শেষ আপডেট: 7th January 2022 07:32
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বাড়ি না এটা আস্ত নরক গুলজার? এই বাড়ি দেখলে আপনার আস্ত একটা ভ্যাট বলেও মনে হতে পারে। কলকাতা লাগোয়া বরানগর পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বিদ্যায়তন সরণিতে গেলে এই কিম্ভূতকিমাকার বাড়ির দেখা পেয়ে যাবেন। বাড়ির মালকিন নূপুর হাজরা অবসরপ্রাপ্ত এলআইসি কর্মী বলে জানা গিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি দীর্ঘদিন ধরেই মানসিক রোগে ভুগছেন এই অবসরপ্রাপ্ত এলআইসি কর্মী। প্রতিদিন সকাল হলেই তিনি কয়েকটি ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে পড়েন। এলাকার সমস্ত ডাস্টবিন ঘেঁটে ময়লা আবর্জনা তুলে আনেন বাড়িতে। দেখা যায়, সত্যিই বাড়িতে জমা হয়ে আছে ফেলে দেওয়া থার্মোকল, নোংরা জামাকাপড়, প্লাস্টিক, ছেঁড়া ন্যাকড়া, কাঠের টুকরো। প্রতিবেশীরা বারবার বারণ করেও কোনও ফল হয়নি। উল্টে বাড়ির মালকিনের বিরুদ্ধে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজের অভিযোগ উঠেছে। শেষে বাধ্য হয়ে তাঁরা ওয়ার্ড কো-অর্ডিনেটরের দ্বারস্থ হন। তিনি শুক্রবার সকালে পুলিশ নিয়ে এসে দরজার তালা ভেঙে ওই বাড়ির যাবতীয় আবর্জনা পরিষ্কার করেন। উল্টোদিকের বাসিন্দা, প্রতিবেশী গোপাল ঘোষ বলেন, "এই নিয়ে তিনবার পরিষ্কার করানো হল ওঁর বাড়ি। আমরা তিতিবিরক্ত। প্রতিটা হাঁড়িতে জল ভরে রাখেন। এখন ডেঙ্গি, করোনা চলছে। তার মধ্যে এরকম করছেন উনি। আমরা শুনেছি উনি এলআইসি-তে কাজ করতেন। কিছু বললেই আমাদের অকথ্য গালিগালাজ করেন। কথা বললে কেউ বুঝবে না, ওঁর কোনও সমস্যা আছে।" একেই করোনা সংক্রমণ বাড়ছে, তার ওপর ডেঙ্গুর আতঙ্কও আছে বরানগর এলাকায়। এই পরিস্থিতিতে নুপুর হাজরার বাড়ি আস্ত ডাস্টবিনে পরিণত হওয়ায় আতঙ্কে ভুগছিল এলাকার মানুষ। তাই তাদের আর্জি মেনে এগিয়ে আসেন ওয়ার্ড কো-অর্ডিনেটর রামকৃষ্ণ পাল। বরানগর পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কো-অর্ডিনেটর রামকৃষ্ণ পাল এবিষয়ে বলেন, "কিছু না করলে আমরা বাঁচব না। গত কয়েক দিন ধরে আমরা থানা আর স্বাস্থ্য দফতরে যোগাযোগ করে পরিষ্কারের ব্যবস্থা করলাম। উপায় নেই, তাই তালা ভেঙে ঢোকা হল। " আর এক পড়শি গৌরী বিশ্বাসের কথায়, "দীর্ঘদিন ধরে মানসিক সমস্যা ওঁর। সকাল হলেই কয়েকটা ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে চারদিক থেকে নোংরা কুড়িয়ে এনে নিজের বাড়িতে ভর্তি করেন। দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ আমরা। বললেও শোনেন না। এখন করোনা আবহে আমরা রীতিমতো অসুবিধায়। তাই এলাকার সবাই মিলে পুরসভাকে বলে এই ব্যবস্থা করলাম আমরা।" বরানগরের মতো জায়গায় এক সম্ভ্রান্ত পাড়ার একটি বাড়ি আস্ত ডাস্টবিনে পরিণত হওয়ায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। এদিন সকালে পুরসভার উদ্যোগে যখন জঞ্জাল পরিষ্কার করা হচ্ছিল তখন ঘটনাস্থলে বাড়ির মালকিন নূপুর হাজরাকে দেখা যায়নি।