দ্য ওয়াল ব্যুরো: রাজ্যজুড়ে টানা দু’দিনের লকডাউনের প্রথম দিন শুরু হয়েছে বৃহস্পতিবার। গোটা রাজ্যের ছবিটা শুনশান। দোকানপাঠ বন্ধ। রাস্তায় লোক নেই। আর সেদিনই কিনা আলিপুর চিড়িয়াখানায় কাজ করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে দু’জনের মৃত্যু হল। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন আরও একজন। এই ঘটনায় চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অনেক প্রশ্ন উঠছে। কিন্তু মুখে কুলুপ এঁটেছেন তাঁরা।
জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১১টার দিকে ঘটেছে এই ঘটনা। লকডাউন হওয়ায় চিড়িয়াখানা এমনিতেই বন্ধ ছিল। কিন্তু তার ভিতরে নাকি একটি বেসরকারি বিজ্ঞাপন সংস্থার কর্মীরা বোর্ড লাগাচ্ছিলেন। ১৫ থেকে ২০ জন কর্মী কাজ করছিলেন বলে খবর। এই কর্মীদের মধ্যেই কয়েকজন হাতির এনক্লোজারের সামনে বোর্ড লাগানোর জন্য লোহার পোল বসাচ্ছিলেন। সেই সময়েই কোনওভাবে সেখানে ছড়িয়ে থাকা তারে এক কর্মী বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। তাঁকে ছাড়াতে গিয়ে অন্য একজন এবং তাঁদের ছাড়াতে গিয়ে আর একজন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন।
সূত্রের খবর, এই ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গে সেই সংস্থার অন্য কর্মচারী ও চিড়িয়াখানার কর্মীরা ছুটে আসেন। তাঁরা দেখেন ঘটনাস্থলেই দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। তৃতীয় জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁরা স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করেন।
জানা গিয়েছে, এই দুর্ঘটনায় যাঁদের মৃত্যু হয়েছে তাঁদের নাম প্রদীপ দাস ও তারিণী ঘোষ। প্রদীপ চিংড়িহাটার ও তারিণী মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে। ওড়িশার বাসিন্দা লিটন দাস নামের এক কর্মীকে হাসপাতালে ভর্তি করে হয়েছে।
এই ঘটনা ঘটার পরে চিড়িয়াখানার সামনে এসে উপস্থিত হয় ওয়াটগঞ্জ থানার পুলিশ। তারাই পুরো পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে। উপস্থিত হন চিড়িয়াখানার কর্মী সংগঠনের নেতা রাকেশ সিংহ। তাঁর অভিযোগ, “লকডাউনের দিনে একটি সরকারি জায়গায় কী ভাবে একটি বেসরকারি সংস্থা কাজ করছিল? তাদের কাছে কি অনুমতি ছিল? এই কাজের জন্য যে সুরক্ষা নেওয়া উচিত, তা চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ নিয়েছিলেন? এর জবাব কর্তৃপক্ষকে দিতেই হবে।” এই বিষয়ে অবশ্য কর্তৃপক্ষের তরফে কিছু বলা হয়নি। ন্যূনতম একটি বিবৃতি জারি করেও তারা কিছু জানায়নি।
চিড়িয়াখানায় এই দুর্ঘটনার প্রসঙ্গে রাজ্যের বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, “এই ঘটনা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। ইতিমধ্যেই একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কী ভাবে এই দুর্ঘটনা ঘটল তা খতিয়ে দেখবে ওই কমিটি।”