষ আপডেট: 2 March 2019 04:56
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার সন্ধে বেলাই বালাকোট এয়ার স্ট্রাইক নিয়ে একাধিক প্রশ্ন তুলেছিলেন। সেনাবাহিনীকে সামনে রেখে বিজেপি রাজনীতি করছে বলে অভিযোগ করে মমতা বলেছিলেন, “কেউ বলছে তিনশো, কেউ বলছে সাড়ে তিনশো, আমরা জানতে চাইতেই পারি কতজন জঙ্গি মারা গিয়েছে?” আর এ ব্যাপারে বাংলা থেকে নির্বাচিত বিজেপি সাংসদ সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়া শনিবার বলে দিলেন পাকিস্তানে কোনও ক্ষয় ক্ষতি হয়নি।
দার্জিলিং-এর সাংসদ বলেন, “আমরা কোনও ক্ষয়-ক্ষতি করতে চাইনি। শুধু বোঝাতে চেয়েছি আমাদের ক্ষমতা। বাড়ির পাশে বোমা ফেলে পাকিস্তানকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে বাড়িতেও বোমা ফেলতে পারি।” নিহতের সংখ্যা কত সেই প্রশ্নের ব্যাপারে বলেন, “বালাকোট এয়ার স্ট্রাইকের পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রাজস্থানের চুরুতে জনসভা করেছেন। সেখানে তিনি কোনও সংখ্যার কথা বলেছেন? অমিত শাহ কি কোথাও সংখ্যা বলেছেন?”
প্রসঙ্গত, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লি থেকে ফিরে বৃহস্পতিবার বলেছিলেন, “আমি নিউইয়র্ক টাইমসের একটা খবর পড়েছি, ওয়াশিংটন পোস্ট, রয়টার্সের খবরও পড়েছি। এরা কেউ বলছে, বিমান হানায় কেউ মারা যায়নি। কেউ বলছে একজন মারা গেছেন। তা হলে তিনশ, সাড়ে তিনশ সংখ্যাটা কীসের ভিত্তিতে বলা হচ্ছে?” দিদি সন্দেহ প্রকাশ করে এও বলেছিলেন, “বোমাটা আদৌ ঠিক জায়গায় পড়েছে তো?” আর এ দিন আলুওয়ালিয়া সেই প্রশ্নের উত্তরগুলিই দিয়ে দিলেন সাংবাদিক বৈঠকে।
মঙ্গলবার বেলা যত বাড়তে থাকে ততই একাধিক সূত্র মারফত খবর আসতে থাকে জইশ ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দিয়ে কম করে তিনশো-সাড়ে তিনশো জঙ্গিকে খতম করে এসেছে ভারতীয় বায়ুসেনা। সদর্পে অমিত শাহ বলেছিলেন, “ঘুসকে মারা।” ’৭১-এর পর এই প্রথম পাকিস্তানের এতটা ভিতরে ঢুকে আঘাত হেনেছিল বায়ুসেনা। বুধবার সন্ধে বেলা তিন বাহিনীর তরফে সাংবাদিক সম্মেলনে বায়ুসেনার তরফে স্পষ্ট বলা হয়, তাঁদের কাছে অকাট্য প্রমাণ রয়েছে। কিন্তু কতজন মারা গিয়েছেন সে ব্যাপারে যা বলার সরকার বলবে।
সংখ্যা না বললেও মোদী, অমিত শাহরা দেশ জুড়ে শত্রুর ডেরায় ঢুকে শত্রু খতমের কথা বলছেন, তখন বিজেপি সাংসদের এ হেন মন্তব্য (আমরা ক্ষয়ক্ষতি করতে চাইনি) অনেককে বিস্মিত করেছে। মোদী যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম না করে বলছেন, আমাদের দেশেরই কেউ কেউ পাকিস্তানকে কথা বলার সুযোগ করে দিচ্ছেন, তখন তাঁর নিজের দলেরই আলুওয়ালিয়ার এই মন্তব্যে অন্য ইঙ্গিত খুঁজে পাচ্ছেন পর্যবেক্ষকদের অনেকে। এমনিতেই রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন, এ বার হয়তো আর টিকিট পাবেন না আলুওয়ালিয়া। সেটা আন্দাজ করেই কি তৃণমূলকে কিছুটা খুশি করতে এমন মন্তব্য করলেন?