শেষ আপডেট: 8th June 2019 08:44
দ্য ওয়াল ব্যুরো: জলপুলিশের আওতায় আছি। এই বাক্যটা বলে অনেকেই মজা করে থাকেন। তবে অদূর ভবিষ্যতে হতেই পারে সত্যিই জলপুলিশের আওতায় আপনাকে থাকতে হল। কারণ জলে যখন ট্যাক্সি চলবে, তখন সেখানের ট্রাফিকও তো সামলাতে হবে তাই না! একেবারেই ইয়ার্কি নয়। এবার দিল্লি থেকে উত্তরপ্রদেশ আপনি যেতেই পারেন ‘ওয়াটার ট্যাক্সি’ তে চেপে। দেশের নৌ পরিবহন মন্ত্রক এবং অভ্যন্তরীণ নৌ পথ কর্তৃপক্ষ এই প্রকল্পের কথা জানিয়েছে। এতে দিল্লি এবং আশপাশের জায়গাগুলোর পর্যটনে জোয়ার আসবে বলেই মনে করছেন এই প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্তরা। এই প্রজেক্টের জন্য যে সব টার্মিনাল এবং ভেসেল তৈরি করা হচ্ছে, সবমিলিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের মোট ২৮ কোটি টাকা খরচ হচ্ছে।
এই প্রকল্পের সাথে যুক্ত এক আধিকারিক একটি ইংরেজি দৈনিককে বলেছেন, “ যতদিন না প্রকল্পটি পুরোদমে শুরু হচ্ছে, ততদিন রাষ্ট্রীয় সেনাদলের থেকে বা কোনও এজেন্সির থেকে মোটরচালিত নৌকো ভাড়া করে নেওয়া হবে। আর এই নৌকোগুলো খুব বেশি হলে ৩০-৪০ মিনিটে গন্তব্যে পৌঁছে দেবে। তবে জেটি থেকে শুরু করে বাকি সব পরিকাঠামো সঠিকভাবে তৈরি হয়ে গেলে আমরা ভেসেলগুলো এই রুটে চালাতে শুরু করব। আর এই ভেসেলগুলো ইলেকট্রিসিটি এবং ডিজ়েল দুভাবেই চালানো যাবে। ”
এই পরিবহনের প্রথম পর্যায়ে, ওয়জিরাবাদ ব্যারেজের শুরুর দিকটায় অর্থাৎ যার মধ্যে সোনিয়া বিহার, জগৎপুর ও ট্রোনিকা সিটি রয়েছে, সেই জায়গাটুকুতে পর্যটনের পরিষেবা দেওয়া হবে। এই ‘জল ট্যাক্সি’ গাজ়িয়াবাদের ট্রোনিকা সিটি থেকে দিল্লির ওয়াজিরাবাদ পর্যন্ত এলাকাটি, অর্থাৎ সোনিয়া বিহার থেকে ১৬ কিলোমিটার পর্যন্ত প্রসারিত এলাকা প্রায় ৪৫ মিনিটের মধ্যে ঘুরিয়ে দেখাবে।
আইডব্লিউএআই অর্থাৎ ভারতের অভ্যন্তরীণ নৌপথ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান প্রবীর পান্ডে আরও বলেন, "জাতীয় গ্রিন ট্রাইব্যুনালের প্রিন্সিপাল কমিটি প্রকল্পটিতে কোনও আপত্তি জানায়নি। উত্তরপ্রদেশ ও দিল্লির সরকারের সাথে জমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত আলোচনা চলছে। এতে কয়েক মাস সময় লাগবে। আর তারপরেই আমরা ভেসেলগুলোর ট্রায়াল রান শুরু করে দেব। ”
শেষ কিছু বছর ধরেই দিল্লিবাসীরা যানজটে ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন, যে কোনও জায়গায় যেতে গেলে অসম্ভব বেশি সময় লাগছে, তাই এই ব্যবস্থার মাধ্যমে রাস্তায় যানজটের সমস্যা কমবে, এবং কম সময়ে বেশি দূরত্বে পৌঁছে যাওয়া যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, এই প্রক্ল্পের দায়িত্বে যাঁরা আছেন, তাঁরা সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলি থেকে অনুমোদনের জন্যও কাজ করছেন এবং সরকার এই পরিকল্পনা সম্পর্কে যথেষ্ট আশাবাদী। এমনকি এই প্রকল্পের জন্য যমুনার নব্যতাও গুরুত্বপূর্ণ। তাই দায়িত্বপ্রাপ্তরা ইতিমধ্যেই রাজ্যের কাছ থেকে নদীতে আরও জল সরবরাহের বিষয়ে আলোচনাও করে ফেলেছেন। আর তাতে সদুত্তরও পেয়েছেন তাঁরা। কোনওভাবেই যাতে নদীর কম জল এই প্রজেক্টের সমস্যার কারণ না হয়, সেদিকেও নজর রাখা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রকল্পটি মানুষের জন্য ভালোই হবে। তবে, দুটি প্রধান উদ্বেগের জায়গা থাকবে – ১. নদীতে জীববৈচিত্র্যে সমস্যা ও দূষণ থেকে ক্ষতি। যমুনা ইতিমধ্যে দূষিত হয়েছে এবং আমরা আশা করি যে এটি আরও খারাপ হবে না। ২. প্রবাহের সময় নদীতে ডাম্পিং বর্জ্য যাতে মানুষ না ফেলেন, সে দিকে নজর রাখাটা ভীষণভাবে জরুরি। প্রয়োজনে তাতে কঠোর নিয়ম এবং শাস্তির ব্যবস্থা রাখতে হবে।