শেষ আপডেট: 13th September 2024 18:15
দ্য ওয়াল ব্য়ুরো, মুর্শিদাবাদ: এতদিন তিনি সুস্থ সমাজ গড়ে তোলা কারিগর ছিলেন। ভাবি প্রজন্মকে শিক্ষিত করে তোলাই ছিল তাঁর কাজ। কিন্তু আরজি কর কাণ্ডের পরে সেই ভিত কোথায় যেন নড়ে গেছে। তাই এবার সরকারি থেকে শিক্ষারত্ন সম্মান ফেরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মুর্শিদাবাদের এক প্রাক্তন শিক্ষক গোলাম বক্স মোস্তাফা।
শুক্রবার আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদ জানিয়ে সাংবাদিক ডেকে নিজের সিদ্ধান্তের কথা জানালেন তিনি। বহরমপুরের ধপঘাটি এলাকায় ছিল সেই বৈঠক। এর আগেও একই ইস্যুতে বেশ কয়েকজন শিক্ষক রাজ্য সরকারের শিক্ষারত্ন পুরস্কার ফিরিয়ে দিয়েছেন। এবার একইপথে হাঁটলেন হরিহরপাড়া হাজি আলাম বক্স সিনিয়র মাদ্রাসার এই প্রাক্তন শিক্ষক। তিনি বলেন, "এই সম্মান ফিরিয়ে মন থেকে ভারমুক্ত হতে চাই।"
গোলাম সাহেব জানিয়েছেন, ২০২০ সালে তিনি ওই স্কুল থেকে অবসর নিয়েছে। তিনি স্কুলে থাকাকালীন মাদ্রাসার পরিবেশে অনেক পরিবর্তন এসেছিল। এক সময়ে পড়ুয়াদের সুস্থ পরিবেশ দিতে তিনি নিজের হাতে শৌচালয় পর্যন্ত পরিষ্কার করেছেন। তাছাড়া বাল্যবিবাহ নিয়ে স্কুল পড়ুয়াদের মধ্যে সচেতন অভিযান চালিয়েছে। রাজনৈতিকভাবে তিনি ভিন্ন মত পোষণ করলেও তাঁর আচরণে সন্তুষ্ট হয়ে শিক্ষারত্ন পুরস্কার দিয়েছিল এই সরকারি। কিন্তু আরজি কর কাণ্ডের ঘটনার পর সরকারের ভূমিকায় তিনি অসন্তুষ্ট।
গোলাম বক্স মোস্তাফার কথায়, "আরজি কর হাসপাতালে যে পৈশাচিক ঘটনা ঘটেছে তাতে আমি খুব চিন্তিত। এখন প্রতিবাদ না করলে এসব রুখে দেওয়া যাবে না। ভাবি প্রজন্মকে আমরা সুস্থ, স্বাভাবিক সমাজ দিতে পারব না। আমি ভিন রাজনৈতিক মতাদর্শের হলেও ২০১৬ সালে আগে এই সরকারের অনেক উন্নয়ণমূলক কাজে আমি সহমত ছিলাম। কিন্তু এই ঘটনা আমাকে নাড়িয়ে দিয়েছে। তাই পুরস্কার ফেরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এভাবে মনের ভার মুক্ত হতে চাই।"
২০১৬ সালের শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠানে কলকাতার নজরুল মঞ্চে তাঁকে এই সম্মান দেওয়া হয়েছিল। পাশাপাশি ২৫ হাজার টাকা পুরস্কার বাবদ দেওয়া হয় তাঁকে। প্রাক্তন ওই শিক্ষক জানিয়েছেন, তিনি ইতিমধ্যে ডিআই, ডিএমএর কাছে বিষয়টি জানিয়েছেন। পুরস্কারের ২৫ হাজার টাকাও তিনি ব্যক্তিগত ভাবে ফেরত দেবেন।