শেষ আপডেট: 12th September 2024 15:01
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বৃহস্পতিবার বিকেলে জুনিয়র ডাক্তারদের ফের নবান্নে বৈঠকে ডাকলেন মুখ্য সচিব মনোজ পন্থ। এ ব্যাপারে জুনিয়র ডাক্তারদের এদিন দুপুরে চিঠি পাঠিয়েছেন মুখ্যসচিব। তাতে এই প্রথমবার স্পষ্ট করে লেখা হল যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওই বৈঠকে থাকবেন। বিকেল ৫টায় ডেকে পাঠানো হয়েছে আন্দোলনরক জুনিয়র ডাক্তারদের।
ওই চিঠিতে নবান্ন এও স্পষ্ট করে দিয়েছে, যে জুনিয়র ডাক্তাররা সর্বোচ্চ ১৫ জন প্রতিনিধি নিয়ে বৈঠকে যেতে পারেন। তার বেশি নয়। তবে বৈঠকের লাইভ স্ট্রিমিং করা হবে না। স্বচ্ছতা রাখতে গোটা বৈঠক রেকর্ড করে রাখা হবে।
প্রসঙ্গত, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই প্রথমে জুনিয়র ডাক্তারদের আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই প্রথম চিঠিতে কোথাও বলা ছিল না, মুখ্যমন্ত্রীই আলোচনায় বসবেন। শুধু এটুকু বলা ছিল যে নবান্নে সিনিয়র অফিসাররা আলোচনায় বসবেন। সেই কারণে জুনিয়র ডাক্তাররাও তাতে সাড়া দেননি। পরে মঙ্গলবার রাতে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য অবশ্য স্পষ্ট করে বলেন, যে মুখ্যমন্ত্রীই আলোচনায় বসতে চেয়েছেন। এর পরে গতকাল, বুধবার ভোররাতে মেলের উত্তর দেন ডাক্তাররা।
জুনিয়র ডাক্তারদের সেই ইমেলে তাঁরা জানিয়েছিলেন, তাঁদের অন্তত তিরিশ জন প্রতিনিধিকে আলোচনায় ডাকতে হবে। এবং যে আলোচনা হবে তা লাইভ টেলিকাস্ট করতে হবে। যাতে গোটা বাংলার মানুষ তা জানতে পারেন।
এর পর গতকালই দুপুর সাড়ে তিনটে নাগাদ মেল করে সন্ধে ৬টায় তাঁদের নবান্নে ডাকেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। তবে সেই চিঠিতে লেখা ছিল না, যে মুখ্যমন্ত্রী ওই বৈঠকে থাকবেন। তা ছাড়া মনোজ পন্থ জানান, ডাক্তারদের মধ্যে থেকে যেন ১২ থেকে ১৫ জন বৈঠকে যোগ দিতে আসেন। লাইভ স্ট্রিমিংয়ের কথাও লেখা ছিল না তাতে।
এই মেলের উত্তরে বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ আন্দোলনকারীরা স্পষ্ট করে লেখেন, 'প্রস্তাবিত এই মিটিং সম্পর্কে কয়েকটা কথা উল্লেখ করতে চাই।' এর পরে পাঁচটি পয়েন্ট লেখেন তাঁরা। ১. অন্তত ৩০ জন প্রতিনিধি আমরা পাঠাতে চাই বৈঠকে। ২. সব পক্ষের মধ্যে স্বচ্ছতা রক্ষা করার কারণে এই বৈঠকের লাইভ টেলিকাস্ট করতে হবে। ৩. আমাদের যে পাঁচদফা দাবি রয়েছে, তার উপরেই মিটিংয়ের আলোচনা করতে চাই আমরা। ৪. আমরা জোর দিয়ে বলছি, মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীকে এই বৈঠকে উপস্থিত থাকতেই হবে।
জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি দাওয়ার মধ্যে অবশ্যই প্রথম শর্ত হল নির্যাতিতা তথা মৃত চিকিৎসক পড়ুয়ার ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার দ্রুত বিচার করতে হবে। দোষীদের গ্রেফতার করে কঠোর শাস্তি দিতে হবে। তা ছাড়া সন্দীপ ঘোষকে সাসপেন্ড করে তদন্ত করতে হবে। তথ্য লোপাটের জন্য যাঁরা দায়ী তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত করতে হবে এবং শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। এই প্রসঙ্গেই তাঁরা স্বাস্থ্য সচিব, ডিএমই এবং হেল্থ সার্ভিসেসের ডিরেক্টরের ইস্তফা দাবি করেছেন।
তা ছাড়া কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলের ইস্তফার দাবিতেও অনড় জুনিয়র ডাক্তাররা। সেই সঙ্গে কলকাতা পুলিশের ডিসি নর্থ ও ডিসি সেন্ট্রালের বিরুদ্ধেও তাঁরা ব্যবস্থা চান।
এর পরে আজই ফের ডাক্তারদের ডাকল নবান্ন। মুখ্যমন্ত্রী নিজেই কথা বলবেন তাঁদের সঙ্গে। তবে ৩০ জনের উপস্থিতি এবং লাইভ স্ট্রিমিংয়ের শর্তে এখনও রাজি হয়নি নবান্ন। এখন দেখার, এর উত্তরে ডাক্তাররা কী জানান।