দেবী কাত্যায়নী
শেষ আপডেট: 13th September 2024 14:23
দ্য ওয়াল ব্যুরো, নদিয়া: শান্তিপুরের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে রাস উৎসব। তবে এ শহরের সঙ্গে প্রাচীন দুর্গাপুজোর ইতিহাসও জড়িয়ে আছে। বড় গোস্বামী বাড়ির দুর্গাপুজো সেগুলি মধ্যে অন্যতম। এই পুজোর অন্যতম আকর্ষণ পুজোর সব আচার-অনুষ্ঠান পালন করেন বাড়ির দীক্ষিত মহিলারা। পুজোর চারদিনে ৩৬ রকমের ভোগ দিয়ে পুজো দেওয়া হয় এখানে।
অনেকে বলেন, অদ্বৈত আচার্যের সময় থেকেই এই পুজোর প্রচলন হয়েছিল। সেইমতো পুজোর বয়স চারশ পেরিয়েছে। দেবী এখানে পুজিতা হন কাত্যায়নী নামে। গোস্বামীরা শান্তির উপাসক। তাই দেবীর হাতে কোনও অস্ত্র থাকে না। দশ হাতের মধ্যে আট হাত ছোট এবং দুটি হাত বড়। প্রতিটি হাত কিছু না কিছুর প্রতীক। বড় হাত দুটি দিয়েই সংহারের কথা বোঝানো হয়েছে। লক্ষ্মী গণেশ কার্তিক সরস্বতীর ছবি থাকে। দেবীর বাহন সিংহ হলেও তা শ্বেতবর্ণ।
গোস্বামী বাড়ির বংশধরের জানিয়েছেন, পুঁথিগত নিয়ম মেনে এই পুজো শুরু হয়নি। তবে পুজোর সব আচার-অনুষ্ঠান পালন করেন বাড়ির দীক্ষিত মহিলারা। পুজোর চারদিনে ৩৬ রকমের ভোগ দিয়ে পুজো দেওয়া হয় এখানে।
বড় গোস্বামীর বাড়ি ইতিহাস ঘাঁটলে জানা যায়, পরিবারের ইষ্ট দেবতা রাধারমণ। সেই রাধারমণের মূর্তিই কয়েক শতাব্দী আগে চুরি হয়ে গেছিল। পরিবারের সকলেই চিন্তিত হয়ে পড়েছিলেন। অনেক খোঁজাখুঁজির পরেও সেই মূর্তি পাওয়া যায়নি। অবশেষে বাড়ির মহিলারা দেবী কাত্যায়নীর ব্রত শুরু করেন। এই ব্রত চলার তিনদিনের মধ্যে বাড়ি এখন বয়জেষ্ঠ মহিলাকে স্বপ্নাদেশ দেন দেবী। এই ঘটনার পরেই শান্তিপুরের খানিকটা দূরে এক জায়গা থেকে ইষ্টদেবতার মূর্তি খুঁজে পান গোস্বামীরা।
পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, শাস্ত্র মতে, চুরি যাওয়া কোনও জিনিস উদ্ধার করতে গেলে কাত্যায়নীর ব্রত করতে হয়। সেই বিশ্বাস থেকে তখন ব্রত পালন করা হয়েছিল। বাড়ির মহিলারা ব্রত শুরু করতেই খোয়া যাওয়া কৃষ্ণমূর্তি পাওয়া যায়। এরপর থেকে বাড়িতে শুরু হয় কাত্যায়নী দুর্গাপুজো।