শেষ আপডেট: 16th March 2025 17:32
দ্য ওয়াল ব্যুরো: শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে বৃহস্পতিবার মুর্শিদাবাদের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীরকে ফের শো-কজ করেছে বিধানসভার পরিষদীয় কমিটি। 'খারাপ' সময়ে হুমায়ুনের পাশে থেকে তৃণমূলকে আক্রমণ করতে মাঠে নামেন প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরি। কিন্তু হুমায়ুনের পাশে থাকা তার ক্ষেত্রে ব্যুমেরাং হয়ে ওঠে। হুমায়ুন অধীরের হঠাৎ সখ্য হতে চাওয়া মোটেও ভালভাবে নিলেন না। স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা, বিজেপি নেতারা যখন আমাকে আক্রমণ করেছিলেন, অপমান করেছিলেন, তখন কোথায় ছিলেন অধীর?
হুমায়ুন কবীর মানেই বিতর্ক। বার বার বিভিন্ন মন্তব্য করে চর্চার কেন্দ্রে থাকেন তিনি। সম্প্রতি সেই নিয়ে দল তাঁকে সতর্ক করে। পরে শো-কজ করা হয়। এই নিয়ে অধীরের দাবি ছিল, সামনে নির্বাচন, হিন্দু ভোটে রাশ টানতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হুমায়ুনকে বন্দুকের নলে রাখছেন। কিন্তু এই দাবি মোটেও মেনে নিতে চাননি তৃণমূল নেতা।
তাঁর পাল্টা বক্তব্য, 'অধীরবাবুকে আমি আশ্বস্ত করছি হুমায়ুন কবীরকে শোকজ করেছে বিধানসভার শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি। শোকজ নিয়ে আমি বিচলিত নই। সেটা রাজনীতির অঙ্গ। রাজনীতির ময়দানে টিকে থাকতে গেলে আপনার জীবনে অনেক উত্থান-পতন হবে। আমি অনেক জায়গায় সমালোচিত হতে হয়েছে এবং কেস খেতে হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেস আমাকে শোকজ করেছে, কী কারণে শোকজ করা হয়েছে তা লিখিত ভাবে দিয়েছে, আমিও যথাযথ উত্তর পাঠিয়ে দিয়েছি। এখনও কী কারণে করেছে, তা জানা যায়নি। গেল গেল রব তোলার কী দরকার।'
সম্প্রতি ভাঙড়ের দাপুটে নেতা আরাবুল ইসলাম ও বর্ষীয়ান শান্তনু সেনকে বহিষ্কার করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। তা উল্লেখ করে অধীর চৌধুরির উদ্দেশে হুমায়ুনের বক্তব্য, কিছুদিন আগে দু'জন বহিষ্কার হয়েছেন, এক শান্তনু সেন, দুই আরাবুল ইসলাম। সেখানে দাঁড়িয়ে ওঁর এই ইস্যু ধোপে টেকে না।
এরপরই মুর্শিদাবাদের দোর্দন্ডপ্রতাপ এই নেতা চলে যান শুভেন্দু অধিকারী প্রসঙ্গে। তিনি বিজেপি নেতাকে হুঁশিয়ারি দেন যেন মুসলিম কমিউনিটি নিয়ে কিছু না বলেন। আর পূর্বে যে মন্তব্য করেছেন, তা যেন তুলে নেন। বলেন, 'শুভেন্দু অধিকারী তাবড় নেতা, ও থাক নেতা। কিন্তু আমাকে চ্যাংদোলা করলে আমি ছেড়ে দেব? আমি বিধানসভায় রোজ যাচ্ছি আসছি, যদি ক্ষমতা থাকে তাহলে হুমায়ুনকে চ্যাংদোলা করে দেখাও।'
মুর্শিদাবাদে শুভেন্দুর সভা নিয়ে হুংকারের জবাব দিয়ে তৃণমূল নেতার দাবি, 'আমাকে একটু জানিয়ে দেবেন, রেজিনগরের ওপর দিয়ে কবে ও কখন শুভেন্দু যাবেন, আর মহামান্য বিজেপির জেলা সভাপতি ওঁকে রিসিভ করতে যাবেন। আমি বলছি, শুভেন্দু অধিকারীর গাড়ির মুভমেন্ট করতে দেব না। আর একে (জেলা বিজেপি সভাপতি) পাটের দড়ি দিয়ে বেঁধে গাড়ির পিছনে আটকে টেনে নদিয়াতে দিয়ে আসব। রানাঘাটে দিয়ে আসব, ওখানে বিজেপি বেশি আছে। এখানে ১০% ভোট নেই আর বড় বড় কথা বলবে বিজেপি, মানব না। আমরা ৪৪-৫৫% ভোট। আমি নিজে গাড়ি চালিয়ে দিয়ে আসব।'
সবেশেষে বিজেপি নেতা কৌস্তভ বাগচীকে চাঁচাছোলা আক্রমণ করেন তৃণমূল নেতা। সরাসরি পাকিস্তানে পাঠিয়ে দেওয়া প্রসঙ্গ তোলেন। জানিয়ে দেন তিনি শক্তপোক্ত মুসলিম, পাকিস্তানে পাঠিয়ে দেওয়া ওত সহজ নয়। আষ্পর্ধা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। সাফ বলেন, 'ভারতবর্ষের মাটিটা কি কৌস্তভ বাগচীর বাবার সম্পত্তি? ওরও যতটুকু অধিকার আছে, হুমায়ুন কবীরের চোদ্দ পুরুষ এখানে বসবাস করছে। কৌস্তভ বাগচীর এত আষ্পর্ধা কোথা থেকে হয়? ও আমাকে পাকিস্তান পাঠিয়ে দেবে, আমি ওকে আস্ত রাখব?'