শেষ আপডেট: 19th October 2020 10:19
দ্য ওয়াল ব্যুরো: পুলিশের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনেছে খুনের দায়ে জেলবন্দি এক তরুণী। বছর ২০-র ওই তরুণীর অভিযোগ, লকআপের মধ্যে ১০ দিন ধরে তাকে ধর্ষণ করেছে ৫ পুলিশকর্মী। শুধু তাই নয়, মুখ খুললে পরিণতি ভয়ঙ্কর হবে বলে শাসানিও দিয়েছে ওই পুলিশকর্মীরা। এই অভিযোগ উঠেছে মধ্যপ্রদেশের রেওয়া জেলার মাঙ্গাওয়ান জেল থেকে। গত ১০ অক্টোবর প্রকাশ্যে এসেছে এই ঘটনা। সেদিনই মাঙ্গাওয়ান জেল পরিদর্শনে এসেছিলেন অ্যাডিশনাল ডিসট্রিক্ট জাজ এবং তাঁর দল। তাঁদের সামনেই এই অভিযোগ এনেছেন ওই তরুণী। তরুণীর অভিযোগ, টানা ১০ দিন ধরে লকআপে আটকে রেখে তাকে লাগাতার ধর্ষণ করেছে এক এসডিপিও, থানার ইনচার্জ এবং তিন কনস্টেবল। এক মহিলা কনস্টেবল এই ঘটনার প্রতিবাদ করায় ওপরমহলের তরফে তাঁকেও দমিয়ে দেওয়া হয়েছে। এমন বিস্ফোরক অভিযোগ পাওয়ার পরেই গোটা ঘটনার বিশদে বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। সেই সঙ্গে অভিযুক্ত পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে যথাযোগ্য ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলে রেওয়া জেলার এসপি রাকেশ সিংকে একটি চিঠিও পাঠানো হয়েছে। যদিও এসপি সিং জানিয়েছেন তিনি নাকি আদালতের তরফে কোনও চিঠি পাননি। ওই তরুণীর অভিযোগ, ৯ থেকে ২১ মে-র মধ্যে গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন তিনি। যদিও পুলিশের দাবি, ২১ তারিখই নাকি তরুণীকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। পুলিশ আরও জানিয়েছে, যে খুনের ঘটনায় এই তরুণী অভিযুক্ত, সেই খুন হওয়ার ৫ দিন পর অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এসপি সিংয়ের কথায়, "খুনের অভিযোগে ওই তরুণী ও তার এক পুরুষ সঙ্গীকে গত ২১ মে গ্রেফতার করা হয়। যে গ্রামে খুন হয়েছিল সেখানকার গ্রামবাসীদের সামনেই গ্রেফতার করা হয় এই দু'জনকে। সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে উদ্ধার করা হয় খুনে ব্যবহৃত অস্ত্র। এছাড়া তরুণীর রক্তমাখা জামাকাপড়ও উদ্ধার হয়েছিল। তরুণীর পায়ে চোট ছিল। সম্ভবত খুনের সময় ভিক্টিমের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে চোট লাগে। সেজন্য তার মেডিক্যাল চেকআপও করানো হয়। তরুণীর মোবাইলের লোকেশন ট্র্যাক করে ও অন্যান্য তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে এই দু'জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। সেখানেও দেখা গিয়েছে ১৬ মে পর্যন্ত থানা থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে ছিল তরুণীর মোবাইলের লোকেশন।" কিন্তু এতদিন তাহলে কেন চুপ ছিলেন তরুণী? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছেন মাস তিনেক আগে জেলের ওয়ার্ডেনকে সব জানিয়েছিলেন। ওই ওয়ার্ডেনও বলেছেন, এই তরুণী তাঁকে সব বলেছিলেন ঠিকই কিন্তু তাঁর বিশ্বাস হয়নি। এছাড়াও তরুণী জানিয়েছেন, যাদের বিরুদ্ধে তাঁর অভিযোগ সেই পুলিশকর্মীরা তাঁকে শাসিয়েছিল। হুমকি দিয়ে বলেছিল মুখ খুললে তরুণীর বাবাকেও এই খুনের ঘটনায় ফাঁসিয়ে দেওয়া হবে। অগত্যা একপ্রকার বাধ্য হয়েই চুপ ছিল সে। যদিও এখন সব জানাজানি হতে তরুণীর বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে। গোটা ঘটনার তদন্তও শুরু হয়েছে।