শেষ আপডেট: 30th May 2022 12:51
দ্য ওয়াল ব্যুরো: 'আমার মা সবচেয়ে সুন্দর, আমার পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ',--গলায় ফাঁস লাগানোর আগে নিজের খাতার শেষ পাতায় এ ভাবেই কয়েক লাইন লিখে রেখেছিলেন সরস্বতী দাস (Model Death)! শনিবার মধ্যরাতে কসবা (Kolkata) এলাকার বেদিয়াডাঙা মসজিদ বাড়ি লেনের বহুতলে আত্মঘাতী হন বছর উনিশের সরস্বতী। হাসি-খুশি মেয়ে এভাবে চলে যাবে, তা এখনও মেনে নিতে পারছেন না মা, মাসি, দিদারা।
শনিবার রাতে কসবার বাড়ি থেকে ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় সরস্বতী নামে এক উঠতি মডেলের। কেন এমন ঘটাল মেয়ে তা নিয়ে কোনও সদুত্তর দিতে পারছেন না পরিবারের কেউই। মামার বাড়িতে বড় হওয়া সরস্বতী ছোট থেকেই ডানপিঠে, হাসি খুশি, প্রাণোচ্ছ্বল। স্থানীয় সূত্রের দাবি, সম্ভবত কোনও এক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিল সরস্বতী। হতে পারে সেটাই অবসাদের কারণ।
পরিবারের কথায়, ঘটনার আগের মুহূর্ত পর্যন্ত বোঝা যায়নি মেয়ে ভিতরে ভিতরে এতটা ভেঙে পড়েছে। তাঁর মাসি ভারতী মল্লিক জানান, "আমি ও দিদি (সরস্বতীর মা) আয়ার কাজ করি। সেদিন রাতে আমরা দুজনেই বাড়ির বাইরে ছিলাম। বাড়িতে দিদার সঙ্গে ছিল সরস্বতী। রাত ১ টা নাগাদ ফোনও করেছিলাম। তখনও বুঝতে পারিনি মেয়েটা এমন করতে চলেছে।"
মাধ্যমিকের ফল প্রকাশের নির্ঘণ্ট জানাল পর্ষদ, জানুন বিস্তারিত
দিদা জয়ন্তী মল্লিকের খুব আদুরে ছিলেন সরস্বতী। সেদিন রাতেও দিদার পাশেই শুয়েছিলেন। হঠাৎ কখন পাশ থেকে উঠে চলে গেছে নাতনি বুঝতে পারেননি জয়ন্তীদেবী। ঘুম ভাঙতে পাশের ঘরে গিয়ে দেখেন গলায় ওড়নার ফাঁস দিয়ে পাখা থেকে ঝুলছে! কয়েক মুহূর্তের জন্য বুঝতে পারেন না কী করবেন। সম্বিত ফিরতেই আশেপাশের লোকজনকে ডাকাডাকি শুরু করেন। খবর যায় মা, মাসি, মামার কাছে।
পুলিশ জানিয়েছে, কসবার ওই বাড়িতে গিয়ে সরস্বতীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করেন তাঁরা (Model Death)। মেয়েটির মৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে কোনও সুইসাইড নোটও পাওয়া যায়নি। তবে মায়ের জন্য লেখা শেষ কয়েকটি লাইন আছে এখনও তাঁর খাতায়। সেখানে লেখা," মা তুমি খুব সুন্দর। ধন্যবাদ সারাজীবন আমার পাশে থাকার জন্য। ধন্যবাদ আমাকে এভাবে উৎসাহ দেওয়ার জন্য।"
সেই লেখা দেখাতে দেখাতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন মা আরতি দাস। বললেন, "আমার মেয়ে খুব মিশুকে ছিল। কত বন্ধু বান্ধব ছিল। সবসময় হাসি খুশি থাকত। কেন এ সব করল জানি না। তবে যাঁর জন্য এমন করেছে তাঁর কঠোরতম শাস্তি চাই।"
তাহলে কি পরিবারের তরফে সন্দেহ করা হচ্ছে যে এই মৃত্যুর পেছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে? মাসির কথায়, "ময়না (সরস্বতীর ডাকনাম) সারাদিন ফোনে কথা বলত। রাত একটা-দেড়টা অবধি ফোন নিয়েই পড়ে থাকত। সেদিন রাতেও এমন কারও সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছিল যাঁর জন্য এমন করল মেয়ে।"
কিন্তু এমন সন্দেহ হওয়ার কারণ কী? মাসির কথায়, "আমি যখন রাতে ফোন করেছিলাম তখন ব্যস্ত পেয়েছিলাম। কিছুক্ষণ পরে ঘুরিয়ে আমায় ফোন করেছিল।" কেমন ছিল সরস্বতীর জীবনযাপন? পরিবার সূত্রে খবর, ২০১৯ সালে লকডাউনের আগেই পড়াশুনা মাঝ পথেই ছেড়ে দেন সরস্বতী। দশম শ্রেণীতে পড়তেন। কিন্তু পড়াশুনার প্রতি মনোযোগ ছিল না। দু একটা টিউশনি পড়াতেন। মেহেন্দি করাতেন। অবসরে ফটোশ্যুট করতেন টুকটাক। মোবাইলই ছিল সর্বস্ব। বছর খানেক আগে একটি আট হাজারের মোবাইল কিনে দিয়েছিলেন মা। কিন্তু ফের একটি হাজার কুড়ির মোবাইল চেয়েছিলেন মায়ের কাছে।
পরিবারের আরও দাবি, ওই মোবাইলের মধ্যেই লুকিয়ে আছে সব। মোবাইল লক করা আছে। মোবাইল থেকেই জানা যাবে শেষ কার সঙ্গে কথা বলেছেন সরস্বতী। পুলিশও সেই পথেই হেঁটে মৃত্যু রহস্যের তদন্ত করছে।
বর্ষায় ঘন ঘন পেট খারাপে মুঠো মুঠো ওষুধ খাবেন না, ঘরোয়া টোটকা জেনে নিন