শেষ আপডেট: 14th September 2020 12:58
দ্য ওয়াল ব্যুরো : ভারত-চিন সীমান্তে সংঘর্ষ নিয়ে সম্প্রতি একটি নিবন্ধ প্রকাশ করেছে বিখ্যাত নিউজউইক পত্রিকা। নিবন্ধটি লিখেছেন গর্ডন জি চ্যাং নামে এক আইনজীবী তথা কলামিস্ট। তাঁর মতে, হাজার চেষ্টা করেও লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল থেকে ভারতীয় সেনাকে সরাতে পারেনি চিনের লাল ফৌজ। তা থেকে প্রমাণিত হয়, চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং আর আগের মতো কাউকে ভয় দেখাতে পারেন না। ভারত সীমান্তে কয়েকটি এলাকা দখল করতে চেয়েছিলেন শি। সেজন্য পিপলস লিবারশন আর্মি অনুপ্রবেশের সবরকম চেষ্টা করেছিল। কিন্তু তারা সফল হয়নি। এরপরে শি-এর নিজের ভবিষ্যৎ বিপন্ন হয়ে উঠতে পারে। কারণ তিনিই ভারতে অনুপ্রবেশের ছক সাজিয়েছিলেন। গর্ডনের মতে, শি নিজেই লালফৌজকে আগ্রাসী হতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। তিনি ভাবতেই পারেননি তাঁর সেনাবাহিনী এইভাবে ব্যর্থ হবে। এই ব্যর্থতার প্রভাব পড়বে চিনের রাজনীতিতে। শি সম্ভবত এবার সেনাবাহিনীর নানা উঁচু পদ থেকে তাঁর বিরোধীদের সরিয়ে দেবেন। তাঁদের জায়গায় আনবেন অনুগতদের। নিবন্ধে বলা হয়েছে, একবার ব্যর্থ হয়েই হাল ছাড়ার পাত্র নন শি। তিনি ফের ভারত সীমান্তে অশান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করবেন। শি হলেন চিনের কমিউনিস্ট পার্টির সেন্ট্রাল মিলিটারি কমিশনের চেয়ারম্যান। খুব শীঘ্রই সম্ভবত তিনি ভারতের সেনা ছাউনিগুলির ওপরে ফের হামলা চালাবেন। মে মাসের শুরুতে চিনের বাহিনী লাদাখের দক্ষিণে তিনটি জায়গায় সীমান্ত পেরিয়ে ঢুকে পড়ে। ২০১২ সালে শি তাঁর দলের সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পর থেকেই লালফৌজ ভারতের এলাকা দখল করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। গত জুন মাসে গালওয়ান উপত্যকায় ভারত ও চিনের বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়। খুব পরিকল্পিতভাবে ওই এলাকায় হামলা চালায় চিন। তাতে ২০ জন ভারতীয় সেনার মৃত্যু হয়। গত ৪৫ বছরে এই প্রথম দুই দেশের সেনাবাহিনীর সংঘর্ষ হল। গালওয়ানের সংঘর্ষে ৪৩ জন চিনা সৈনিকেরও মৃত্যু হয়। একটি সূত্রের মতে চিনের তরফে মৃত্যুর সংখ্যা ৬০-এর বেশি হতে পারে। গালওয়ানের ঘটনার পরে চিনের বিরুদ্ধে আক্রমণ চালায় ভারত। চিনারা তাতে চমকে যায়। ভারতের যে এলাকাগুলি চিন দখল করে নিয়েছিল, সেখান থেকে তাদের হটিয়ে দেওয়া হয়। গর্ডন নিউজউইক পত্রিকার নিবন্ধে লিখেছেন, চিনারা নানাভাবে ভারতীয় সৈনিকদের বাধা দিতে চেয়েছিল। কিন্তু তারা ব্যর্থ হয়েছে। ভারত এখন লাদাখের সবচেয়ে দক্ষিণে তিনটি এলাকা দখলে রেখেছে। ওই এলাকাগুলি আগে চিনের দখলে ছিল। নিবন্ধে বলা হয়েছে, "ভারত হানাদারদের নতুন করে শক্তি সঞ্চয়ের সুযোগ দিতে চায় না। ভারতের সেনা যে সাহস দেখাচ্ছে, তা আগে কখনও দেখা যায়নি।" নিবন্ধের শেষে বলা হয়েছে, একসময় মনে করা হত, শি হলেন অপরাজেয়। কিন্তু তিনি সেকথা প্রমাণ করতে পারেননি। তিনি সম্ভবত মান বাঁচাতে ভারতের ওপরে আর একদফা আক্রমণ চালাবেন। চিনের সামরিক দুর্বলতার দিকে অন্যান্য দেশেরও নজর দেওয়া উচিত।