শেষ আপডেট: 24th September 2024 16:07
দ্য ওয়াল ব্য়ুরো, মুর্শিদাবাদ: ধর্মীয় অনুষ্ঠানে গন্ডগোল। এতে অশান্তি ছড়িয়েছিল এলাকায়। দোষীদের গ্রেফতারি চেয়ে রাস্তা অবরোধ চলছিল। অবরোধে আটকে শ্বাসকষ্টে ছটফট করতে করতে মারা গেল ক্লাস সিক্সের ছাত্র। সোমবার রাতে মর্মান্তিক এই ঘটনা শোরগোল ফেলে দিয়েছে জঙ্গিপুরে। প্রশ্ন উঠেছে পুলিশ ও পুরসভা চেয়ারম্যানের ভূমিকা নিয়ে।
মৃতের পরিবারের অভিযোগ, পুরসভার চেয়ারম্যান ও পুলিশ বাহিনী সেখানে উপস্থিত ছিল। তাঁদের কাছে সাহায্য চেয়েও কোনও সহযোগিতা মেলেনি। হাসপাতালে নিয়ে যেতে দেরি হওয়ায় অকালে চলে যেতে হল এক কিশোরকে। এই মৃত্যুর দায় কারা নেবেন, সেই প্রশ্নই তুলেছেন কিশোরের আত্মীয়রা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত কিশোরের নাম সায়ন হালদার। ১২ বছরের সায়নের বাড়ি লালগোলার কালমেঘা এলাকায়। সোমবার সকাল থেকে পেটে ব্যাথা ও শ্বাসকষ্ট হয়েছিল সায়নের। বাড়ি লোকজন স্থানীয় একটি নার্সিংহোমে নিয়ে গিয়েছিলেন। সেখানে চিকিৎসায় শুরুর পরে সুস্থ হয়ে ওঠে সায়ন। তাই আত্মীয়রা তাকে বাড়ি ফিরিয়ে আনেন। সন্ধের দিকে ফের শ্বাসকষ্ট শুরু হয় সায়নের। ছাত্রের মামার পরামর্শে তাকে টোটোয় করে জঙ্গিপুর হাসপাতালে নিয়ে আসা হচ্ছিল। ছাত্রের মা তার সঙ্গেই ছিলেন।
রঘুনাথগঞ্জের ভাগীরথী ব্রিজ টপকাতে গিয়েই ঘটে বিপত্তি। তখন ব্রিজের উপরে বিক্ষোভ অবরোধ চলছিল। বিশাল পুলিশবাহিনীর মোতায়েন ছিল। অবরোধের মধ্যেই দলবল নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন জঙ্গিপুর পুরসভার চেয়ারম্যান মফিজুল ইসলাম। ফলে অবরুদ্ধ হয়ে গিয়েছিল ওই রাস্তা। টোটো বসে শ্বাসকষ্ট ছটফট করতে থাকে সায়ন। ভাগ্নেকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য কিশোরের মামা পুলিশ ও চেয়ারম্যানের কাছে কাকুতি-মিনতি করলেও কোনও লাভ হয়নি বলে অভিযোগ। অবশেষে শ্বাসকষ্টের মধ্যে সায়নকে হাঁটিয়ে কিছুটা পথ নিয়ে আসতে বাধ্য হন পরিবারের সদস্যরা। এরপরে স্কুটি করে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও শেষ রক্ষা হয়নি। কর্তব্যরত চিকিৎসক কিশোরকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
মৃতের মামা বলেন, "হাসপাতালে নিয়ে আসার পরে ডাক্তারবাবুরা জানান, অনেক দেরি হয়ে গেছে, দু'মিনিট আগে এলে ভাগ্নেকে বাঁচানো যেত। পুলিশ তো মানুষের সাহায্য করে। পুরসভার চেয়ারম্যানও ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। রাস্তা ছেড়ে দেওয়ার জন্য সাহায্য চাইলেও কেউ এগিয়ে আসেননি। এই ঘটনার দায়ে তাহলে কার?" যদিও জঙ্গিপুর পুরসভার চেয়ারম্যান মজিফুল ইসলাম দাবি, তিনি মাইকিং অবরোধ তুলে নেওয়ার অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু অবরোধ ওঠেনি। তাই তিনিই নাকি মোটর সাইকেলে করে ওই ছাত্রকে হাসপাতালে পাঠিয়েছিলেন।