শেষ আপডেট: 28th January 2025 17:45
কাজল বসাক, নদিয়া
ধুলো থেকে বাঁচতে হবুচন্দ্র রাজা দায়িত্ব দিয়েছিলেন গবুচন্দ্র মন্ত্রীকে। কিন্তু ভেবে ভেবে কোনও কুলকিনারা করতে পারেননি মন্ত্রী। তারপর চর্মকারদের কুলপতি বৃদ্ধ জুতো আবিষ্কার করে কীভাবে সমস্যার সমাধান করেছিলেন তাতো সবারই জানা। কিন্তু সেই জুতোকেই এবার মেয়েদের হাতিয়ার করে তুলে নজর কাড়ল নদিয়ার দুই স্কুল ছাত্র। এই জুতো পরে রাস্তায় বের হলে নিজেদের নিরাপত্তার চাবিকাঠিটা মেয়েদের হাতেই থাকবে বলে দাবি শান্তিপুরের সূত্রগড় মহারাজা অফ নদিয়া হাই স্কুলের দশম শ্রেণির দুই ছাত্র ঋত্বিক সাহা ও ইন্দ্রাশিস হালদারের।
ঋত্বিক জানায়, তাদের তৈরি জুতোর মধ্যেই থাকছে একটি চিপ। এই চিপ দিয়ে যেমন জিপিএস ট্র্যাকিং করে কারও অবস্থান জানা যাবে, তেমনই বিপদে পড়লে পাঠানো যাবে জরুরি এসএমএস। তাছাড়াও এই জুতো পায়ে থাকলে আত্মরক্ষার জন্য বৈদুত্যিক শক দেওয়া যাবে হামলাকারীকে। ইন্দ্রাশিস জানায়, দিল্লির নির্ভয়া কাণ্ড হোক বা আরজিকরের ঘটনা, বারবার নারীদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তাই বিজ্ঞান মেলার জন্য মডেল বানানোর সময় তারা চিন্তা করে এমন একটা জুতো যদি আবিষ্কার করা যেন, যেটা পায়ে গলালে মহিলারা অনেকটা নিরাপদ থাকতে পারত তাহলে তা সত্যিই সমাজের কাজে আসত। সেটা ভেবেই এই মডেল জুতোটি তৈরি করে ফেলে তারা।
ছাত্রদের এমন ভাবনায় খুশি স্কুল কর্তৃপক্ষও। স্কুলের প্রধান শিক্ষক পলাশ সাধুখাঁ বলেন, "আমরা ছাত্রদের বলেছিলাম এমন কিছু মডেল কর যা বাস্তবে মানুষের কাজে আসবে। ওরা সেই কথার মান রেখেছে। এই জুতো পায়ে থাকলে কোনও মহিলা যদি বিপদে পড়েন তবে সঙ্গে সঙ্গে তাঁর কাছের জনকে সেই বার্তা পৌঁছে দিতে পারবেন। জিপিএস ট্র্যাকার থাকায় বিপদে পড়া মহিলার অবস্থান সম্পর্কেও সঙ্গে সঙ্গে জানতে পারা যাবে।"
স্কুলের বিজ্ঞান শিক্ষক অমরেন্দ্রপ্রসাদ ইন্দ্র জানান, জুতোটি তৈরি করতে প্রায় তিন হাজার টাকা খরচ হয়েছে ওই ছাত্রদের। এখনও এই আবিষ্কারটিকে আরও উন্নত করার কাজ চালাচ্ছে তারা। গোটা বিষয়টি জানার পর ওই শিক্ষক ও পড়ুয়াদের সাধুবাদ জানিয়েছেন শান্তিপুরের বিডিও সন্দীপ ঘোষ। তিনি বলেন, "ক্লাস টেনের দুই ছাত্র যে এভাবে ভাবতে পেরেছে তারজন্যই তাদের বাহবা দিতে হয়। স্কুলের শিক্ষকদেরও ধন্যবাদ দেব ছাত্রদের এভাবে চালনা করার জন্য।"মেয়েদের পায়ে পায়ে কী করে এই জুতো তুলে দেওয়া যায়, আপাতত সেই ভাবনাতেই বুঁদ হয়ে আছে ঋত্বিক ও ইন্দ্রাশিস।