শেষ আপডেট: 10th January 2022 04:43
দ্য ওয়াল ব্যুরো: করোনা টিকার তৃতীয় ডোজ তথা প্রিকশনারি ডোজ দেওয়া শুরু হচ্ছে আজ থেকেই। কেন্দ্রীয় সরকার আগেই বলে দিয়েছে এই প্রিকশনারি ডোজ অর্থাৎ টিকার বুস্টার ডোজের 'মিক্স অ্যান্ড ম্যাচ' করা যাবে না। তবে তৃতীয় ডোজ হিসেবে কোন ভ্যাকসিন বেশি কার্যকরী হবে সে নিয়ে আলোচনা চলছে ইতিমধ্যেই। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর) জানিয়েছে, কোভ্যাক্সিন টিকার তৃতীয় ডোজ বেশ কার্যকরী হবে। বুস্টার হিসেবে দেশের তৈরি এই টিকার কার্যকারিতা পরীক্ষায় প্রমাণিত। আইসিএমআরের আরও দাবি, থার্ড শট কোভ্যাক্সিনের নিলে যে পরিমাণ অ্যান্টিবডি তৈরি হবে তা টিকে থাকবে বহুদিন। ভ্যাকসিনের তৃতীয় ডোজ নেওয়ার উদ্দেশ্য হল শরীরে পর্যাপ্ত অ্যান্টিবডি তৈরি করা। দুটি ডোজ নেওয়ার অন্তত ৬ মাস পরে তৃতীয় ডোজ নিলে শরীরের ইমিউনিটি ফের সচল হয়ে উঠবে। প্রথম দুটি ডোজ নেওয়ার পরে যে পরিমাণ অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছিল শরীরে তা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কমতে থাকবে। ফলে মাস ছয়েক পরে তৃতীয় ডোজ নিলে তা ফের নতুন করে অ্যান্টিবডি তৈরি করবে। ভাইরাসের পুনঃসংক্রমণের সম্ভাবনা কমবে। ডেল্টা ও ওমিক্রন ভ্যারিয়ান্ট দুটি ডোজের পরেও সংক্রমণ ঘটাচ্ছে। করোনার এই দুই অতি সংক্রামক প্রজাতিকে রোখার জন্য তৃতীয় তথা বুস্টার ডোজের কথা ভাবা হয়েছে। https://twitter.com/ICMRDELHI/status/1480088260663984129 আইসিএমআর জানাচ্ছে, কোভ্যাক্সিন ইমিউন কোষ অর্থাৎ শরীরে বি-কোষ ও টি-কোষকে ফের সক্রিয় করে তুলবে। নতুন করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হবে শরীরে। ভারত বায়োটেকের কোভ্যাক্সিন (BBV152) করোনাভাইরাসের নিষ্ক্রিয় স্ট্রেন থেকে তৈরি। বায়োসেফটি লেভেল-৩ ল্যাবোরেটরির সুবিধা থাকায় ভারত বায়োটেকের ভাইরোলজিস্টরা সংক্রামক ভাইরাল স্ট্রেনের বিশেষ অংশ চিহ্নিত করে তাকে আলাদা করে নিয়েছেন। এরপরে সেই সংক্রামক স্ট্রেনকে বিশেষ বিজ্ঞানসম্মত উপায় পিউরিফাই করে তাকে নিষ্ক্রিয় বা ইনঅ্যাকটিভ (Inactive) করেছেন । এই ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা আরও বাড়ানোর জন্য এর সঙ্গে অ্যাডজুভ্যান্ট (ইমিউনোলজিক্যাল এজেন্ট) যোগ করা হয়েছে। এই অ্যাডজুভ্যান্টের কাজ হল টিকার ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলা। সেই কারণে কোভ্যাক্সিনের এমন গুণ আছে যা করোনার নতুন স্ট্রেনের সংক্রমণও রুখতে পারে। আইসিএমআর দাবি করেছে, করোনার ব্রিটেন স্ট্রেন (বি.১.১.৭), ব্রাজিলীয় স্ট্রেন (বি.১.১.২৮), দক্ষিণ আফ্রিকার (বি.১.৩৫১) স্ট্রেনের সংক্রমণ রুখতে পারে কোভ্যাক্সিন। এমনকি কোভিডের অতি সংক্রামক ডেল্টা ভ্যারিয়ান্টের সংক্রমণও ঠেকাতে পারে বলে দাবি করা হয়েছে। পুণের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজি (এনআইভি) ও ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চের (আইসিএমআর)যৌথ গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, করোনার অতি সংক্রামক প্রজাতির মোকাবিলা আগেও করেছে ভারত বায়োটেকের কোভ্যাক্সিন। খুব কম জনের শরীরে হলেও ছোঁয়াচে স্ট্রেন নিষ্ক্রিয় করতে পেরেছে দেশের তৈরি এই টিকা। গবেষকদের আশা, ভাইরাসের বিপজ্জনক ওমিক্রন স্ট্রেনের সংক্রমণও রুখে দেবে দেশের তৈরি এই ভ্যাকসিন। পড়ুন দ্য ওয়ালের সাহিত্য পত্রিকা 'সুখপাঠ'