শেষ আপডেট: 25th January 2021 07:15
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ভয়ঙ্কর ঘটনা অন্ধ্রপ্রদেশের চিত্তোর জেলায়। কুসংস্কার আর অন্ধবিশ্বাসের নজির গড়লেন খোদ এক স্কুল শিক্ষিকা। তিনি আবার স্কুলের প্রিন্সিপালও। নিজের দুই তরুণী মেয়েকে নৃশংসভাবে খুন করেছেন ওই শিক্ষিকা। তাঁর দাবি, তান্ত্রিক উপাচারে দেবতার কাছে বলি দিয়েছেন দুই মেয়েকে। সত্যযুগ শুরু হলে তাঁরা নাকি আবাক বেঁচে ফিরে আসবেন। চিত্তোরের মদনপাল্লে টাউনে এই ঘটনায় চরম উত্তেজনা ছড়িয়েছে। হতভম্ব তদন্তকারী অফিসাররাও। পুলিশ জানিয়েছে, ওই মহিলা ও তাঁর স্বামী দু’জনেই উচ্চশিক্ষিত। এলাকার দুটি স্কুলের প্রিন্সিপাল তাঁরা। কীভাবে এমন কাণ্ড ঘটালেন তা ভেবে পাচ্ছেন না স্থানীয় লোকজনরাও। শিক্ষিকার দুই মেয়ে অলেখ্য ও সাই দিব্যা। আলেখ্য বয়স ২৭ বছর, সাই দিব্যার ২২ বছর। আলেখ্য ভোপালে মাস্টার্স শেষ করেছেন। দিব্যা বিবিএ নিয়ে স্নাতক করেছেন। তিনি মুম্বইয়ের এআর রহমান মিউজিক স্কুলেরও ছাত্রীও। লকডাউনে দুই মেয়েই বাড়ি ফিরেছিলেন। এতদিন তাঁরা বাবা-মায়ের সঙ্গে বাড়িতেই থাকছিলেন। স্থানীয়রা বলেছেন, লকডাউন শুরু হওয়ার পরেই ওই দম্পতির ব্যবহারে অনেক বদল লক্ষ্য করা গিয়েছিল। বাড়ি থেকে বিশেষ বেরোতেন না তাঁরা। এলাকায় কারও সঙ্গে মিশতেনও না। তাঁদের হাবভাবও নাকি বদলে গিয়েছিল অনেক। দুই মেয়ে ফেরার পরেও এই বদলটা দেখা গিয়েছিল তাঁদের মধ্যে। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার দিন রাতে বাড়ি থেকে অদ্ভুত চিৎকার ও কান্নার আওয়াজ পেয়ে ছুটে যান এলাকার লোকজন। দরজা ধাক্কা দিলেও খুলছিলেন না ওই দম্পতি। পরে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ দরজা ভেঙে জোরজবরদস্তি বাড়িতে ঢুকে দেখে ভয়ানক কাণ্ড। ঠাকুরঘরে একটি মেয়ের রক্তাক্ত দেহ শোয়ানো রয়েছে। অন্য ঘরে পড়ে রয়েছে আর এক মেয়ের দেহ। দুটি দেহই লাল কাপড়ে জড়িয়ে রাখা হয়েছে। পুলিশি জেরায় শিক্ষিকা জানিয়েছেন, কলিযুগ শেষ হয়ে এসেছে। আজ সোমবার ভোর থেকেই নাকি সত্যযুগ শুরু হচ্ছে। তাই ভোরের আলো ফোটার আগেই দুই মেয়েকে বলি দিয়েছেন তিনি। তাঁরা সত্যযুগ শুরু হওয়ার পরে আবার বেঁচে ফিরবেন। মৃতদেহ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে পুলিশ। দম্পতিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশের অনুমান মানসিক রোগে ভুগছিলেন দু’জনেই। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।