শেষ আপডেট: 23rd October 2024 14:41
দ্য ওয়াল ব্যুরো: টোটো ছিনতাই করতে গিয়ে এক ব্যক্তিকে গলা কেটে খুন করল দুষ্কৃতীরা। বহরমপুরের খাগড়া এলাকার মোল্লাপাড়ার ঘটনা। মৃত্যু হয়েছে কেয়াসিস শেখ (৪৭) নামে ওই টোটো চালকের। তিনি প্রতিবন্ধী ছিলেন বলে জানিয়েছে পরিবার
শারীরিক ভাবে আর পাঁচটা মানুষের মতো নয়। কিন্তু দিন আনতে পান্তা ফুরোয়, তাই সংসার চালাতে ও সন্তানদের মুখে খাবার তুলতে রাতে টোটো নিয়ে বেরোতেন কেয়াসিস। প্রতিদিনের মতো মঙ্গলবারও রাতে বেরোন। যাত্রী সেজে কয়েকজন দুষ্কৃতী তাঁর টোটোয় ওঠে। মোল্লাপাড়ার কাছে টোটো পৌঁছতেই টোটো নিয়ে পালানোর চেষ্টা করে তারা। কেয়াসিস বাধা দিলে ছুরি দিয়ে গলা কেটে দেওয়া হয়। টোটো নিয়ে এরপর এলাকা ছাড়ে দুষ্কৃতীরা।
গলা কাটা অবস্থাতেই কেয়াসিস ফোন করে বিষয়টি বন্ধুদের জানান এবং তাঁকে উদ্ধার করার জন্য বলেন। কেয়াসিসের বন্ধুরা এসে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগেই মৃত্যু হয়। অন্যদিকে টোটো নিয়ে চম্পট দেওয়ার সময় একটি গাড়িকে ধাক্কা মারে দুষ্কৃতীরা। টোটো দেখে চিনে ফেলে বাকি চালকরা। কেয়াসিসের খোঁজ করতে টোটো রেখে এলাকা ছাড়ে তারা। পরে থানায় খবর দেওয়া হয়। পুলিশ এসে টোটোটিকে থানায় নিয়ে গেছে।
এর আগেও একবার কেয়াসিসের টোটোটি ছিনতাই হয়েছিল। সেই সময় কেয়াসিসের ওপর আক্রমণ করা হয়নি। তাঁর স্ত্রী জানান, ৪ বছর আগে টোটোটি ছিনতাই করা হয়। কিন্তু ফেরত আনা হয়েছিল কোনওরকমে। সেই থেকে টোটোর উপর নজর দুষ্কৃতীদের। এবার মেরেই ফেলল। বলতে বলতে কেঁদে ফেললেন তিনি।
কেন কেয়াসিসের সঙ্গে এমন হল? তাঁর দিদির কথায়, 'ও শারীরিক ভাবে অন্যদের থেকে দুর্বল। প্রতিবন্ধকতা আছে। তাই ওর ওপর আক্রমণ করেছে। আগে যারা টোটো ছিনতাই করেছিল তারাই হয়তো এবার মেরে ফেলল, গাড়িটা নিয়ে নেবে বলে। আমরা লড়তে পারিনি আগেও। বাবা-মা গরিব, লোকজনও নেই পরিবাবে তেমন। তাই লড়াইটা কঠিন।'
বহরমপুরের মতো জনবহুল এলাকায় এমন খুনের পর পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন স্থানীয়রা। মানুষের নিরাপত্তাও প্রশ্নের মুখে। এনিয়ে কেয়াসিসের দিদি আরও বলেন, 'এত লোকের মাঝে এমন ঘটনা কী করে হল সেটার তদন্ত পুলিশ করুক। এমন ঘটনা হলে তো কেউ রোজগার করে খেতেই পারবে না।'
ঘটনায় তদন্ত করছে পুলিশ। খতিয়ে দেখা হচ্ছে গোটা বিষয়। স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদ করা চলছে। ঠিক কতজন দুষ্কৃতী ঘটনায় জড়িত রয়েছে, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।