শেষ আপডেট: 17th June 2020 04:28
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ভারতে রাতারাতি করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে গেল ২০০৩। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তরফে ১৭ জুন, বুধবার, সকাল ৮ টার যে বুলেটিন দেওয়া হয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে দেশে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ১১,৯০৩ জনের। গতকালের বুলেটিনে তা ছিল ৯৯০০। অর্থাৎ মাত্র ২৪ ঘণ্টায় মৃতের সংখ্যা ২০০০- এর বেশি বেড়ে গিয়েছে বলে দেখাচ্ছে স্বাস্থ্যমন্ত্রক। এর কারণ কী? তা হলে কি মঙ্গলবার ভারতে কোভিডে রেকর্ড মৃত্যু হয়েছে? স্বাস্থ্যমন্ত্রক সূত্র জানাচ্ছে, না তা নয়। দিল্লি ও মহারাষ্ট্রে প্রকৃতপক্ষে কতজনের কোভিডে মৃত্যু হয়েছে সেই সংখ্যার হিসাবে ভ্রান্তি ছিল। দুই রাজ্যই তা শুধরেছে। মঙ্গলবার মহারাষ্ট্র সরকার জানিয়েছে, রাজ্যে আরও ১৪০৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে মঙ্গলবার মারা গিয়েছেন ৮১ জন। সেই সঙ্গে গত কয়েক দিনে ১৩২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে কোভিডে। কিন্তু সেই সব মৃত্যু সরকারি ভাবে রিপোর্ট হয়নি। একই ভাবে দিল্লিতেও হিসাবে গলদ ছিল। এমনিতেই দিল্লিতে কোভিডে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যার গরমিল নিয়ে কেজরিওয়াল সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠছেই। মঙ্গলবারের বুলেটিনে দেখানো হয়েছিল দিল্লিতে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ১৪০০ জনের। বুধবার তা দেখানো হয়েছে ১৮৩৭। অর্থাৎ এক ধাক্কায় মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে ৪৩৭। এই দুই রাজ্যের হিসাব মেলাতে গিয়েই দেশে কোভিডে মৃতের সংখ্যা এক লাফে বেড়ে গিয়েছে অনেকটাই। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ১০৯৭৪ জন। অর্থাৎ একদিনে আক্রান্তের সংখ্যা ফের ১১ হাজারের নীচে নেমেছে। এখনও পর্যন্ত দেশে আক্রান্তের সংখ্যা সাড়ে তিন লাখ ছাড়িয়ে গিয়েছে। বুধবার সকালের বুলেটিন অনুযায়ী আক্রান্তের সংখ্যা ৩,৫৪,০৬৫। অর্থাৎ এই মুহূর্তে ভারতে করোনায় মৃত্যু হার ৩.৩৬ শতাংশ। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, ভারতে প্রকৃতপক্ষে কোভিডে মৃত্যুর হার এর থেকেও কম। কারণ, এখানে টেস্টের সংখ্যা উন্নত দেশগুলির তুলনায় কম। ফলে অনেকেই রয়েছেন যাঁদের দেহে কোভিডের সংক্রমণ রয়েছে কিন্তু টেস্ট হয়নি। সেই সংখ্যা কম নয়। তা হিসাবের মধ্যে ধরলে হয়তো দেখা যাবে মৃত্যুর হার কমবেশি ১ শতাংশ। ভারতে গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৬৯২২ জন। অর্থাৎ এই মুহূর্তে মোট সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১,৮৬,৯৩৫ জন। এই সুস্থতার হার ৫২.৮০ শতাংশ। অর্থাৎ এই মুহূর্তে দেশে কোভিড অ্যাকটিভ রোগীর সংখ্যা ১,৫৫,২২৭ জন। দেশে আক্রান্ত ও মৃতের তালিকায় শীর্ষে মহারাষ্ট্র। এই রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ১,১৩,৪৪৫। মৃত্যু হয়েছে ৫৫৩৭ জনের। অর্থাৎ ভারতের করোনা আক্রান্তের এক তৃতীয়াংশ ও মৃত্যুর প্রায় অর্ধেক এই রাজ্যেই হয়েছে। এরপরেই রয়েছে তামিলনাড়ু। দক্ষিণের এই রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৮,০১৯। মৃত্যু হয়েছে ৫২৮ জনের। রাজধানী দিল্লিতে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৪৪,৬৮৮। মহারাষ্ট্রের মতো এখানেও মৃতের সংখ্যায় গোলমাল ছিল। ফলে বুধবার মৃতের সংখ্যা এক ধাক্কায় বেড়ে হয়েছে ১৮৩৭। গুজরাতে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৪,৫৭৭। পশ্চিমের এই রাজ্যে করোনা আক্রান্ত হয়ে ১৫৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, দিল্লি ও গুজরাত এই চার রাজ্যে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২,৩০,৭২৯ যা ভারতের মোট আক্রান্তের ৬৫.১৭ শতাংশ। অন্যদিকে এই চার রাজ্যে মোট মৃত্যু হয়েছে ৯৪৩৫, যা ভারতে মোট করোনায় মৃত্যুর ৭৯.২৭ শতাংশ।