শেষ আপডেট: 17th May 2020 12:54
অনাহারে টানা তিনদিন হাঁটা, পথেই মৃত্যু পরিযায়ী শ্রমিকের
দ্য ওয়াল ব্যুরো: পরিবারের কিছু সদস্যের সঙ্গে হেঁটেই বাড়ি ফিরছিলেন উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা এক পরিযায়ী শ্রমিক। রাস্তায় খাবার বিশেষ জোটেনি। না খেয়েই টানা তিনদিন হাঁটার ধকল আর নিতে পারেননি তিনি। পথেই মৃত্যু হল ওই শ্রমিকের। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের লখনউয়ের কাছে। জানা গিয়েছে ৬০ বছর বয়সী ওই শ্রমিকের নাম বিক্রম। উত্তরপ্রদেশের হরদোই জেলার বাসিন্দা বিক্রম কাজ করতেন মহারাষ্ট্র। লকডাউনের ফলে কাজকর্ম বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপদে পড়েন তিনি। অবশেষে গত বৃহস্পতিবার তাঁরা ঠিক করেন হেঁটেই বাড়ি ফিরবেন। পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার হাঁটা শুরু করার আগে ভালভাবে খেয়েছিলেন তাঁরা। প্রথমে একটি ট্রাকে করে মহারাষ্ট্র থেকে উত্তরপ্রদেশের কনৌজ জেলায় পৌঁছন তাঁরা। লখনউ থেকে কনৌজের দূরত্ব ১২০ কিলোমিটার। বাকিটা পথ হেঁটে আসতে হয় তাঁদের। রবিবার দুপুর ৩টে নাগাদ লখনউ এসে পৌঁছন তাঁরা। তারপর কিছুটা বিশ্রাম নিয়ে হাঁটা শুরু করতেই রাস্তার উপরেই পড়ে যান বিক্রম। পরিবারের লোকেরা সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে একটি স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। এই ঘটনার পরে শৈলেশ কুমার সিং নামের এক সরকারি আধিকারিক জানিয়েছেন, “প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে অনাহারেই মৃত্যু হয়েছে ওই প্রৌঢ়ের। বৃহস্পতিবার যাত্রা শুরু আগে শেষ খেয়েছিলেন তাঁরা। তারপর থেকে বিস্কুট আর জল ছাড়া কিছুই খাবার পাননি। বয়স বেশি হওয়ায় এই ধকল হয়তো সহ্য করতে পারেননি তিনি।”
আরও পড়ুন আউরাইয়ার দুর্ঘটনার পরে বন্ধ করা হল উত্তরপ্রদেশ সীমান্ত, আটকে পড়ে বিক্ষোভ পরিযায়ী শ্রমিকদের
করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে ভারত জুড়ে লকডাউন শুরু হওয়ার পর থেকে এই ছবি গোটা দেশে দেখা গিয়েছে। কাজ হারিয়ে বিপন্ন শ্রমিকরা নিজেদের রাজ্যে ফেরার চেষ্টা করেছেন। কখনও ট্রাকে চেপে, কখনও সাইকেল চালিয়ে, কখনও বা স্রেফ পায়ে হেঁটেই একের পর এক রাজ্য পেরিয়েছেন তাঁরা। তার মাসুলও দিতে হয়েছে। রাস্তাতেই অনেকের মৃত্যু হয়েছে। দুর্ঘটনায় প্রাণ গিয়েছে অনেকের। এরমধ্যেই কেন্দ্রের তরফে অনুমতি দেওয়া হয়েছে বিশেষ ট্রেনের সাহায্যে শ্রমিকদের নিজেদের রাজ্যে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে পারবে রাজ্য সরকারগুলি। ইতিমধ্যেই হাজারের উপর ট্রেনে করে কয়েক লাখ শ্রমিক রাজ্যে ফিরেছেন। কিন্তু তারপরেও এই হেঁটে বাড়ি ফেরার ছবি দেখা যাচ্ছে। আর অনেককেই তার খেসারত দিতে হচ্ছে প্রাণের বিনিময়ে।
